ভারতে বাংলাদেশী নারীদের অবৈধভাবে গ্রেপ্তার, আটক রাখা ও বিচার বিভাগীয় রিমান্ডে নেয়ার বিষয়ে ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন অব ইন্ডিয়া) এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনকে চিঠি লিখেছেন বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম)-এর সেক্রেটারি কিরিটি রয়। গত ৮ই জানুয়ারি তিনি ওই চিঠি লিখেন। তাতে বলা হয়, এর আগেও কিরিটি রয় এ নিয়ে তিনবার অভিযোগ দায়ের করেছেন এই কমিশনের কাছে। এক্ষেত্রে প্রক্রিয়াগত ত্রুটি অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ, বিএসএফ ও সংশ্লিষ্টরা কোনো বৈধতার তোয়াক্কা করছে না। এক্ষেত্রে তিনি ২০১২ সালের ১লা মে ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গৃহীত একটি মেমোরেন্ডাম তুলে ধরেন। তাবে বলা হয়েছে, যদি বৈধ পাসপোর্ট বা ভিসা ছাড়া কোন বিদেশীকে পাওয়া যায়, যিনি মানব পাচারের শিকার এবং এক্ষেত্রে তদন্তে যদি দেখা যায় ওই নারী বা শিশু পরিস্থিতির শিকার তাহলে ফরেন অ্যাক্টের অধীনে তাকে বিচার করা উচিত হবে না। যদি দেখা যায় সে নিজের খেয়ালখুশি মতো বা স্বেচ্ছায় ভারতে যাননি তাহলে রাজ্য সরকার বা প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোন চার্জশিট দাখিল করবে না। যদি এক্ষেত্রে ফরেন অ্যাক্টের অধীনে চার্জশিট দেয়া হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে বিদ্যমান আইনেই সেই মামলা প্রত্যাকার করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। অবিলম্বে এ বিষয়টি পাতিয়ালা হাউজে পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে জানাতে হবে, যাতে ওই ব্যক্তিকে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে তার স্বদেশে ফেরত পাঠানো যায়। ওই চিঠিতে কিরিটি রয় বেশ কিছু ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন, গত বছর ৩০শে সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় হাকিমপুর সীমান্তে বিএসএফ ১৩ বাংলাদেশীকে ধরে ফেলে। এর মধ্যে ৯ জন পূর্ণবয়স্ক। ৪টি শিশু। এ সময় তাদের কাছে বৈধ কোন কাগজপত্র ছিল না এবং তারা ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন।
তাদেরকে আটক করে হস্তান্তর করা হয় উত্তর ২৪ পরগণা জেলার স্বরূপনগর পুলিশ স্টেশনে। ১লা অক্টোবর আটক ব্যক্তিদের তোলা হয় বশিরহাটের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট নারীদের তাদের শিশুসন্তানসহ দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে আটক রাখার নির্দেশ দেন। পুরুষদের আটক রাখা হয় বশিরহাট সাব-ডিভিশনাল সংশোধনাগারে। এরপর তাদেরকে ফের ১৮ই নভেম্বর আদালতে তোলা হয়। এ সময় ফারুক ও সায়াদ নামে দু’জনকে জামিন দেয়া হয়। বাকিরা ৬২ দিন ধরে জেলে রয়েছেন।