নিজস্ব প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার পল্লীতে যৌতুকের শিবার গর্ভবতী মা-শিশুর প্রাণহানির ঘটনায় ঘাতক স্বামী, দেবর, শ্বশুর ও শ্বাশুরিসহ ৪ ব্যক্তিকে জোড়া খুনের অভিযোগ এনে গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি মামলা (নং-৩৪, তাং-১৪/০৫/১৫) দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা এবং পলাশবাড়ী উপজেলার নিকটবর্তী অভিরামপুর গ্রামের ঘাতক স্বামী শামিউল ইসলাম (২৫), দেবর শাফিউল ইসলাম, শ্বশুর হাফিজার রহমান ও শ্বাশুরি শাহিদা বেগম। এরা সবাই যৌতুক লোভী। আর পলাশবাড়ী উপজেলা সদরের কালুগাড়ী গ্রামের হায়দার আলী কন্যা ভিকটিম মামুনী খাতুন (২০)।বিয়ের মাত্র এক বছর বয়সে মামুনী ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। বিবাহের সময় বরের পরিবারকে নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্রাদিসহ তিন লাখ টাকা মূল্যের উপহার বিনিময়েও কেউ খুশি হয়নি। পর্যায়ক্রমে আরো লক্ষাধিক টাকার যৌতুকের দাবিতে ভিকটিম পরিবারকে চাপ সৃষ্টি করাসহ কারণে-অকারণে অন্যায়-অত্যাচার, নির্যাতন, বাড়ি থেকে পিত্রালয়ে পাঠানো অব্যাহত থাকে। কিন্তু যৌতুক দিতে অস্বীকার ও আপত্তির মুখে গত ১৪ মে দুপুর অনুমান ১২ ঘটিকার সময় পাষন্ড স্বামী, দেবর, শ্বশুর ও শ্বাশুরির নিজ বাড়ির উঠানে এলোপাথারি মারডাং-এর এক পর্যায়ে গর্ভবতী স্ত্রীর তলপেটে স্বামীর প্রচন্ড লাথি গুড়িতে পেটের সন্তানসহ ভিকটিম ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায়। এ সময় আত্মহত্যার অপপ্রচার চালিয়ে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হলেও প্রতিবেশী লোকজনের মুখে হত্যার অভিযোগ শনাক্ত হয়।
এ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ভিকটিম কন্যার পিতা ও স্বজনরা ফিরে এসে পিতা হায়দার আলী বাদী হয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি এজাহার লিপিবদ্ধ করেন। থানা কর্তৃপক্ষ এই এজাহার গ্রহণের পর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (ক)/৩০ ধারায় মামলা রেকর্ড করেন। পরে লাশ উদ্ধার ও সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের জন্য গত ১৫ মে গাইবান্ধা মর্গে প্রেরণ করেন। সিভিল সার্জন এই ময়না তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করেন। এ খবর লেখা পর্যন্ত ময়না তদন্তের ফলাফল থানায় এখনো পৌছায়নি। তবে এজাহারভূক্ত আসামীরা পলাতক থাকায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। থানা অফিসার ইনচার্জ জানান,পলাতক আসামীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।
গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃআরিফ উদ্দিন