চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ১৮৫ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সামাজিক সংগঠন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ (নিসচা)।

মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ও জাহানারা কাঞ্চনের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য রাখেন নিসচা’র চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।

তিনি বলেন, বাইশ বছর আগে যখন এ আন্দোলন শুরু হয় তখন মানুষের ধারণাই ছিল না, সড়ক দুর্ঘটনারোধে আন্দোলন হতে পারে। ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষ সচেতন হতে শুরু করেছে। একইভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং রাজনীতিবিদদেরও এটা থেকে বের হয়ে আসতে সময় লেগেছে।

সড়ক দুর্ঘটনারোধে চালক-যাত্রী-পথচারীসহ সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে নিসচা চেয়ারম্যান বলেন, সুইডেনে সড়ক দুর্ঘটনা শূন্যের কোটায়। সবাই সচেতন হলে বাংলাদেশেও এটা অসম্ভব নয়।

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, মহাসড়কে চল্লিশ কিলোমিটার পর পর ট্রমা সেন্টার  ও উদ্ধারকারী টিম স্থাপনের জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। সরকার এ প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়ন করলে দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা আরও কমে আসবে।

তিনি জানান, ২০১৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ছিল সাত হাজারের বেশি। পরের বছর ২০১৪ সালে তা কমে দাঁড়ায় সাড়ে পাঁচ হাজারের একটু বেশিতে। এ বছরের নয় মাসে প্রাণ গেছে ৩ হাজার ১৮৫ জনের। আশা করছি এ বছর সড়ক দুর্ঘটনা আরও কমে আসবে।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন নিসচা’র ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসান উল হক কামাল। শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন সংগঠনটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মিরাজুল মইন জয়। এতে উপস্থিত ছিলেন নিসচা‘র মহাসচিব শামীম আলম দীপেন, ভাইস চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আমজাদ হোসেন, যুগ্ম-মহাসচিব সাদেক হোসেন বাবলু, বেলায়েত হোসেন নান্টু, লায়ন গনি মিয়া বাবুল, প্রচার সম্পাদক কামাল হোসেন খান প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে ‘নিরাপদ’ নামে একটি স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে ‘চালক-মালিক, যাত্রী-পথচারী ভাই ভাই, সড়ক দুর্ঘটনামুক্ত বাংলাদেশ চাই’ শীর্ষক স্লোগানে ‍আগামী ২২ অক্টোবর সকালে জাতীয় শিল্পকলা একাডেমির সামনে থেকে একটি ৠালি অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর বান্দরবানে ইলিয়াস কাঞ্চনের শুটিং স্পটে যাওয়ার সময় এক সড়ক দুর্ঘটনায় কাঞ্চন পত্নী জাহানারা কাঞ্চন নিহত হন। এরপর থেকেই নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন ইলিয়াস কাঞ্চন।