সম্পাদনায়- আরজে সাাইমুর, স্বদেশ নিউজ২৪.কম:
পৃথিবী বদলে গেছে যা দেখি নুতন লাগে…… ঢাকার শহর আইসা আমার আশা ফুরাইছে……লাল নীল বাতি দেইখা চোখ জুরাইছে কিন্তু পেট কি ভরছে??? পেটের ক্ষুধা কি নিবারন হইছে??? প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে প্রতিনিয়তই ঢাকায় এসে ভিড় করছেন গ্রামের দরিদ্র এক শ্রেনীর মানুষ। আর ঢাকা হলো কর্মব্যস্ত শহর যেখানে কেউ কারো খবর নেওয়ার সময় নাই। যেভাবে পারে চলছে। সাধারন মানুষের পাশাপাশি দেশে রয়েছে আইন শৃখ্ঙলা বাহিনী যাদের মধ্যে বেশি আলোচিত বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনা। শান্তি শপথে বলীয়ান বাংলাদেশ পুলিশ আইন শৃঙ্খলা রক্ষা, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা, নির্যাতিত মানুষের পাশে বন্ধুর মতো দাড়ানো এবং অপরাধীকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে থাকে। বাংলাদেশ পুলিশের হেড কোয়ার্টার গুলিস্তানের নগর ভবনের পশ্চিম পাশে অবস্থিত। ঢাকা মহানগরীর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। পুলিশকে সহায়তা এবং বাংলাদেশের মানুষকে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় আবদ্ধ করতে আরও রয়েছে – র্যাব, ডিবি, এসবি, সিআইডি, বিট পুলিশ এবং রেলওয়ে পুলিশ। বর্তমানে অনলাইনে জিডি করা যায়। এছাড়া নিপীড়িত জনগণকে তাৎক্ষণিক পুলিশি সেবা প্রদান করার জন্য চালু হয়েছে ওয়ান স্টপ সার্ভিস। পুলিশ বাহিনী আইন শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন, ইমিগ্রেশন এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে।
তবে পুলিশ বাহিনী অনেক অভিযোগ আছে। বিভিন্ন থানা থেকে বিভিন্ন সময় রোডে ঘাটে তার অবৈধ্য পন্থায় উর্পাজনের কথা শুনা যায়। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে এগুলো ঘটেও বটে। গতকাল মগবাজার মিডিয়া গলিতে আমি আর ভোরের কাগজের সাংবাদিক বন্ধু সুমন মোস্তফা আড্ডা দিচ্ছিলাম এক চায়ের দোকানে। পূর্বের ন্যায় চলছে চায়ের কাপে আড্ডা। আমাদের সামনেই ঘুরা ফেরা করছিল এক সুবিধা বঞ্চিত শিশু। আমরা দূর থেকে দেখতে পেরেছিলাম। এবং হঠাৎ এক পুলিশকে দেখতে পেলাম। এক পর্যায়ে পুলিশ এই শিশুকে কি যেন বলছে এবং মনে হলো পুলিশটা ঐ শিশুর সাথে জোড়েই কথা বলেছে। শিশুটি একটু দূরে চলে যায়। আবার কিছুখন পর দেখলাম শিশুটিকে আবার ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসলো।
আমাদের মনোযোগটা আর আমাদের আড্ডায় নেই। তখন খেয়াল করলাম পাশের একটা স্থানে শিশুটিকে বিরিয়ানি খাওয়াচ্ছে এবং নিজে চায়ের দোকান থেকে পানি নিয়ে যাচ্ছে। পরে বুঝতে পারলাম অনাহারে থাকা শিশুটিকেই পানি ও খাবার দিচ্ছেন ঐ পুলিশ। তখন বন্ধু সুমন মোস্তফা বললো সাংবাদিকরা শুধু পুলিশের নেগিটিভ জিনিসগুলোই সবার সামনে তুলে ধরে। এখন কোথায় তারা । এর আগেই আমাকে সুমন বলছিল ওর পিঠে ব্যথা চলে যাবে। আর অফিস থেকে জরুরী ফোনও চলে এলো যথারীতি সুমন চলে গেল। কিন্তু আমি আর যেতে পারলাম না কৌতহল বেড়ে গেল। আমি একটু সামনে গিয়ে মোবাইলে ছবি তুললাম শিশুটির। পরে পাশে থাকে ্একজনকে বললাম পুলিশ অফিসার কোথায়। কিছুখন পর তিনি বের হয়ে আমার সাথে দেখা করলেন। আমি তার মানবতা দেখে মুগ্ধ হলাম তার সাথে কথা বললাম। তিনি তখন বলল আসলে আমার খুব ক্ষুধা লেগেছিল আর মাথাটা অনেক গরম হয়ে গিয়েছিল। তখনই ঐ শিশুটিকে তিনি দেখেন আর ওর সাথে একটু রাগ করেই কথা বলেন এবং যেতে বলেণ। পরে তিনি বিরিয়ানি কিনে এনে একা আর খেতে পারেন নি। তার গলা দিয়ে খাওয়া নামছিল না। কারন প্রায় তিনি এমন সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের খাইয়ে থাকেন। তাকে ঐসব শিশুরা মামা বলে ডাকেন । তখন সেই পুলিশ মো: মোস্তফা আমাকে জানান এমন অনেক সুবিধা বঞ্চিত শিশু আছে যাদের খবর আমরা জানিনা। তিনি আরও বলেন শিশুটি মনে কষ্ট পেয়ে যখন দূরে চলে যাচ্ছিল তখন তিনি বুঝতে পারেননি যখন তিনি খেতে বসে খেতে পারলো না শিশুটির কথা বার বার মনে পড়লো। আর বুঝতে পারলো এবং শিশুকে খুজে এনে নিজের খাবারটি খাওয়ালো।
ঘটনাটি ঘটে বিকালে কিন্তু ব্যস্ততার কারনে আমি লিখতে পারিনি তবে আমি সেই শিশু ও পুলিশের ছবি তুলে এনেছিলাম। যদিও পুলিশ অফিসার ছবি তুলতে চায়নি এর মধ্যে যখন জানতে পারলো আমিও একজন সাংবাদিক তখন তো আরো বেশি না করলো । তখন আমি বললাম ভালো কাজের সাথে আমি আছি আর ভালো কাজকে সবসময়ই ভালো বলবো। আসলে তিনি চাননি এটাকে দেখানো মতো কোন ইস্যু হোক আর আমারও ইচ্ছা ছিলনা কিন্তু সুযোগ তো সব সময় আসে না। এমন সুযোগটা আমিও হাত ছাড়া করলাম না। আমি সবাই সুবিধা বঞ্চিত শিশুদেরকে সাহায্য সহযোগিতা করুক। আমরা সবাই সাধারন মানুষই পারি নিজেদের দেশটি সুন্দরভাবে গড়তে । শুধু দরকার একতা, সততা, নিষ্ঠা, ভালোবাসা, সচেতনতা।
পরিশেষে সবার উদ্দেশ্যে বলতে চাই আসলে আমি, আপনি একা কোন কিছুই করতে পারবো না। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই আমাদের মনোভাবকে বদলাতে পারবে। আমরা একসাথে বেশি কিছু করতে যাবো না। একটু একটু করে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের সহযোগিতা করতে পারি। আমার িএই লেখনীর মাধ্যমে সবাইকে জানাতে চাই আমরা মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। আমরা চাইলেই অনেক কিছু করতে পারি। মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য… একটু ভালোবাসা একটা জীবনকে বদলে দিতে পারে। আমি বলতে চাই যারা এই মহান পেশায় থেকেও নিজেকে বদলাতে পারছেন না তারা দয়া করে এই পুলিশ অফিসারের কাছ থেকে শিখুন মানবতা কাকে বলে। ভোগে সুখ নয়, ত্যাগেও সুখ আছে। আর শুধু পুলিশ নয় সাধারন মানুষদেরও একই কথা বলবো আমি। আমরা আমাদের অতিরিক্ত খরচ কমিয়ে আসুন একটু ভালোবাসা দেই এই সব সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের এগিয়ে আসি আর্তমানবতার সেবায়।
সাইমুর রহমান
email- swadeshnews24@gmail.com