ক্রিকেটের ‘তিন মোড়ল’-এর সমালোচনা করলেন এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) নয়া চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর। ক্রিকেটের ওপর ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড- এই তিন মোড়লের কর্তৃত্বকে তিনি অতি বাড়াবাড়ি মনে করেন। এতে ভবিষ্যতে ক্রিকেট ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেই মনে করেন তিনি। এন শ্রীনিবাসনকে সরিয়ে দেয়ার পর আইসিসি’র চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন ভারত ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) প্রধান শশাঙ্ক মনোহর। গত সপ্তাহে শ্রীনিবাসনের জুতায় পা গলিয়েছেন তিনি। আর নয়া এ দায়িত্ব নিয়েই বিভিন্ন ধরণের ইতিবাচক পদক্ষেপ নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে সিরিজ খেলার ব্যাপরে মনযোগী হয়েছেন। ভারতের একটি শ্রেণীর বিরোধিতা সত্বেও তিনি সম্ভাব্য এ সিরিজের প্রতি নিজের আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এবার আইসিসি’র মূল সংবিধানের দিকে নজর শশাঙ্ক মনোহরের। যা গত বছর পরিবর্তন করা হয়। আইসিসি’র সর্বময় ক্ষমতা দেয়া হয় তিন দেশ- ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের হাতে। আইসিসির শীর্ষ পদগুলোতে এই তিন দেশের প্রতিনিধিরাই থাকবেন সর্বময় ক্ষমতাধর। এমন কি, আইসিসির অর্জিত লাভের অধিকাংশ চলে যায় এই তিন দেশের ক্রিকেট বোর্ডের পকেটে। তিন মোড়লকে নিয়ে এমন সংবিধান তৈরির নাটের গুরু ছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান এন শ্রীনিবাসন। কিন্তু এমন অদ্ভুত নিয়মের সমালোচনা করলেন খোদ চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর। ভারতের ‘দ্য হিন্দু’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘শুধু তিনটি দেশ আইসিসিতে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হবে, বিষয়টির সঙ্গে আমি একমত নই। এটা আমার ব্যক্তিগত দর্শন। আমি সব সময় বলেছি, ব্যক্তির চেয়ে প্রতিষ্ঠান বড়। আপনি কোনও নির্দিষ্ট দেশের কারও জন্য আইসিসির শীর্ষ পদগুলো দখলের নিশ্চয়তা দিতে পারেন না। আইসিসি’র বর্তমান সংবিধানমতে তিনটি দেশের প্রতিনিধরাই সংস্থাটির শীর্ষ পদে থাকতে পারবে।’ এমন অদ্ভুত পদ্ধতিতে ভুল উল্লেখ করে তিনি যোগ্য ব্যক্তিদের পদে বসার অধিকার মনে করেন। বলেন, ‘কোনও পদ নেয়ার জন্য আপনাকে যোগ্য এবং সেরা ব্যক্তি হতে হবে। জিম্বাবুয়ে কিংবা ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেউ শীর্ষ পদে থাকতে পারেন। এমন কি আইসিসি’র সহকারী ও সহযোগী দেশগুলো থেকেও কেউ কমিটিতে থাকতে পারেন।’ বর্তমান পদ্ধতিতে আর্থিকভাবে ভারত লাভবান হলেও তিনি এর পক্ষে নন। বলেন, ‘এটা শুনতে খুবই ভাল লাগে যে, আইসিসির লাভের ২০ শতাংশ ভারত ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) পায়। কিন্তু আপনি গরীবকে আরও গরীব আর ধনীকে আরও ধনী করতে পারেন না। কারণ, আইসিসি বিশ্বব্যাপী ক্রিকেট পরিচালনা করে।’