যুক্তরাজ্যে পার্লামেন্ট নির্বাচনে এক তৃতীয়াংশ আসন থেকে নারী প্রার্থীরা বিজয়ী হয়ে এসেছেন; যাকে রাজনীতিতে ‘নাটকীয় পরিবর্তন’ হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পার্লামেন্টের (হাউজ অব কমন্স) ৬৫০টি আসনের মধ্যে ১৯১টি আসনে জিতেছেন নারী প্রার্থীরা, অর্থাৎ প্রায় ২৯ শতাংশ এমপি নারী। গতবার এই হার ছিল ২৩ শতাংশ।
১৯৯৭ সালের পর এবারই নারী এমপির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হারে বেড়েছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদনে নারীর এই উত্থানকে রাজনীতিতে ‘নাটকীয় পরিবর্তন’ বলা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের প্রধান দুই দল কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টি উভয় দলে গতবারের তুলনায় এবার পুরুষের বিপরীতে নারী এমপির হার বেড়েছে, যদিও লেবার পার্টি আগের চেয়ে কম আসন পেয়েছে।
তবে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নারী এমপি এসেছে স্কটল্যান্ডভিত্তিক দল স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি-এসএনপি থেকে, যে দলের প্রধান নিকোলা স্টার্জেওনও নারী।
এসএনপির ৫৬টি এমপির মধ্যে ২০ জনই নারী, যেখানে আগের তাদের মাত্র একজন নারী এমপি ছিলেন।
এবারের ভোটে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া কনজারভেটিভ পার্টি মোট ৩৩১টি আসনে জয় পেয়েছে। তার মধ্যে ৬৮টি আসনে জিতেছেন নারী প্রার্থীরা। গত পার্লামেন্টে তাদের ৩০৩টি আসনের মধ্যে ৪৭টিতে নারী ছিলেন।
অন্যদিকে গতবারের চাইতে এবারের ভোটে আসন কমেছে প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির। তাদের মোট ২৩২টি আসনের মধ্যে ৯৯টিতে নারী প্রার্থীরা জিতেছেন। গত পার্লামেন্টে তাদের দখলে ছিল ২৫৪ আসন, যার মধ্যে ৮৭টিতে ছিলেন নারীরা।
অর্থাৎ এবার লেবার পার্টির আসন কমলেও পুরুষের বিপরীতে নারী এমপির হার বেড়েছে। এবার লেবার পার্টির হয়ে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তিন নারী- টিউলিপ সিদ্দিক, রুশনারা আলী ও রূপা হক ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
তবে গতবার লিবারেল ডেমোক্রেটস থেকে যে সাতজন নারী এমপি ছিলেন এবার তাদের সবাই হেরে গেছেন। অবশ্য এবারের নির্বাচনে লিব-ডেমসেরই ভরাডুবি হয়েছে। গত পার্লামেন্টে তাদের ৫৬ জন এমপি থাকলেও এবার মাত্র আটজন উৎরাতে পেরেছেন।
১৯১৯ সালে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে প্রথম নারী হিসেবে আসন গ্রহণ করেছিলেন ন্যান্সি অ্যাস্টর।
বহু বছর ধরে পার্লামেন্টের মোট এমপির তুলনায় ৫ শতাংশেরও কম ছিলেন নারী এমপিরা।
মার্গারেট থ্যাচারের সময়ে ১৯৮৭ সালে প্রথম নারী এমপির সংখ্যা দুই অঙ্কে পৌঁছায়। এরপর নারী এমপির ক্ষেত্রে একটা জোয়ার আসে ১৯৯৭ সালে; সেবার টনি ব্লেয়ার নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টিতে আগের তুলনায় নারী এমপি বেড়েছিল ১৭৪ শতাংশ।