সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে গত শুক্রবার ও শনিবার পূর্ব লন্ডনের ওয়াটারলিলি হলে অনুষ্ঠিত হলো ইউকে-বাংলাদেশ ই- কমার্স মেলা। তবে এবারের মেলার আয়োজন ও সফলতা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে গত শুক্রবার ও শনিবার পূর্ব লন্ডনের ওয়াটারলিলি হলে অনুষ্ঠিত হলো ইউকে-বাংলাদেশ ই- কমার্স মেলা। তবে এবারের মেলার আয়োজন ও সফলতা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। আর মেলা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এবারের মেলার উদ্বোধন করতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন বানিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। উদ্বোধন শেষে মেলা ঘুরে দেখার সময় সেখানকার বিভিন্ন অসঙ্গতি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। সেইসাথে অন্য কোন ভেন্যুতে মেলার আয়োজন করা উচিৎ ছিল বলেও তিনি তখন জানিয়েছিলেন।
শুধু বাণিজ্যমন্ত্রীই নন, মেলার আয়োজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্পন্সর প্রতিষ্ঠান এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদও। তিনি জানান, “এনআরবি ব্যাংক ২৫ হাজার পাউন্ড দিয়ে মেলার স্পন্সর হয়েছে। কিন্তু যে পরিবেশে মেলার আয়োজন করা হয়েছে, তাতে আমি সন্তুষ্ট না।” লন্ডনের কোনো বাণিজ্যিক এলাকায় অন্তত ফাইভ স্টার হোটেলে এই আন্তর্জাতিক মেলার আয়োজন হওয়া উচিত ছিল বলেও জানান তিনি।
মেলার আয়োজন নিয়ে ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (বিবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট মাতাব চৌধুরী বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি ডিজিটাল দেশ হিসেবে গড়ে উঠার পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় লন্ডনে বাংলাদেশের ই কমার্স নিয়ে মেলার যে আয়োজন হয়েছে, সেটা খুবই ভালো উদ্যোগ। কিন্তু আয়োজনের নমুনা দেখে আমরা হতাশ হয়েছি। মনে হয়েছে, মেলার প্রকৃত উদ্দেশ্য সাধনের চাইতে অর্থ বানিয়ে নেয়ার বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।”
জুনায়েদ আহমদ পলকের প্রসংশা করে তিনি বলেন, “প্রতিমন্ত্রী যেভাবে ধৈর্যসহকারে সাংবাদিকদের প্রশ্ন মোকাবেলা করলেন, তাতে আমি অভিভুত। এমন মন্ত্রী বাংলাদেশে আরো বেশি বেশি থাকা প্রয়োজন। মেলা ব্যর্থ হওয়ায় আয়োজকদের জবাবদিহি করা উচিৎ বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
এবারের মেলায় দেশের ৫০টি প্রতিষ্ঠানের অংশ নেওয়ার কথা ছিল। তবে মেলায় ছিল ৪০টির মতো স্টল যার অনেকগুলোই আবার ছিল ফাঁকা। হাতেগোনা কয়েকটি স্টলে পণ্যের প্রদর্শনী ছিল। এছাড়া মেলা চলাকালীন সময়ে দুইদিনে প্রায় ৫০ হাজার দর্শনার্থী মেলায় আসবেন, এমন কথাও উল্লেখ ছিল মেলা সংক্রান্ত কাগজপত্রে। তবে দুইদিনে সবমিলিয়ে প্রায় দেড়শ মানুষ এসেছেন।
বাংলাদেশে ই কমার্সকে প্রবাসীদের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে লন্ডনের ওয়াটার লিলি হলে দ্বিতীয়বারের মতো দু দিন ব্যাপী এই ই-কমার্স মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। তবে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে আয়োজিত এই মেলা ব্যর্থ হওয়ার স্থানীয় বাংলাদেশীদের মধ্যেও এ নিয়ে চলছে সমালোচনা।
এ বিষয়ে ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাবের আহবায়ক রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী শোয়াইব মেলায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে অংশ নিতে এসে বলেন, হয়তো মেলার আয়োজক কর্তৃপক্ষ বৃটেনের বাংলাদেশী কমিউনিটি ও মূলধারার মিডিয়াকে সম্পৃক্ত না করার কারণে এই উপস্থিত শূণ্যতা।
মেলা ব্যর্থ হয়েছে, এমন দাবি উঠলেও মেলার মূল আয়োজন কম্পিউটার জগতের প্রধান নির্বাহী আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, মেলা সফল হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর মেলায় দর্শনার্থী বেশি ছিল বলেও তিনি দাবি করেন।
উল্লেখ্য যে, লন্ডনে এ বছর দ্বিতীয়বারের মতো ই-কমার্স মেলার আয়োজন করা হয়। মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ছিল আইসিটি বিভাগ, হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং কম্পিউটার জগত।