আসন্ন ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে দক্ষিণাঞ্চলের নৌ-রুটের যাত্রীদের জন্য অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হবে। তবে এবারই প্রথম নৌ-পথের যেকোন শ্রেণীর যাত্রীকে আগে ভাগেই টিকেট কেটে লঞ্চে ওঠা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর এ কারনে আগে ভাগেই যাত্রীদের টিকেট বিক্রির ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তারা। সূত্রমতে, ঢাকা সদরঘাটের নৌ-টার্মিনালের পশ্চিমপাশের নির্মাণাধীন নতুন ভবন থেকে অগ্রিম এ টিকেট বিক্রি করা হবে। এবার টিকেট ছাড়া কোনো যাত্রীকেই লঞ্চে উঠতে দেয়া হবে না। ইতোমধ্যে স্পেশাল সার্ভিসের বেশ কিছু লঞ্চের কেবিন যাত্রীদের কাছে টিকেট অগ্রিম সংগ্রহ বাধ্যতামূলক থাকলেও ডেক যাত্রীদের কখনোই অগ্রিম টিকেট সংগ্রহ করতে হয়নি। তারা লঞ্চে ওঠার পর কিংবা গন্তব্যে নামার পূর্বে এ টিকেট ক্রয় করতেন। এবার আর ডেক যাত্রীসহ কোন লঞ্চ যাত্রীদের সে সুযোগ থাকছে না। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ঠেঁকাতে আরো কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও সূত্রটি নিশ্চিত করেছেন। বিআইডব্লিউটিএ’র উচ্চ পদস্থ এক কর্মকর্তা জানান, আসন্ন ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে অতিসম্প্রতি সুষ্ঠু ও নিরাপদ নৌ-চলাচল নিশ্চিতকরণ শীর্ষক এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত করা হয়েছে। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় এ সভার আয়োজন করেছিল। নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে ঈদে যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে লঞ্চগুলোর ওপর কড়া নজরদারি রাখার কথা জানিয়েছেন মন্ত্রী। ওই সভায় মন্ত্রী কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারন করে উল্লেখ করেন, কোনো অবস্থায়ই লঞ্চের ছাদে যাত্রী তুলতে দেয়া হবে না। গত ঈদ-উল ফিতরের সময় কোন নৌ-দূঘর্টনা ঘটেনি এটা ভাল দিক উল্লেখ করেন মন্ত্রী আরও বলেন, এ অবস্থার আরও উন্নতি করে যাত্রী দূর্ভোগ কমানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের আরো আন্তরিক ভাবে কাজ করতে হবে। এ ব্যাপারে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান সাংবাদিকদের জানান, অতীতের ন্যায় নতুন করে আর কোন নৌ-দুর্ঘটনা ঘটুক আমরা-কেউ তা চাই না। তাই সকলকে সর্তক দৃষ্টি রাখার জন্য বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যাত্রীদেরও সচেতন হওয়ার জন্য মন্ত্রী পরামর্শ দিয়ে বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে কখনোই নৌ-যানে যাতায়াত করবেন না। বিগত বছরগুলোর তুলনায় নৌ-দুর্ঘটনা কমেছে এমন উদাহণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ২০০৪ সালে ৩১টি নৌ- দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে ২০১৫ সালে এ পর্যন্ত নৌ- দুর্ঘটনা ঘটেছে মাত্র ৫টি। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহে বিআইডব্লিউটিএ এবং লঞ্চ মালিকদের নিয়ে আরও একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে ঈদ স্পেশাল সার্ভিস ও যাত্রীদের ভাড়া নির্ধারনসহ আরো করনীয় বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য, বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে নৌ-পথ। বর্তমানে রাজধানী ঢাকার সাথে দক্ষিণাঞ্চলের ৪৩টি নৌ-রুটে বে-সরকারী কোম্পানীর লঞ্চ চলাচল করছে। ঈদ উপলক্ষ্যে এসব রুটের যাত্রীদের চাপ কয়েক গুন বেড়ে যায়। ফলে নানা দূর্ভোগের মাঝেও তাদের দূঘর্টনার আশংকা নিয়েই ঘরে ফিরতে হয়।