বয়স যত বাড়ছে পৃথিবীর আহ্নিক গতিও তত কমছে। ফলে ক্রমেই দিন, মাস, বছরের সময় বেড়ে যাচ্ছে। আর এই বর্ধিত সময়কে পারমাণবিক ঘড়ির সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে নিয়মিতভাবে এক সেকেন্ড করে যোগ করতে হয়। সেই সুবাদে আগামী ৩০ জুন রাত ১১টা ৫৯ মিনিট ৬০ সেকেন্ডের মাথায় যোগ করা হবে বাড়তি এক সেকেন্ড। অর্থাৎ এ সময় ঘড়ির কাঁটা এক সেকেন্ড থেমে যাবে। বিজ্ঞানীরা অতিরিক্ত এই সময়ের নাম দিয়েছেন লিপ সেকেন্ড। বিজ্ঞানীরা জানান, পৃথিবীর ঘূর্ণন গতি কমছে। এর ফলে প্রতিদিন প্রতি দুই হাজার সেকেন্ডের এক ভাগ করে সময়ের গরমিল হচ্ছে। সময়ের এই ঘাটতি পূরণ করে পারমাণবিক সময়ের হিসাব ঠিক রাখতে হলে নিয়মিতভাবে বাড়তি একটি সেকেন্ড যোগ করা হয়। এটি না করলে ২১০০ সাল নাগাদ সময়ের ঘাটতি হবে প্রায় তিন মিনিটের। আর ২৭০০ সাল নাগাদ এ ঘাটতি দাঁড়াবে আধা ঘণ্টায়। এ পরিস্থিতি এড়াতে ১৯৭২ সাল থেকে ‘লিপ সেকেন্ড’ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। গত ৪২ বছরে ২৫ বার যোগ করা হয়েছে লিপ সেকেন্ড। ৩০ জুন বা ৩১ ডিসেম্বর যোগ করা হয় বাড়তি একটি সেকেন্ড। সেই ধারায় ২০১৫ সালের ৩০ জুন যোগ হতে যাচ্ছে একটি বাড়তি সেকেন্ড। প্যারিস অবজারভেটরি ও ইন্টারন্যাশনাল আর্থ রোটেশন সার্ভিস যৌথভাবে বাড়তি সেকেন্ড যোগ করার এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। ইউএস ন্যাভাল অবজারভেটরির বিজ্ঞানী নিক স্টামাটাকোস জানান, এই বাড়তি সেকেন্ড পারমাণবিক ঘড়ির সঙ্গে যোগ হওয়ার ফলে জুন মাসের ৩০ তারিখে ৮৬ হাজার ৪০০ সেকেন্ডের বদলে হবে ৮৬ হাজার ৪০১ সেকেন্ড। ফলে এবার বাড়তি এক সেকেন্ড যোগ করা হলে পৃথিবীর ঘূর্ণন পারমাণবিক ঘড়ির তুলনায় ২৬ সেকেন্ড ধীর হবে। তবে কোনো কোনো বছর পৃথিবীর ঘূর্ণন ঠিক থাকে ফলে এই সমন্বয়টার দরকার হয় না। পারমাণবিক ঘড়ির সময়ে এক সেকেন্ড যোগ করার ফলে সর্বজনীন সময় হিসাবে (ইউটিএস) গরমিল হবে। ফলে বিভিন্ন সফটওয়্যারের সার্ভার টাইমের সঙ্গে এর বৈপরিত্য দেখা দেয়। এ কারণে ওয়েবসাইটগুলো ক্রাশ করার আশঙ্কা তৈরি হয়। ২০১২ সালে লিপ সেকেন্ড যুক্ত হওয়ার সময় মোজিলা, রেডিট, লিঙ্কডইন, ফোরস্কয়ার, ইয়েলপ এবং লিনাঙ্ অপারেটিং সিস্টেম চালিত প্রোগ্রাম যেগুলো জাভা স্ক্রিপ্টে লেখা সেগুলো ক্রাশ করেছিল।