টানা তিনমাসের জন্য কলকাতায় শুটিং করতে এসেছেন বলিউডের বাদশা অমিতাভ বচ্চন। জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে পরিচালক ঋভু দাশগুপ্তের ’তিন’ ছবির শুটিং। তবে এই শুটিংয়ের ফাঁকেই ফারহান আখতারের সঙ্গে তার পরবর্তী ছবি ’ওয়াজির’-এর সাংবাদিক বৈঠকে বসে কলকাতার স্মৃতিপথ ধরেই হাঁটাচলা করলেন বেশি। আচমকাই জানিয়েছেন, এখনও মাঝে মধ্যে মাঝরাতে হাঁটতে বেরিয়ে পড়েন কলকাতা দেখতে। কলকাতায় এলেই অমিতাভ নষ্টালজিক হয়ে পড়েন। এই কলকাতা শহরেই তার চাকুরি জীবনের শুরু । ছিলেনও বেশ কয়েকটি বছর। চুটিয়ে নাটক করেছেন কলকাতাতেই। এদিন অমিতাভ জানিয়েছেন. সেই ষটের দশকে কলকাতায় থাকাকালীন ট্রামে চড়ে ঘুরে বেড়াতাম। ৪৫০ রুপি মাইনে ছিল। তার মধ্যে ৩৫০ রুপিই চলে যেত বেড অ্যান্ড ব্রেকফাস্টে। লাঞ্চ কোনক্রমে সারতাম ট্রাম কোম্পানির ক্যান্টিনে। বাকিটা হাতখরচা। তিনি জানিয়েছেন, এখনও যখন ’তিন’ ছবির শুটিং করছি তখনও মাঝে মাঝে মাঝরাতে বেরিয়ে পড়ি কলকাতার রাস্তায়। কাউকে কিছু না বলেই। কিন্তু কোথায় যান তিনি? জানিয়েছেন, আগে যেখানে যেখানে থাকতাম, কাজ করতাম, সেই জায়গাগুলোয় যাই। টালিগঞ্জেও যাই। ওখানে আমার বাবার বন্ধুরা থাকতেন। তবে কথন যাই বা কেন যাই সেটা বলব না। ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে প্রথম কলকাতায় আসা নিয়ে অমিতাভ জানিয়েছেন, হাওড়া স্টেশনে নেমে দুটি জিনিষ দেখে চোখ ছানাবড়া হয়ে গিয়েছিল। এক স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের উপর গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে। এমন দৃশ্য তো আগে দেখিনি। আর দ্বিতীয়টি হল ইস্টবেঙ্গল আর মোহনবাগানের খেলার পাগলামো। কলকাতা নিয়ে অমিতাভ এতটাই নস্টালজিক যে তিনি নিজেই জানিয়েছেন, ১৯৬২ সালে আমার প্রথম চাকরি কলকাতায়। পার্ক স্ট্রিট তো কিছুই পাল্টায়নি। এখনও মন খারাপ হলেই এখানে চলে আসি। বলিউডের সবাইকে আমি বলি মন ভাল করতে হলে কলকাতায় চলে যাও। পুত্র অভিষেককেও এই একই পরামর্শ দেন তিনি মাঝে মধ্যেই। কলকাতায় ’তিন’ ছবিতে তিনি যে শুধু মোটর সাইকেল চালিয়েছেন তাই নয়, কলকাতার নতুন বাহন টোটোও চালিয়েছেন বলে নিজেই জানিয়েছেন। নিজের ব্লগেও সেই ছবি দিয়েছেন। ৭৩-এ পৌঁছেও তার একটাই স্বপ্নœ, শেষ দিন পর্যন্ত যেন কাজ পান। তিনি জানিয়েছেন, ৪৫ বছর ধরে যে বলিউড আমাকে সহ্য করছে এর জন্য ধন্যবাদ। তবে সম্প্রতি যে অসহিষ্ণুতা ইস্যু নিয়ে তোলপাড় চলছে সে বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ অমিতাভ। বরং খাওয়া-দাওয়া নিয়ে তার ভারী উৎসাহ। কলকাতায় এসে মিষ্টি দইতে ডুবিয়ে রসগোল্লা খাওয়া নাকি তার সেরা পাসটাইম। এ দিনের আড্ডায় মূল টার্গেট ‘ওয়াজির’ হলেও ধরা দিলেন এক খোলামেলা অমিতাভ। নাতনিকে মিস করলে যিনি শুটিংয়ের ফাঁকে স্কাইপে কথা সেরে নেন। আবার প্রত্যেক দিন শুটিংয়ে জুনিয়রদের থেকে শিখতে চান প্রাণভরে। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকের ফাঁকেই জানিয়েছেন, সুজিত সরকারের সঙ্গে তার প্রথম কাজ ’শু-বাইট’ ছবিতে। তবে ছবিটি মুক্তি পায়নি। তারপর ‘পিকু’। এখন সুজিত সরকারের প্রযোজনায় ’তিন’ ছবি বরছেন। আগামী ফেব্রুয়ারিতেই সুজিতের প্রযোজনা ও অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীর পরিচালনায় একটি ছবি করতে চলেছেন।