বাংলাদেশ বনাম ভারতের মধ্যকার তৃতীয় ওয়ানডে সরাসরি দেখুন স্বদেশে
‘হোয়াইটওয়াশ? হোয়াইটওয়াশ আবার কী?’—রবিচন্দ্রন অশ্বিন একটু রেগে গিয়ে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়লেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বছর পাঁচেক হয়ে গেছে। গোটা পঁচিশেক টেস্ট আর শ খানেক ওয়ানডে খেলেছেন। ভারতীয় অফ স্পিনার তবু ‘হোয়াইটওয়াশ’ বোঝেন না, এটা মেনে নেওয়া কিছুটা কষ্টকরই! কিংবা হয়তো বোঝেন, পরিস্থিতির গ্যাঁড়াকলে পড়ে এখন শব্দটা এড়িয়ে যেতে পারলেই বাঁচেন আরকি!
যে কারণেই হোক, সংবাদ সম্মেলনে প্রসঙ্গটা উঠতেই মেজাজ হারালেন অশ্বিন। যে বাংলাদেশি সাংবাদিক প্রশ্নটা করেছিলেন, তিনি অবশ্য খুব ভালোভাবে বুঝিয়ে দিলেন হোয়াইটওয়াশ জিনিসটা কী। ‘ভারত ২-০ ব্যবধানে সিরিজে পিছিয়ে আছে। শেষ ম্যাচেও বাংলাদেশ জিতে ৩-০ করলে সেটাকে বলা হবে হোয়াইটওয়াশ। বাংলাদেশে আমরা এটাকে বলি বাংলাওয়াশ।’
একটু যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন তা বোধ হয় ততক্ষণে বুঝে উঠেছেন অশ্বিন। এবার ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি ফুটিয়ে বললেন, ‘আমরা চেষ্টা করব সেরা একাদশ খেলানোর। চেষ্টা করব জিততে এবং বাংলাওয়াশ এড়িয়ে যেতে।’
এরই মধ্যে নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়া সিরিজ থেকে এখন অবশ্য এর বেশি কিছু পাওয়ারও নেই ভারতের। অস্ট্রেলিয়া সফর, ত্রিদেশীয় সিরিজ, বিশ্বকাপ, আইপিএল, তারপর বাংলাদেশ সফর। ভারতীয় খেলোয়াড়দের ব্যস্ত ক্রিকেটে আপাতত কিছুদিন বিরতি পড়বে আজ বাংলাদেশের সঙ্গে শেষ ওয়ানডে দিয়ে। ওয়ানডে সিরিজের ট্রফিটা নিয়ে যেতে না পারলেও জয় দিয়েই তা শেষ করার প্রত্যাশা অশ্বিনের, ‘একটা জয়, এর বেশি কিছু তো আর করারও নেই। এটাই মৌসুমে আমাদের শেষ ম্যাচ। জয়ে শেষ করতে পারলে ভালো লাগবে।’
এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ হেরে যাওয়ায় দেশে অনেক সমালোচনা হচ্ছে ভারতীয় দল নিয়ে। অশ্বিন অবশ্য এই হারে লজ্জার কিছু দেখেন না। বরং যোগ্য দল হিসেবেই বাংলাদেশ ভারতকে হারিয়েছে মন্তব্য করে প্রতিপক্ষের উচ্ছ্বসিত প্রশংসাই করলেন, ‘প্রতিপক্ষকে শ্রদ্ধা করা খুব জরুরি। আপনি বলতে পারেন না যে ওদের কাছে হারটা অপমানজনক। ব্যাপারটা আসলে ও রকম নয়। একটা ভালো দল আমাদের হারিয়েছে এবং আমাদের সেটা মেনে নিতে হবে।’
শুধু ভারত নয়, ভবিষ্যতে আরও অনেক দলকেই যে বাংলাদেশের বিপক্ষে এই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হবে। অশ্বিন যেন তা দিব্য চোখেই দেখতে পারছেন। নিজেই বলেন, ‘আমরাই প্রথম দল নয় যারা ওদের কাছে সিরিজ হারলাম। ওরা আরও অনেক দলকেই হারাবে। ওরা পাকিস্তানকে হারিয়েছে। কদিন পর দক্ষিণ আফ্রিকা আসছে এখানে। ওদের বিপক্ষেও বাংলাদেশ সেরাটা দিয়েই চেষ্টা করবে। ওরা তো ভালো দল আর দিনে দিনে অনেক উন্নতিও করছে।’
ভবিষ্যতে আবার বাংলাদেশ সফরে আসার আগে ভারতকে এই ব্যাপারগুলো মাথায় রাখতে হবে। অশ্বিন শুধু তা মনেই করেন না, করণীয়ও তাঁর জানা, ‘এরপর যখন আমরা বংলাদেশে আসব, এটা জেনেই আসব যে দেশের মাটিতে ওরা সিংহের মতো খেলে। এই মাঠটাকে ওরা নিজেদের ঘাঁটি বানিয়ে ফেলেছে। আমাদের এখানে ফিরতে হবে আর প্রতিপক্ষকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। দেখাতে হবে এই কন্ডিশনে আমরা কতটা লড়াই করতে পারি।’