সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান, স্বদেশ নিউজ২৪.কম: মডেল ও অভিনেত্রী অমৃতা খান। রঙিন পর্দায় যাত্রা শুরু করেন ২০০২ সালে। এরপর২০১৩ সালে চলচ্চিত্রে তার অবির্ভাব ঘটে। যৌথ পরিচালনায় “গেইম” চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে। এটি মুক্তিপায় ২০১৫ সালে। চলচ্চিত্রে আসার আগে তিনি বেশ কিছু বিজ্ঞাপন চিত্র এবং মিউজিক ভিডিও-তে কাজকরেছেন। বাংলা চলচ্চিত্রের এ নবাগতা অভিনেত্রীর শুরুটা যেভাবে আলোচনার মধ্য দিয়ে হয়েছিলো।এরপর সেভাবে নিজেকে আর মেলে ধরতে পারেননি। তারপরও বিভিন্ন কারণে আলোচনায় ছিলেন।এরমধ্যে মাঝখানে কেটে গেছে দেড়টি বছর। এসময়ের মধ্যে একবারের জন্য ক্যামেরার সামনেদাঁড়াননি। এবার সে বিরতি ভেঙেছে। দীর্ঘ দিন পর পুরনো একটি ছবির কাজের মধ্যে দিয়ে তিনিফিরেছেন।
‘আমি যখন আমার চলচ্চিত্রের ক্যারিয়ার শুরু করেছিলাম, তখন কোনটা খারাপ কোনটা ভালো এতোকিছু বুঝতাম না। কোন প্রোডাকশনে কাজ কারলে আমার জন্য ভালো হবে, এতো কিছু কখনোইভাবনার মধ্যেই ছিল না। এসব বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত তখন না নেওয়ার ফলে আমার ভুল হয়েছিলো।এখন কাজ করতে করতে এসে সে ভুলগুলো বুঝতে পেরেছি। এখন বুঝতে পেরেছি কোন ছবিগুলোতেআমার অভিনয় করা উচিত ছিলো কোনগুলোতে ছিলো না। আমি একই ভুল আবারও করতে চাই না। এভাবেই নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে দীর্ঘ বিরতির পর অভিনয়ে ফেরার পর ১০ ডিসেম্বর প্রিয়.কমেরসঙ্গে আলাপকালে কথাগুলো বলছিলেন মডেল ও অভিনেত্রী অমৃতা খান। তাঁর কাছে প্রশ্ন ছিলো, শুরুটাযেভাবে আলোচনার মধ্য দিয়ে হয়েছিলো, ক্যারিয়ারের মাঝখানে পথ হারিয়ে ফেলেছিলেন কি না?
দিকে তাঁর ক্যারিয়ারের বিরতিতে চলচ্চিত্র সমালোচকদের সমালোচনাও বেশ সহ্য করতে হয়েছে। এরমধ্যে অনেকে আবার তাঁকে নিয়ে টিপ্পনীও কেটেছেন। এবার বুঝি অনেকের ভীড়ে হারিয়ে যাচ্ছেন নবাগত নায়িকা অমৃতা? এসব বিষয় নিয়েও বেশ মানসিক যন্ত্রনা ভোগ করতে হয়েছিলো তাঁকে। আর ফেরার পর এসব বিষয় নিয়ে বেশ সচেতন তিনি। শুনুন অমৃতার মুখ থেকেই, ‘বর্তমানে যে ছবিগুলোতে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হচ্ছি তা বেশ ভেবে চিন্তে। আমি আগে যে ভুলগুলো করেছি তা এখন আর করতে চাই না। আর এ কারণেই অনেক চলচ্চিত্র সমালোচকরা প্রশ্ন তুলেছিলো এ মেয়েটি চলচ্চিত্রে টিকে থাকতে পারবে কিনা? এছাড়া আমার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকটায় অনেকে বলেছিলেন তুমি যেভাবে কাজ করছো সেটা রং ওয়ে। সেসময় আমি আমার ভুল বুঝতে পারিনি। এখন আমি একমত। সেসময় তারা ঠিকই বলেছে। এখন যে ছবি গুলোতে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হচ্ছি সেগুলো বেশ ভেবে চিন্তে। আমি ভুলগুলো শুধরে নিয়ে আবারও নতুন করে আসছি।’ দীর্ঘদিন পর ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে মনে হয় খেই হারিয়ে ফেলেছিলেন। নিজেকে নতুন একজন নায়িকা হিসেবে ভেবেছেন। একটা ভয়ও কাজ করেছিলো অমৃতার মধ্যে। কি করতে গিয়ে কি যেন হয়ে যায়। অভিনয়তো একটি চর্চার জায়গা। দিনে দিনে নিজেকে শানিয়ে নেওয়া যায়। আর সে জায়গাটায় পড়েছিলো ভাটা- অমৃতা বলেন, ‘এতদিন পর কাজ শুরু করার পরে আসলে নিজের অভিনয়ের জায়গাটা কিছুটা ভাঙা গড়ার মধ্যে রয়েছে। এখন সে জায়গাটা থেকে নিজেকে টার্নওভার করার চেষ্টা করছি। দীর্ঘ সময় পর ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর পর নিজের মধ্যে একটি সংকোচবোধ কাজ করছে। এছাড়া ‘টার্গেট’ ছবির শুটিং যখন শুরু করেছিলাম তখন নিজের মধ্যে একটা অনুভূতি কাজ করছিলো- মনে হলো নতুন করে আবার ক্যারিয়ার শুরু করেছি।’
‘এত বড় একটা বিরতির পর বেশ চিন্তায় ছিলাম এখনতো অনেক নতুন মেয়ে চলচ্চিত্রে অভিনয়ে চলে এসেছে। তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করা, কতটা সহজ হবে। আমি যখন শুরু করেছিলাম তখন এত নতুন মুখ ছিলো না। আমার যে তেমন দর্শক আছে তা না, আবার যে নেই তাও না। মাঝামাঝি পর্যায়ে। তবে আমি চেষ্টা করি ছবিতে অভিনয়ের জায়গা থেকে নতুন কিছু করার জন্যে।’ আর নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে অমৃতা খান এভাবেই মূল্যায়ন করছিলেন।
আর বিরতি দিয়ে ফেরার পর চলচ্চিত্র নিয়ে রয়েছে তাঁর নতুন পরিকল্পনা, জানালেন, ‘আমাদের বাংলা ছবির এখনকার বেশির ভাগ পরিচালকরা গদবাঁধা চিত্রনাট্য নিয়ে ছবি নির্মাণ করেছেন। যার কারণে চেষ্টা থাকলেও নিজেকে নতুনভাবে তুলে ধরা সম্ভব হয়না। দীর্ঘ বিরতির পরছি নিশ্চয়ই নতুন পরিকল্পনা রয়েছে। এরমধ্যে কয়েকটি ছবিতে অভিনয়ের ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে। তবে সেগুলো চূড়ান্ত না হওয়া পয়ন্ত কিছু বলতে পারব না। এখন মানসম্পন্ন কিছু ছবিতে অভিনয় করতে চাই।’ অমৃতা এখন পর্যন্ত যেসব ছবিতেঅভিনয় করেছেন- ‘গেইম’, অন্তরে অন্তরে, সাইফ চন্দনের টার্গেট, ইস্পাহানী আরিফ জাহানের ‘গুন্ডা দ্য টেররিস্ট’, রাজু আহমেদের অসম প্রেম, ওয়াজেদ আলি সুমনের পাগলা দিওয়ানা।