বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বিএনপি এবং জামায়াতের মধ্যম সারির কিছু নেতা চলন্ত যানবাহনে পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে মারার মতো নাশকতায় টাকা বিনিয়োগ করছে বলে অভিযোগ করেছে পুলিশ। বিশেষ করে ওয়ার্ড পর্যায়ের এ সব নেতারা মাত্র ৫০০ থেকে ১০০ টাকার বিনিময়ে নিম্ন আয়ের মানুষদের নিয়োজিত করছে নাশকতার কাজে। অবরোধ চলাকালে নাশকতার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ এসব নেতাদের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে সিএমপি কমিশনার।
নগরীর বাকলিয়া এলাকায় চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালাতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে দু’জন। আর তারাই স্বীকার করেছে জনপ্রতি মাত্র ৫০০ টাকার বিনিময়ে বাকলিয়া ওয়ার্ড বিএনপি’র নেতারা নাশকতার কাজে নিয়োজিত করেছিলো। শুধু এ দু’জন নয়, এর আগে চলন্ত বাসে আগুন দিতে গিয়ে আটক হওয়া আরো একজন একই ধরণের তথ্য দেয় পুলিশকে।
সিএমপির বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের দায়িত্বশীল নেতারা নিজেরা মাঠে না থেকে, টাকার বিনিময়ে ভাড়া করা লোক দিয়ে এসব নাশকতা, গাড়ি পোড়ানো, ককটেল নিক্ষেপ করাচ্ছে।’
গত ৬ জানুয়ারি অবরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত নগরীতে অন্তত ২০টি যানবাহনে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এমনকি প্রতিদিন রাতে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে চালানো হয় ককটেল এবং পেট্রোল বোমা হামলা। এসময় আটক করা হয় বেশ ক’জনকে। আর এসব ঘটনার অনুসন্ধান করতে গিয়ে নাশকতার কাজে টাকা বিনিয়োগের বিষয়টি উঠে আসে।
সিএমপির পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মন্ডল বলেন, ‘নেতারা টাকা দিয়ে মানুষ ভাড়া করছে এবং ৫০০ টাকা দিয়ে বলছে একটা বোম মেরে আসো। এরকম একটা চক্রকে আমরা সনাক্ত করতে পেরেছি।’
এদিকে, সিএমপির উপ পুলিশ কমিশনার (উত্তর) পরিতোষ ঘোষ বলেন, ‘তারা অর্থের বিনিময়ে সমাজের নিম্ন আয়ের কিছু মানুষ, টোকাইদের ব্যবহার করছে। এতে তাদের কাজও হচ্ছে এবং এরা ধরা পড়লেও কোন সমস্যা হচ্ছেনা।’
এ অবস্থায় নাশকতায় ইন্ধন দেয়ার সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদের শনাক্তের পর এখন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে পুলিশ প্রশাসন। সিএমপির পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডল আরও বলেন, ‘উস্কানিদাতা, ইন্ধনদাতা, অর্থদাতা একই আইনে তাদের সবার বিরুদ্ধে মামলা হবে।’
পুলিশের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে, ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা প্রতিরাতে পেট্রোল বোমা এবং ককটেল হামলা চালানোর জন্য তিনটি করে পয়েন্ট বাছাই করে নেয়। এক্ষেত্রে বিএনপি’র পক্ষ থেকে টাকার বিনিময়ে নিম্ন আয়ের মানুষদের ভাড়া করা হয়। আর জামায়াতের পক্ষ থেকে টাকা বিনিয়োগের পাশাপাশি শিবিরের কর্মীরা সরাসরি অংশ নেয়।