এইডস রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার কমিয়েছে। এইডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমাতে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করছে। এইডস রোগীর শূন্যের কোঠায় আনতে হলে ডাক্তার, শিক্ষক, সাংবাদিক, বুদ্ধিাজীবী, ধর্মীয় নেতাসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। গতকাল রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। মন্ত্রী বলেন, এইডস প্রতিরোধ কার্যক্রম বাংলাদেশ সরকারের কাছে জাতীয় অগ্রাধিকারপ্রাপ্তির একটি বিষয়। সরকার ও এনজিওদের যৌথ উদ্যোগে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী ও এইচআইভিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা, সেবা ও সহযোগিতা দেয়ার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এ কর্মসূচির আওতায় ১২টি সরকারি হাসপাতালে এইডস রোগ শনাক্ত করা, চিকিৎসা, অক্রান্ত ব্যক্তিদের বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণসহ বিভিন্ন সেবা দেয়া হচ্ছে। এইডসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ব সম্প্রদায় ১৯৮৮ সাল থেকে বিশ্ব এইডস দিবস পালন করে আসছে।
ইউএন এইডসের তথ্য মতে বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৩৪ মিলিয়ন মানুষ এইডসে আক্রান্ত এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ মিলিয়ন মানুষ এ মরণঘাতী রোগে মৃত্যুবরণ করেছে। এ বছর বাংলাদেশে (নভেম্বর ২০১৪ থেকে অক্টোবর ২০১৫) পর্যন্ত ৪৬৯ জন মানুষ এইডস রোগে আক্রন্ত হয়েছে। এর মধ্য ৯৫ জন মৃত্যুবরণ করে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নূর হোসেন তালুকদার, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বিমান কুমার সাহা এনডিসি, আইএনএইডস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর লিও কেনি, ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের চিপ অব হেলথ ডা. সাথিয়া ডোরাইসামি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
১২তম আইক্যাপ সম্মেলন মার্চে: ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেস অন এইডস ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক (আইসিএএপি) বা আইক্যাপের ১২তম সম্মেলন আগামী বছর মার্চ মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। ‘এইডসমুক্ত প্রজন্মের জন্য পরিবর্তনের ডাক, এটা আমাদের স্বাস্থ্যের অধিকার’- স্লোগানকে সামনে রেখে আইক্যাপের ১২তম আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ব এইডস দিবসের আলোচনা সভায় এমন তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে বলে লোকাল অর্গানাইজিং কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়। বাংলাদেশ সরকার এবং পার্টনারস ইন পপুলেশনের (পিপিডি) সঙ্গে যৌথভাবে আইক্যাপ-১২ সম্মেলনের আয়োজন করছে। এ সম্মেলনে বিশ্বের ২৬টি দেশের প্রায় সাড়ে তিন হাজার প্রতিনিধি অংশ নেবেন। প্রতি দুই বছর পর পর এশিয়া ও প্রশান্ত-মহাসাগরীয় অঞ্চলের সদস্য দেশগুলোতে এ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। আইক্যাপের ১১তম সম্মেলন থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গত ২০শে নভেম্বর ঢাকায় ১২তম আন্তর্জাতিক এইডস (আইক্যাপ-১২) সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অনিবার্য কারণবশত সম্মেলনের নির্বাহী কমিটি এ সম্মেলন স্থগিত করে।