অবশেষে অনেকেই স্বীকার করতে বাধ্য হলেন যে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামসহ বেশ কিছু সোশাল মিডিয়া তাদের জীবনটাকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। ইতিবাচক বিষয় রয়েছে। কিন্তু পরিবার, সমাজ থেকে শুরু করে তা ক্যারিয়ারে পর্যন্ত ব্যাপক ঝামেলা বাঁধিয়ে দিয়েছে।
৪০ বছর বয়সী এক নারী নাটালি ট্রাইস জানান, আমি সব কাজ ফেলে রেখে দিনে ৫ ঘণ্টা ফেসবুক আর টুইটারে বসে থাকি। কিন্তু এ নিয়ে সামান্য আক্ষেপও হয় না। হেরাল্ড সানকে তিনি বলেন, সোশাল মিডিয়া এখন আমার কলঙ্ক হতে পারে। এটাই আমার একমাত্র শখ। তবে এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে মাঝে মাঝে বেশ টানাপড়েন চলে। তখন স্বামীর একটাই অনুরোধ থাকে, দয়া করে আমাদের ঝগড়ার কথা পোস্ট করে গোটা বিশ্বকে আর জানিয়ে দিও না। কিন্তু আমি তাও করি, অপরাধী ভাব নিয়ে জানালেন ট্রাইস। তার ফেসবুকের বিশাল জগতে রয়েছেন ৫৫০ জন বন্ধু এবং এদের মধ্যে মাত্র পাঁচজন তার সত্যিকার জীবনের বন্ধু।
এদিকে, ২৯ বছর বয়সী তরুণী ব্রাইস পারকিনস। এক কথায় বলা যায়, সোশাল মিডিয়া ছাড়া তার জীবন অচল। মোটামুটি ২৪ ঘণ্টজুড়ে মোবাইলটি তার হাতে থাকে। তবে এর পেছনে ইতিবাচক বিষয়কে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরেছেন তিনি। পৃথিবীতে কোথায় কখন কি ঘটছে, তা নাকি প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই জানতে পারেন তিনি। আর এতেই তার আনন্দ। ফেসবুক ও টুইটার যদি ঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়, তবে পৃথিবীর সব খবর আপনার কাছে। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের অন্যতম কারণগুলোর একটি ফেসবুক।
১৫ বছরের ইজি ম্যাককে বলেন, আমার কাজ ঘুম থেকে চোখ মেলেই মোবাইলটি হাতে নিয়ে সোশাল মিডিয়া খুলি। ক্যাফেটেরিয়ায় প্রেমিকের সঙ্গে বসে দুজন দুজনের মোবাইলের পর্দার দিকেই তাকিয়ে থাকেন। অন্যান্য কাজ করতে থাকলেও সোশাল মিডিয়া থেকে বেরিয়ে আসেন না তারা।
নাতি-নাতনিদের ফেসবুকে খোঁজ করেন ফিজ মারকাস। তার আইফোনেই জীবনের বাকি সময়টুকু কাটিয়ে দেবেন বলে ঠিক করেছেন। এ ছাড়া সোশাল মিডিয়ার বন্ধুদের সঙ্গেই বাকি সময় কেটে যায়।
এভাবে কিশোরী থেকে বৃদ্ধা সবাই যার যার সময় পার করছেন সোশাল মিডিয়ায়। কিছুটা অস্বস্তিবোধ রয়েছে। কিন্তু মোটেও অনুতাপ নেই। বরং তারা খোলাখুলিই বলছেন, সোশাল মিডিয়া ছাড়া জীবনটা প্রায় অচল।