দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা খালেদা জিয়া। গতরাতে গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়। রাত ৯টা ২০ মিনিটে শুরু হওয়া বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট আহমদ আজম খান, মে. জে. (অব.) মাহমুদুল হাসান, মীর মো. নাছির উদ্দিন, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীরউত্তম, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, হারুন আল রশিদ, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন, ব্যারিস্টার হায়দার আলী, মে. জে. (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, আবদুল মান্নান, যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান, মিজানুর রহমান মিনু, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান, ফজলুল হক মিলন, গোলাম আকবর খন্দকার ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন আসলাম চৌধুরী অংশ নেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। বৈঠকের আগে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আসন্ন পৌর নির্বাচনই বৈঠকের প্রধান এজেন্ডা। এছাড়া দলের সাংগঠনিক পুনর্গঠন ইস্যুতেও আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। সূত্র জানায়, বিএনপি প্রথমে দলীয় সরকারের অধীনে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচনের বিরোধিতা করলেও দলের তৃণমূল নেতৃত্বের চাপে শেষে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুযায়ী ইতিমধ্যে দলীয় প্রার্থীও মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। কিন্তু পৌর নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই পরিস্থিতি প্রতিকূল হয়ে উঠছে বিএনপির সামনে। প্রতিদিন সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের হুমকি ধমকিতে প্রচারণা চালাতে সাহস পাচ্ছেন না প্রার্থী, সমর্থক ও নেতাকর্মীরা। অনেক প্রার্থী এলাকাছাড়া। এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, শেষ পর্যন্ত পৌর নির্বাচন থেকেও বিএনপি সরে দাঁড়াবে কিনা এমন গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বিএনপি নেতারা অভিযোগ করে বলেন, প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতে চায় বিএনপি।
প্রতিকূলতার কথা উল্লেখ করে গতকাল এক আলোচনা সভায় দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ ছাড়া বিএনপির সামনে কোনো বিকল্প নেই। সবকিছু বুঝে-শুনেই নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। সূত্র জানায়, আসন্ন পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে করণীয় নির্ধারণে সিনিয়র নেতাদের মতামত জানবেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এদিকে পৌর নির্বাচনে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও প্রত্যয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করে ৮টি বিভাগীয় কমিটি গঠন করেছেন। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আসন্ন পৌর নির্বাচনে দল মনোনীত প্রার্থীদের নির্বাচন পরিচালনা ও পর্যবেক্ষণের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে একটি ও প্রতিটি বিভাগে একটি করে মনিটরিং সেল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নীতিনির্ধারণী ফোরাম। বৈঠক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৩ই ডিসেম্বরের পর নির্বাচনের মাঠে পুরোদমে সক্রিয় থাকার ব্যাপারে দলটির সিনিয়র নেতাদের প্রয়োজনীয় দায়িত্বসহ নির্দেশনা দেবেন খালেদা জিয়া। সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র জানায়, বৈঠকে আসন্ন পৌর নির্বাচনের পর দলের সাংগঠনিক পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।