মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায়ের সার্টিফাইড কপি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পৌঁছেছে।
বুধবার রাত পৌনে ৮টায় ট্রাইব্যুনালে রায়ের সার্টিফাইড কপি পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছেন সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্ট্রার সৈয়দ আমিনুল ইসলাম।
নিয়ম অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিরা স্বাক্ষর করে মৃত্যু পরোয়ানা জারি মাধ্যমে ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার বরাবর পাঠাবেন।
পূর্ণাঙ্গ রায়ের সার্টিফাইড কপি হস্তান্তরের পর থেকেই রায় কার্যকরের ১৫ দিনের সময় গণনা শুরু হল।
ট্রাইব্যুনালের জারি করা মৃত্যু পরোয়ানা পাওয়ার পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ কামারুজ্জামানের কাছে রিভিউ অথবা প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করবেন কিনা, জানতে চাইবে।
কামারুজ্জামান রিভিউ করলে রিভিউ নিষ্পত্তি হওয়ার পর রায় কার্যকর করতে পারবে সরকার।
এর আগে, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ চারজন বিচারপতির স্বাক্ষর শেষে বুধবার দুপুরে ৫৭৭ পৃষ্ঠার রায়ের কপি প্রকাশ করা হয়।
রায়ে বলা হয়, রায়ের সার্টিফায়েড কপি তৈরির পর কামারুজ্জামান ১৫ দিন সময় পাবেন রিভিউ করার জন্য। যদি এই সময়ের মধ্যে কামারুজ্জামান রিভিউ করেন তাহলে রিভিউ নিষ্পত্তি হওয়ার পর রায় কার্যকর করতে পারবে সরকার।
আর তিনি যদি রিভিউ না করেন তবে সরকারকে রায় কার্যকর করতে ১৫ দিন অপেক্ষা করতে হবে বলে আপিল বিভাগ বলেছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া কাদের মোল্লার রিভিউয়ের আবেদনের রায়ে এ সব কথা উল্লেখ করেছেন আপিল বিভাগ।
রায়ে আরও বলা হয়েছে, আপিল বিভাগ রুলসে রিভিউ দায়েরের ক্ষেত্রে যে সময়সীমার কথা বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালস আইনের অধীনে রায়ের রিভিউর ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। এক্ষেত্রে ১৫ দিনের সময়সীমা অনুসরণ করতে হবে এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি হবে।
রায়ে আদালত বলেছেন, আপিল বিভাগের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে মৃত্যু পরোয়ানা জারির আদেশ কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছলে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদনের সুযোগ দিবেন। একই সঙ্গে তাকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দিতে হবে। যদি কোনো রিভিউ অথবা প্রাণ ভিক্ষার আবেদন দায়ের করা হয় ওই আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাবে না।
গত বছরের ৩ নভেম্বর তৎকালীন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ও বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন।
২০১০ সালের ১৩ জুলাই কামারুজ্জামানকে হাইকোর্ট এলাকা থেকে একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়। একই বছর ২ আগস্ট তাকে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়।