বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের (বিটিবি) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, টানা অবরোধ ও হরতাল চলতে থাকলে পর্যটন খাতে এই মৌসুমে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতি হবে। কিন্তু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ট্যুরিজম ডেভেলপার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টিডাব) এ তথ্যকে মিথ্যা দাবি করে বলেছে, এই খাতে প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা।
সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে অনলাইন নিউজ পোর্টাল টাইমওয়াচ আয়োজিত ‘অর্থনীতিতে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব’ শীর্ষক সংলাপে এমন তথ্য জানান টিডাব’র চেয়ারম্যান মো. জামিউল আহমেদ।
মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন টাইমওয়াচের উপদেষ্টা সম্পাদক বজলুর রায়হান। রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব কোন খাতে কতটুকু পড়ে তা তুলে ধরেন তিনি।
পর্যটন শিল্প সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অবরোধের কারণে পর্যটন শিল্প আবারো স্থবির হয়ে পড়েছে। এই খাতে প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পর্যটন খাতে ভালো করার সুযোগ ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আগে থেকে যেসব বুকিং ছিল, এখন তা বাতিল হচ্ছে। টানা অবরোধের কারণে পর্যটন খাতের হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও রেস্টুরেন্ট প্রায় বন্ধ হয়ে আছে। অবরোধের কারণে বিদেশি পর্যটকরা বাংলাদেশ ভ্রমণে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন এবং তাদের অগ্রিম হোটেল বুকিং বাতিল করেছেন। পাশাপাশি দেশীয় পর্যটকরা আতঙ্কিত হয়ে তাদের ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করেছেন।’
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দীন আহমদ বলেন, ‘অস্থিরতায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পর্যটন এবং ক্ষুদ্র ব্যবসা। ট্যুরিজম খাতে যে পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে, তা পূরণ হবার নয়। যে দেশে কোনো রাজনৈতিক ঝামেলা থাকে একজন টুরিস্ট কোনোভাবেই সে দেশে আসেন না।’
টিডাব’র চেয়ারম্যান মো. জামিউল আহমেদ বলেন, ‘মূলত ট্যুরিজম খাতের ক্ষতির হিসেবটা হয় যোগাযোগ, রেস্টুরেন্ট এবং বিনোদন খাত ধরে। অথচ ট্যুরিজম বোর্ড তা হিসেব না করেই বলেছে পুরো মৌসুমে ক্ষতি হবে শত কোটি টাকা, এটা সম্পূর্ণ ভুল তথ্য। আসলে দিনে ক্ষতি হচ্ছে ২০০ কোটি টাকা।’
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে পর্যটন খাত ধ্বংস হয়ে যাবে। যদি রাজনৈতিক নেতাদের সাধারণ মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান, ভালোবাসা থাকে, তাহলে আশা করি ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না পারলেও অন্তত স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারব।’
বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের প্রাক্তন সচিব ও চেয়ারম্যান ড. মো. মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাবের প্রেসিডেন্ট মো. আলমগীর শামসুল আলামীন, বিডি সিএনজি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মাসুদ খান, টাইমওয়াচের সম্পাদক একে নাহিদ প্রমুখ।