মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন সারা বিশ্বেই গুরুতর আর্থিক অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাই ব্যাংকিং সেক্টরেও সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে। সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ করতে হলে গ্রাহকদের লেনদেন যথাযথভাবে মনিটরিং করার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
শুক্রবার সকালে কক্সবাজারে হোটেল ওশান প্যারাডাইস-এর সম্মেলন কক্ষে ‘প্রধান মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০১৫’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গর্ভনর বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জঙ্গি সংগঠনের আবির্ভাব ঘটছে। এ জঙ্গি তৎপরতা বাংলাদেশের জন্যও হুমকি হয়ে স্বরূপ। ব্যাংকিং খাতের মাধ্যমে যাতে জঙ্গি সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে অর্থায়ন করা না হয় সে ব্যাপারে সবসময় সর্তক থাকতে হবে। শুধু ব্যক্তি নয়, সন্ত্রাসে অর্থায়নে যে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দ্বিধাবোধ করবে না বাংলাদেশ ব্যাংক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। এ কারণে দেশি-বিদেশি অপশক্তি মানি লন্ডারিংরের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্তের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ষড়যন্ত্র নসাৎ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
গভর্নর আরো বলেন, গ্রাহক পরিচিতির সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহ ও তাদের লেনদেন যথাযথভাবে মনিটরিং করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের যে নতুন ডাটা বেইজ তৈরি হয়েছে তার সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক যুক্ত হয়েছে। অন্যান্য ব্যাংকও শিগগিরই যুক্ত হবে। এটি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরো বলেন, মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বিএফআইইউ বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়। এসব নির্দেশনা পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা তদারকি করা প্রধান মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ কর্মকর্তাদের কর্তব্য।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক ও অপারেশন হেড অব বিএফআইইউ মো. নাসিরুজ্জামান এতে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ডেপুটি হেড অব বিএফআইইউ ম. মাহফুজুর রহমান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগামের নির্বাহী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান জোয়ার্দ্দার। এছাড়াও আরো বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আবু জাফর, রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. ফরিদ উদ্দিন, পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল কালিম চৌধুরী, এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হায়দার আলী মিয়া, এনআরবি’র মোখলেসুর রহমান প্রমুখ।
সম্মেলনে দেশের ৫৬টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তারাসহ ১৫০ জন কর্মকর্তা অংশ নেন।
এদিকে বিকেলে সী র্গাল সম্মেলন কক্ষে এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার কক্সবাজারের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় এসএমই নারী উদ্যোক্তা ও বাংকারদের মতবিনিময় সভা ও প্রকাশ্যে ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠানেও প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক ’র গভর্নর ড. আতিউর রহমান।