পোস্ট- আরজে সাইমুর, স্বদেশ নিউজ ২৪ ডট কম: পৃথিবীর পথে হাটছি আমি নিরন্তর। চলছি তো চলছি, হেঁটেই যাচ্ছি। পথে কত আলপথ পেরিয়ে এলাম। চোরকাঁটা বিঁধে আমার গেরুয়াতে। চোরকাঁটা ছাড়ালাম। এর আরেক নাম বিধির কাঁটা। এ যেনো এক অবশ্যম্ভাবী অভিজ্ঞতা। গেয়ো আলপথে হাঁটলে আপন মনে এ কাঁটা বিঁধবেই। আমার সঙ্গী আমার জীবনসঙ্গীও বাউল। গানে সুর বাঁধেন। দোতরার টুংটাং জুড়ে দেন। সে গান আমার কন্ঠে তুলে নেই। ছড়িয়ে দিতে চাই পৃথিবীর কোনায় কোনায়। কিন্তু সুরকে তরঙ্গে রূপায়িত করে ছড়িয়ে দেয়া কি সোজা কথা! যত সোজা গান গাওয়া তত সোজা নয় তা মানুষের মনে গেঁথে দেওয়া। জোড় বাঁধা বাউল আমরা। সন্তান দুটোকে মা বাবা, শ্বশুর-শ্বাশুড়ির কাছে ফেলে রেখে সুরের সন্ধানে জীবিকার তাগিদে ঘুরতে থাকি দেশ বিদেশ। সারা পৃথিবীর কাঞ্চি কোনায়। কখনও ভালোবাসা জোটে, কখনও তাও জোটে না। বেশী জোটে অবহেলা। তাও জোটে কালে-ভদ্রে ! অত গা করলে কি চলে। শিল্পী সমাজ হচ্ছে আনন্দ বিনোদনের উপাত্তর অংশ। তারা শুধু আনন্দ দেবে। মন খারাপ করবেনা। তাই সই। পথ চলতে চলতে সুরভিত মানুষদের সাথে, ফেরদৌসী রহমান নীনা হামিদ। উনাদের সচক্ষে দেখতে পাচ্ছি। তাদের স্নেহ ভালবাসায় সিক্ত হচ্ছি। ধন্য আমি, ধন্য আমার জীবন। গীতে পরিপূর্ণ বাউল জীবন। এ মহিয়ষী নারীগণ, আহ্ আমি নারী রূপে জন্মে তাদের গোত্রভুক্ত হয়ে আরো একবার নিজেকে ধন্য মনে করছি।
বাংলাদেশের গানের জগতে মুসলিম ঘরের মেয়েরা যে গান করতে পারছে তার অবদান যার, তিনি ফিরোজা বেগম। সুশিক্ষিত পরিমিত আবেগময় তার কন্ঠ। কন্ঠ তো না যেন রুদ্রাক্ষের মালায় এক একটা পুঁথি। খাজ কাটা, কিন্তু যপ করতে করতে পিছলে যাচ্ছে, আর একটা অনুচ্চারিত উজ্জল্ল্য ঠিকরে পড়ছে। সেই কন্ঠ নিসৃত ধ্বনি থেকে। আমাদের সৌভাগ্য যে সে কন্ঠ আমাদের ছোট বেলার তার গান শুনলে একটু আতংক কাজ করতো। গান তো গান নয় যেন সূর্যের তীক্ষè আলোর তীর্যক খেলা। সেই ফিরোজা বেগম আমাকে ডাকছেন তার একটি গান আমাকে দিয়ে গাওয়াবেন। শুনে অন্তর কাঁপে। হায় আল্লাহ্ পারবো তো। আমার বাউল সঙ্গী মইনুল ইসলাম খান সাহস দেন। পারবে, পারতে তোমাকে হবেই। ফিরোজা আপার বেঁধে দেওয়া সময়ে তার আবাসস্থলে গেলাম। আমি ও যথারীতি আমার জীবনসঙ্গীকে সাথে নিয়ে। হালকা ছিমছাম রুচিশীল বসার ঘর। ঠান্ডা একটা না বলা নির্জনতায় ভরা সে ঘর। কিন্তু সুরেলা। বেশ কিছুক্ষন পর ধীর পায়ে তিনি এলেন। অনুচ্চারিত পায়েও যেন ছন্দ। আমি বাক রহিত। সৌম শান্ত আস্ত একটা বাঘিনী আমার সামনে। পা ছুঁয়ে সালাম করলাম। বললেন বসো। বসলাম। শুধালেন সঙ্গীটা কে? বুঝলাম দুনিয়ার কোনো খবরই রাখা হয় না। বললাম আমার জীবনসঙ্গী। বললেন কি করেন। আমার বাউল বললেন গান বাঁধি। এবার তিনি বেশ প্রসন্ন। হাসলেন। আমি ঠিক তখনই অনুভব করলাম তিনি সুগন্ধি সুরভিত এক মানুষ। তার পরিধেয়, তার মালা, তার কেশরাজি থেকে নীরব কিন্তু একরেখা একটা সুগন্ধ পাচ্ছি আমি যা তিনি তার নিজের অলক্ষে ছড়িয়ে দিয়েছেন। একটা ডায়রি আমার দিকে এগিয়ে নির্ধারিত পাতা খুলে দিয়ে বললেন লিখে নাও। বুঝলাম স্বল্পভাষী মানুষ। গানটা যখন তুলে দেবার জন্য কন্ঠ খুললেন তখন ঘটলো বিষ্ফোরন। ছোট, কিন্তু জেদী একটা কন্ঠ। সেই আগের মত তার স্বামী, ওস্তাদ, সঙ্গীত পরিচালক শ্রদ্ধেয় কমল দাস গুপ্তের সুরে “ফিরিয়া ডেকোনা মহুয়া বনের পাখী”। অপূর্ব সে কথা অপূর্ব সে গান। কিন্তু সবচেয়ে অপূর্ব তার এখনকার কন্ঠ। আরো সমৃদ্ধশালী, আরো আবেগময়, আরো তীর্যক যেন এমনই হওয়া উচিত। আর কোনো রকম না। গান তুলে দিচ্ছেন আমি গান কন্ঠে তুলে নিচ্ছি আর ভাবছি সম্ভবতগানের কারুকার্যের একটি দানাও তিনি ভুলে যান নাই। এক পর্যায়ে তিনি বললেন বাহ্ তুমি তো আধ ঘন্টাতেই গানটা তুলে নিলে। জানো কমল দাস গুপ্ত আমাকে গানটা তুলে দিতে পনেরো দিন সময় লেগেছিল।
৩ দিন পর গানটা বাংলাদেশ টেলিভিশন অডিটোরিয়াম ষ্টুডিওতে রেকর্ড হবে। গেলাম। গাইতে গিয়ে দেখি সুন্দর একটা কারুকাজ ভুলে গেছি। ফিরোজা আপা আবার ঠিক করে দিলেন। শুধু একটা চাহনী নিক্ষেপ করলেন আমার দিকে। আমি যেন উবে গেলাম। তখন বুঝলাম পনোরো দিন লাগিয়ে গান কন্ঠে তুলেছেন দেখেই দীর্ঘ সময় পার করেও গানের একটা দানাও ভুলে যাননি। গানটা কন্ঠস্থ হতে হতে আত্মস্থ হয়ে গেছে। আর আমি আধঘন্টায় গান তুলে তিন দিন পর ভুলে গেলাম। এই বিশাল শিক্ষা আমি ফিরোজা আপার কাছ থেকে তার অজান্তেই শিখে নিলাম। আর দেখলাম-অবলোকন করলাম সুরভিত স্নিœগ্ধ কিন্তু দৃঢ় এক মহিয়ষীকে যার অজান্তেই তার ব্যাক্তিত্বে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এতদিন আমার মনে তার গানের বিস্তার ছিল, এখন তাতে তাঁর ব্যক্তিত্ব মিশে একটা বিশাল অবয়ব তৈরী হল যা আমি আমার হৃদয় কোঠায় অসম্ভব যতেœ তুলে রাখলাম। মাঝে মাঝে সেখান থেকে ফিরোজা আপাকে উন্মুক্ত করি শ্রদ্ধা ভরে তাকে নিরবে সালাম জানাই আবার সযতেœ সাজিয়ে রাখি।
আবার বাউল সঙ্গীর সাথে পৃথিবীর উচু নীচু পথে হাঁটতে থাকি। পায়ে কড়া পড়ে যায় তবুও পথ চলা থামেনা। আপাতত ক্লান্ত এই জোড়াবাউল একটা নদীর ধারে গিয়ে থামি। নদীর কুলুকুলু স্রোত আমার চোখে ঘুম এনে দেয়। আবার পাড় ভাঙ্গার শব্দে চমকে উঠি। চোখ মেলে দেখি আমার সামনে সুরেলা নদী ফেরদৌসী রহমান। এ যেন বহমান বাংলাদেশ। তাতে খুব ছোট বেলাতেই দেখার বিরল সৌভাগ্য হয়েছে নতুন কুঁড়ি শিশু পুরষ্কার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী আমি তাঁকে প্রথম দেখেছি বিচারক হিসেবে। তখন আমি গান কি, বিচারক কি, শিল্পী কি কিছুই জানিনা, তোতা পাখির মত গাই “মুসাফির মুছ এ আঁখিজল”। শিশু বয়সে খেলতে না পেরে ও সারাদিন গান সাধনায় বাধ্যতামূলক রত থেকে দিনমান দৃশ্যমান ও অদৃশ্য অশ্র“ মুছে যাই। তার উপস্থাপনায় অনুষ্ঠান “ভালোবাসো মোর গান”-এ আমার ডাক পড়লো। আমি আবার ভীত সন্তস্ত্র। বাউলসঙ্গীর দিকে অসহায়ভাবে তাকাই। তিনি এবার স্নেহের দৃষ্টি রাখেন। চোখের ভাষায় বলেন তুমি তো পারো। ভয় পেও না, পারবে ইনশাল্লাহ। পারতে তোমাকে হবেই। এই সাহসেই আমি তার কাছে যাই। নির্ধারিত সময়ে আমি তার আবাসস্থলের দরজায় গিয়ে দাঁড়াই। বিস্মিত আমি তাকিয়ে দেখি দরজা খুলে সহাস্য দাঁড়িয়ে আছেন আমার ধ্র“বতারা! যেন কত দিন ধরে আমার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। বুকে জড়িয়ে নিলেন সোনা ময়না বলে। ওমা এমনও হয়। আত্মস্থ হতে হতেই গান নিয়ে বসলেন আর আমি শুধুই অবলোকন করছি। কি তার উচ্চতা কি তার সৌন্দর্য, কি তার বাচন ভঙ্গি। গানের ঘরে আসি বিমোহিত। গানের যে এত খাতা থাকতে পারে তা আবার এত সুন্দর করে সাজানো থাকতে পারে তা আমার ধারনার বাইরে! মনোমুগ্ধকরের মত আমি গান তুলতে থাকি। আর কালের গানের মত করে পুঙ্খানুপঙ্খরূপে উঁনি সেগুলো তুলে দিতে থাকলেন। গান তুলছিলাম আর ভাবছিলাম এই সেই ধ্র“বতারা যার কন্ঠে আস্ত একটা নদী বাস করে। নদীর কুলকুল ঢেঊ নদীর ভাঙ্গন দুর্বার গতি আর আজলা ভরা জল সব একসাথে পাওয়া যায়। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত চটুল প্রেমময় আর্তনাদ ভরা ভাটিয়ালি একজন মানুষ কিভাবে ধারণ করেন। আমি যতই তাকে বিষ্মিত হয়ে দেখি উনি ততই সহজিয়া ভঙ্গিতে বলেন “এই মেয়েটা না দেখলেই শুধু সালাম করে” এত সালাম করো না সোনা ! আমি ভাবি পায়ে ধরে সালাম? এতো সবার জন্য আসে না। আর সালাম করা যায় না, যদি না তা মন থেকে না আসে।
একজন পুর্নাঙ্গ মানুষ যখন পুর্নাঙ্গ শিল্পীতে পরিণত হয় তখন তাকে আমি মহামানব ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারিনা। এ আমার একান্ত ভাবনা আমার হৃদয় ঝুলিতে তার ভালোবাসা পূর্ণ করে আবার হাঁটতে থাকি। প্রখর রৌদ্রে ফেরদৌসী আপাকে মনে করলেই আমি নদীর বাতাসে গা জুড়িয়ে নিতে পারি।
হাঁটতে হাঁটতে দেশের প্রান্তর ছাড়িয়ে বিদেশে পা দেই। পেশাদারি জীবনের প্রথম থেকেই সারা পৃথিবী ভ্রমণ করি আমি ও আমার বাউলসঙ্গী। হঠাৎ শুনি যুক্তরাষ্ট্রের এই আটলান্টিক শহরে আমাদের বাংলার সোনার ময়না পাখি থাকেন। আমাদের নীনা হামিদ। উঁনি কোথায় থাকেন-তার মুঠোফোনের নাম্বার কিছুই জানিনা। আয়োজকদের একজনকে বলতে উনি বলেন আমার সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেবেন। আমি আগাম ধন্য হয়ে যাই। পরদিন আয়োজক বলেন উঁনার সাথে কথা হয়েছে, নীনা আপাই আমার হোটেলের ঠিকানা নিয়েছেন। আমাদেরকে দেখা দিতে আগামীকাল দুপুরে আসবেন। আমি আনন্দে আত্মহারা। অনুষ্ঠানে গান গাই, মন পড়ে থাকে ময়না পাখিতে। পরদিন ময়না পাখি ও উনার জীবনসঙ্গী প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক এম.এ হামিদ ভাই সহ আমাদের হোটেলে আসলেন। এসেই বুকে জড়িয়ে আদর। বড়রা এমনই হন। সত্যিকারের যারা বড় তাদের কোনো কিছুই বিলিয়ে দিতে কখনও কোনো কার্পন্য নাই- থাকেও না। কুশলাদি বিনিময় শেষ হতে অনেক সময় লাগলো। বাংলাদেশের সব শিল্পীর খবর তার শুনা চাই। একটা সময় বললাম আপা আমি আপনার একটা সাক্ষাতকার নিতে চাই। উনি বললেন আর সাক্ষাতকার। আমার সাক্ষাতকার কে পড়বে, বাংলার মানুষ আমাকে কি চিনে। বুঝলাম অভিমানের মেঘ পুঞ্জিভুত হয়ে ভারী বর্ষণের অপেক্ষায়। রেকর্ড প্লেয়ার না থাকায় ভিডিও ক্যামেরায় সব ভিডিও করেছি। উনার সোনার ময়না পাখির গানের গল্প, রুপবান ছবির গল্প, আব্দুল আলীমের গল্প, ভিডিও ক্যামেরায় চোখে রেখে শুনছিলাম। পুরো আবহমান বাংলার সোঁদামাটির গন্ধ, রূপ-রঙ্গ সব আমার চোখে ভাসছিল। ভাসতে ভাসতে সরে যাচ্ছিল। হঠাৎ নীনা আপা বললেন – কনক! তুমি কানতেছ? কাইন্দো না বোন। কানতে কানতে আমার কলিজার পানি সব শুকাইয়া গেছে। হায় কপাল, যে মানুষটার গানে গ্রাম বাংলা কেঁদে ওঠে, যে অশ্র“তে নদী ভরে যায় সেই মানুষটার চোখের নদী শুকনো? এত অভিমান এত কষ্ট কি এই ময়না পাখির প্রাপ্য? যার গান শুনলে মনে হয় আমি আকাশে উড়ছি, ডানা মেলে সুর তরঙ্গে ভাসছি। শান্ত বিকেলটা প্রশান্তি ছড়িয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে, সেই কন্ঠের অধিকারী নীনা হামিদ অভিমানের খাঁচায় বন্দি? একটা মানুষ নাই তার অভিমান ভাঙ্গাতে। তাকে পরবাসী জীবন থেকে মুক্ত করে দেশে নিয়ে আসার মত কি কেউ নেই? মাটির মানুষ নীনা আপাকে কি আমেরিকায় মানায়? উনি আক্ষেপ করছিলেন ‘দেখো কনক রূপবান একটা শুধু কাল্পনিক চরিত্র না এটা বাংলার নারীর স্বাশ্বত চরিত্র। যে কিনা ২০ দিন বয়সের স্বামী সন্তানসম পালন করে। নিজের যুবা বয়স সামলে জীবন পার করেছে। একজন নারীর মধ্যে একই সাধে কন্যা, জয়া, জননীর অন্তর রূপ ফুটে উঠেছে। সেই রূপবান আজকের গানে অনর্থক কোমর দোলায় নাচে আর সারা বাংলার পুরুষদের নাচায়! যার কান্নায় সারা বাংলা কানলো সেই রূপবান আজ বিনোদনকারী! কনক বলো এই কি রূপবান? আমি কাঁদতে কাঁদতে হাসি। আপা মানুষ এক জীবনে চরিত্র বদলায় আর আপন রূপবানের এখন পঞ্চম জন্ম চলছে। এখন আর কোমর দুলালে চরিত্র স্খলন হয় না। উনি আবার হাসেন। যে হাসি বড় শিশুসুলভ এবং অবশ্যই দুর্লভ। যে মানুষ এমন হাসতে পারে তিনিই তো গাইতে পারেন সোনার ময়না পাখির মত গান একদমে। বাংলার মানুষ তাকে মনে না রাখলে কিছুই আসে যায় না। তার গান মনে রেখেছে নদীর পলিমাটি, বাঁশঝড়, নদীর ভরা নৌকার পাল। যেমন বাংলার দুঃখে কেঁদেছিলেন তেমনি অবলীলায় বাংলাদেশকে করুনাকরের স্পর্ধা জানিয়ে দিলেন আমার মাধ্যমে। বললেন যারা আমাকে মনে রাখে না তাদের আমিও মনে রাখিনা। এমন হেলাফেলা সেই করতে পারেন যিনি ঐশ্বর্যশালী, এবং আমাদের নীনা হামিদ আপা অবশ্যই ঐশ্বর্যশালী একজন কন্ঠশিল্পী যার কন্ঠে বাংলাদেশ সমৃদ্ধ। আমার জীবন আবারো ধন্য হলো নীনা আপার উদারতায়। বললেন কনক, আমার এই গানটা তোমার পছন্দ? যাও এই গানটা আমি তোমাকে দিলাম। এবার আমি অশ্র“তে ভাসি। এ প্রাপ্তি আমার পাওনা স্রষ্টা তুমি কতই না দয়ালু!
এভাবে আমার জীবন চলতে থাকে। জীবন দর্শন গভীর হয়। হঠাৎ কোন বাঁকে জীবন পথ বদলে যায়। যে বাউল আমি গেরুয়াতে চোরকাঁটা বিঁধলেও থেমে দাঁড়াতাম। পা ফেটে যাওয়া শামুকটাকেও পরম মমতায় হাত বুলিয়ে ফেলে দিতাম, সে আমি জীবন দর্শনে পরিশোধিত হয়ে, পরিমার্জিত হয়ে জীবন পথে গভীর কোনো গিরিখাদ দেখেও থামিনা। সঙ্গী বাউল বলেন হাঁটো জোর কদমে, এ খাদ তোমার পাড়ি দিতেই হবে। তোমাকে পারতেই হবে। তাঁর আর্শিবাদে আমি আবার পথ চলকে থাকি গিরিখাদ খাদ পড়ে থাকে খাদের গভীরতায়। তার গভীরতা আমাকে আর স্পর্শ করেনা। কিন্তু এই তিন মহিয়ষীর মত সুরভিত কিছু ব্যাক্তিত্ব আমার ভাবনায় সুগন্ধ ছড়াতে থাকে। সারা দিনের ক্লান্তির পর প্রশান্তিতে সেই সৌরভ আমাকে ঘুমের দেশে নিয়ে যায়। স্রষ্টা কতই তুমি দিলা আমারে বিনা কারণে।
লেখক:কনকচাঁপা
কন্ঠ শ্রমিক