বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ঘটনার জন্য সৌদি উপপ্রধানমন্ত্রী ও সুপ্রিম হজ কমিটির প্রধান ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফকে দায়ী করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন গ্র্যান্ড মুফতি।
শনিবার প্রকাশিত সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার মিনায় হজের আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে (‘শয়তানের স্তম্ভে’ পাথর ছুড়তে যাওয়ার পথে) পদদলিত হয়ে ৭৬৯ হাজির মৃত্যু হয়। আহত হয় আরো ৯৩৪ জন।
বৃহস্পতিবারের প্রাণহানির ঘটনার পর শুক্রবার সন্ধ্যায় ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফ গ্র্যান্ড মুফতির সঙ্গে দেখা করেন।
সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) বরাত দিয়ে বিবিসি বলেছে, “গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আব্দুল আজিজ তাকে বলেন, যা ঘটেছে তার জন্য আপনি দায়ী নন। এমন অনেক বিষয় আছে যেগুলো মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
“সেগুলোর জন্য আপনি দায়ী হতে পারেন না; ভাগ্য এবং নিয়তি অবশ্যম্ভাবী।”
গত ২৫ বছরের মধ্যে হজ মৌসুমে সব চেয়ে বড় প্রাণহানির ঘটনায় হজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনার নির্দেশনা দিয়েছেন বাদশাহ সালমান।
তবে এই প্রাণহানির জন্য সৌদি কর্তৃপক্ষের অদূরদর্শিতা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও অব্যবস্থাকে দায়ী করছে ইরান। পাশাপাশি রিয়াদের কূটনীতিককে ডেকে সৌদি আরবের অব্যবস্থাপনার জন্য ক্ষোভও জানিয়েছে।
একই সঙ্গে সৌদি বাদশাহর ছেলে মুহাম্মাদ বিন সালমানের গাড়িবহর ‘মিনার কেন্দ্রস্থলে আসায়’ তীব্র ভিড়ে পদদলনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইরানের রাষ্ট্রীয় বেতার।
লেবাননের আরবি দৈনিক আদদিয়ার বরাত দিয়ে রেডিও তেহরান লিখেছে, “শাহজাদা মুহাম্মাদ বিন সালমানের গাড়ি বহরই প্রাণঘাতী এই বিপর্যয় সৃষ্টির মূল কারণ।
সৌদি সরকার বিষয়টিকে ‘ধামাচাপা দেওয়ার জন্য’ হজের সময় মিনায় সালমানের সফর বা তার উপস্থিতি সংক্রান্ত খবর প্রচার ‘নিষিদ্ধ করেছে’ বলেও প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।
ইরান ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশ হজযাত্রীদের নিরাপত্তার নিয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বলেছে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সৌদি কর্তৃপক্ষকে ‘অযোগ্য’ বলে এই মৃত্যুর ‘দায় স্বীকার’ করার আহ্বান জানিয়েছে ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ।
ইরানি সংবাদ মাধ্যম আইএসএনএ নিউজ এজেন্সির খবরে বলা হয়, সৌদি রাজপরিবারে ‘অপরাধের’ বিচার চাইতে শনিবার ইরানের প্রসিকিউটর জেনারেল সৈয়দ ইব্রাহিম রাইসি ‘আন্তর্জাতিক আদালতে’ যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবারের ওই ঘটনায় ইরানের অন্তত ১৩৪ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে ৩৪০ জনের বেশি।