মোঃ হিমেল মোল্যা, নড়াইল প্রতিনিধি ঃ নড়াইলে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে আহত করে হাসপাতালে পাঠানোর ঘটনায় অভিযুক্ত খুলনার ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) কাজী কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) নড়াইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলা করেন করেন আহত গৃহবধূ শামীমা শারমিন নাজের পরিবার। পরে আদালত মামলা আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয়। তবে বর্তমানে বরখাস্ত রয়েছেন অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা কামাল।
এদিকে, দুপুরে হাসপাতাল থেকে আহত গৃহবধূ নাজকে বাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সেখানে বিছানায় শুয়ে অসুস্থ নাজ জানান, এর আগে অন্তত ২০ বার তার পরিবারের লোকেরা সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেছেন। এখন আবার ফিরে গেলে তাকে হয় স্বামীর নির্যাতন সইতে হবে বা আত্মহত্যা করতে হবে। তিনি যৌতুকলোভী ও নির্যাতনকারী স্বামী কামালের বিচার চান।
নড়াইল সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডাঃ আসাাদুজ্জামান মুন্সী জানান, নাজ শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ থাকার পরও পরিবারের অনুরোধে তাকে ছেড়ে দিতে হয়েছে।
নড়াইলের পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম জানান, নাজকে যদি কেউ বিরক্ত করে বা হুমকি দেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও মামলা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য যে, প্রায় ১৪ বছর আগে নড়াইল শহরের ভওয়াখালী এলাকার মুক্তার হোসেনের মেয়ে শামীমা শারমিন নাজের সঙ্গে বিয়ে হয় লোহাগড়া উপজেলার চাঁচই-ধানাইড় গ্রামের কাজী আবু বক্করের ছেলে কাজী কামাল হোসেনের। তাদের ১১ বছরের এক মেয়ে ও ৪ বছরের এক ছেলে রয়েছে।
বিয়ের পর বিভিন্ন সময়ে যৌতুকের দাবিতে নাজকে শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন স্বামী কামাল। সম্প্রতি শাশুড়ির নামে থাকা জমি বিক্রি করে ১০ লাখ টাকা দিতে বলেন কামাল। কিন্তু টাকা দিতে অস্বীকার করায় গত ১ আগস্ট রাতে স্ত্রীকে পিটিয়ে আহত করেন তিনি। ওই দিনই রাতে তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বর্তমানে সাময়িকভাবে বরখাস্ত থাকা অভিযুক্ত খুলনার ডুমুরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) কাজী কামাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সবকিছু তার বিরুদ্ধে সাজানো ষড়যন্ত্র।