বাম্পার ফলনে মুখে হাঁসি ফুটলেও দামে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। এরকম দৃশ্যই দেখা যাচ্ছে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে। উপজেলার যেদিকে যতদূর দৃষ্টি যায় বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ জুড়ে শুধুই সোনালী ধানের সমারোহ। কৃষকেরা প্রাকৃতিক নানা প্রতিকূলতার সাথে তাল মিলিয়ে এবারে অতিরিক্ত ব্যয়ে উৎপাদিত ধান এ মুহূর্তে কাটা-মাড়াই প্রায় শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। গত বছরের মত এবারও উপজেলার ৯ ইউনিয়নে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটলেও দাম কম হওয়ায় তারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। বর্তমান বাজার মূল্যে ধান বিক্রি করে তাদের উৎপাদন ব্যয় উঠছে না। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় এবার বোরো রোপনের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যেই প্রায় ১০০ শতাংশ জমির ধান কাটা-মাড়াই সম্পন্ন হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শওকত ওসমান ও কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ কৃষ্ণ রায় জানান, অনাবৃষ্টি, প্রাকৃতিক নানা বৈরী আবহাওয়া ও প্রচন্ড খরা থাকায় বোরো চাষযোগ্য উঁচু জমি সমূহে রীতিমত বাড়তি সেচ দিয়ে চারা রোপন করতে কিছুটা বিলম্ব হয়। ফলে আরো একধাপ উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায়। অপরদিকে তেমন কোন রোগবালাই না থাকায় কৃষকদের ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হয়েছে কম। উপজেলায় হাইব্রিড, উফশি ও ২৮ সহ অন্যান্য জাত ১২ হাজার ৭শ’ ৫০ হেক্টর জমি নির্ধারণ করা হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে বোরো চাষ করা হয়। প্রতি বিঘা জমিতে উফশি-২৮ সহ অন্যান্যজাত ১৯ থেকে ২৪ এবং হাইব্রিড ২৫ থেকে ২৯ মন ধান উৎপাদন হয়েছে।
বর্তমানে স্থানীয় হাট-বাজারে বোরো ধান উঠা শুরু হয়েছে। প্রতিমন ধান হাইব্রিড ৪’শ ৪০ থেকে ৪’শ ৬০ ও উফশি-২৮ সহ অন্যান্য জাত ৫শ’৫০ থেকে ৬শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে কৃষকদের লোকসানের বোঝা বইতে হচ্ছে। সরেজমিন উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের কৃষক নুরুজ্জামান সরকার, সদরের রাজা মিয়া, কিশোরগাড়ীর গাজীউর রহমান, জগরজানির মধু মিয়া ও হোসেনপুরের আঃ হালিম মন্ডলের সাথে কথা বললে তারা জানান, এবার ফলন ভালো হলেও দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে লোকসান গুণতে হচ্ছে। এবারে উপজেলায় ৫৩ হাজার ৮শ’ ৬০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্য করা হয়েছে।