তৈরি পোশাকশিল্প মালিক, শ্রমিক, ট্রেড ইউনিয়ন এবং আন্তর্জাতিক কমিউনিটি সকলে মিলে শ্রম আইন বাস্তবায়নের তাগিদ দিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিজিএমইএ-এর কার্যালয়ে সংগঠনটির নেতাদের সাথে তৈরি পোশাকের বর্তমান অবস্থা নিয়ে এক বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও সামাজিক পরিবর্তনে তৈরি পোশাকশিল্প গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। রানা প্লাজার পর বাংলাদেশ শিখেছে কীভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। এ দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশ অনেক ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। পরিবেশ উন্নয়নে বিশ্ববাসীর সাথে কাজ করা শুরু করেছে। এজন্য বাংলাদেশ ৫০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সে উদ্যোগের পাশে থাকবে। এখাতে যুক্তরাষ্ট্রের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
বৈঠকে বার্নিকাট সাড়ে তিন মিনিটের বক্তব্যে আরো বলেন, বাংলাদেশের পোশাকখাত অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছে। এখাতের শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ ও নিরাপত্তায় অনেক অগ্রগতি হয়েছে। তবে অগ্রগতি বাড়াতে হবে এবং কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
এর আগে বিজিএমইএ সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম গার্মেন্টস খাতের অগ্রগতির বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও দুর্বলতার চিত্র তুলে ধরে বলেন, এই মুহূর্তে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জই তৈরি পোশাকশিল্পের প্রধান চ্যালেঞ্জ। এছাড়াও বাংলাদেশে পোশাকখাতে বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে পোশাকখাতের উন্নয়নে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা খুব জরুরি।
তিনি আরো বলেন, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। রানা প্লাজার পরে আমরা অনেক কাজ করেছি। এ্যাকড ও এলায়েন্স ৩ হাজার ৫০০ কারখানার মধ্যে ২ হাজার ৩২৫টি পরিদর্শন করে মাত্র ২৯টি কারখানাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মতামত দিয়েছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে এসব কারখানা বন্ধ করে দিয়েছি। এছাড়া শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি বৃদ্ধি করেছি। ২০০৬ সালে শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ছিল ১ হাজার ৬৬২ টাকা। সেখানে ২০১৩ সালে তা বৃদ্ধি করে ৫ হাজার ৩০০ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া রানা প্লাজার পর এ পর্যন্ত ৮৩ হাজার ৬৭৮ জন শ্রমিককে অগ্নিনিরাপত্তা প্রশিক্ষণ এবং ২০ হাজার ১৮৮ জন মধ্যমসারির কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম, বিজিএমইএ এর সাবেক সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, আব্দুস সালাম মুর্শেদীসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
–