মেঘ দেখলেই ছুটির ঘন্টা আর রোদের তাপ বাড়লেই বিরতি। এযেন নিত্যদিনের রুটিন। গত ৩ বছর ধরে এভাবেই চলছে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার ১৫ নং সত্যপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিশু শিক্ষার্থীর পড়াশুনা। শিক্ষার্থীদের তাদের শিক্ষকদের নিকট বার বার একটাই প্রশ্ন “ আর কতদিন খোলা আকাশের নীচে তাদের এভাবে ক্লাস করতে হবে?” এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর নেই শিক্ষকদের কাছে। জানা গেছে, ১৯৪২ সালে ভেদরগঞ্জ উপজেলার সত্যপুর গ্রামে ৫৭ শতাংশ জমির উপর ১৫ নং সত্যপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২শ’ ৮ জন এবং শিক্ষক রয়েছেন ৭ জন। বিদ্যালয়ের ভবনের ছাদসহ বিভিন্ন অংশে ফাটল ও পলেস্তার খসে পড়ায় ২০১২ সালের মাঝামাঝি সময়ে ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষনা করে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ। এরপর থেকেই খোলা আকাশের নীচে চলছে ১ম থেকে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান। সরকার শিক্ষাখাতকে গুরুত্ব দিয়ে বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী শিশুদের বিদ্যালয়ে শতভাগ ভর্তি নিশ্চিত করা, শিক্ষার গুণগতমান উন্নত করা ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও ভাগ্যের উন্নতি হয়নি উক্ত বিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিশু শিক্ষার্থীর। ৩ বছর যাবত শিক্ষার্থীরা খোলা আকাশের নীচে ক্লাস করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন নজরে আসেনি। ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী তিমির কুমার মন্ডল জানান, ১৫ নং সত্যপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন পরিত্যক্তের বিষয়টি আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। খুব শীগ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শহীদুল্লাহ সরদার জানান, ৫ম শ্রেণির সমাপণী পরীক্ষায় প্রতিবছর এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করে আসছে। খোলা আকাশের নীচে ক্লাস করতে শিক্ষার্থীদের খুবই কষ্ট হয়। ফলে অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসতে অনীহা প্রকাশ করে। এদিকে বিদ্যালয়ের ৩০ শতাংশ জমি স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল দখল করে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রধান শিক্ষক মোঃ শহীদুল্লাহ সরদার। তিনি জানান, এ বিষয়টি ডিজি মহোদয়কে জানানো হয়েছে। সরকারি বিদ্যালয়ের সম্পত্তি দখলমুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবী জানান তিনি।