এশিয়া কাপে দ্বিতীয়বার ফাইনালে খেলার সুযোগ আছে বাংলাদেশের! গোটা দেশে এখন সেই জল্পনা-কল্পনা। তার জন্য হারাতে হবে পাকিস্তানকে। বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও সেই সুযোগ দেখেন। তবে এজন্য নিজেদের ভুলগুলো শুধরে আরও ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। তাহলেই ফাইনালে খেলা সম্ভব বলে মনে করেন অধিনায়ক। গতকাল ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বলেন, ‘আমাদের সামনে আসলেই ফাইনাল খেলার খুব ভালো সুযোগ আছে। সর্বশেষ দুটি ম্যাচ যেভাবে খেলেছি, সেভাবে খেলতে পারলে অবশ্যই সুযোগ কাজে লাগানো যাবে। কিছু ভুলও অবশ্য ছিল। কিন্তু আমরা প্রয়োজনের সময় দরকারি কাজ করতে পেরেছি বলেই ম্যাচ দুটি জিততে পেরেছি।’
তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ৮ ম্যাচে প্রথম জয় এসেছিল ২০১৫ সালে। সেই ম্যাচে অভিষেকেই চমক দেখিয়েছিল তরুণ পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। এরপর তিনি এখনই বাংলাদেশের অন্যতম শক্তি। তবে ইনজুরির কারণে তাকে নিয়ে কোন ঝুঁকি নেয়া হচ্ছে না। কারণ সামনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেখানেই তার প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। অবশ্য মুস্তাফিজ না থাকলেও দলের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ডাকা হয়েছেন তামিম ইকবালকে। অধিনায়ক এই দুই ক্রিকেটার আসা যাওয়া নিয়ে দলে কতটা প্রভাব পড়তে পারে সেটি বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, তামিমের না থাকা সব সময় আমাদের জন্য কিছুটা অস্বস্তিকর ব্যাপার। সব ফরম্যাটে সে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান। তামিম অনেক দিন ধরে খেলছে, সে অনেক অভিজ্ঞ। মুস্তাফিজের না থাকা আমাদের জন্য বড় ক্ষতি। ও যেটা দলের জন্য দেয়, সেটা সব সময়ই দলের জন্য অসধারণ কিছু। এটা প্রমাণিত বিষয়।’
মুস্তাফিজ না থাকাতে টিম কম্বিনেশনেও আসছে পরিবর্তন। তাহলে পাকিস্তানের বিপক্ষে হয়তো চার পেসার নিয়ে খেলা হচ্ছে না টাইগারদের। দলের পরিবর্তন নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘কম্বিনেশনে তো পরিবর্তন হয়েই গেছে। যেহেতু মুস্তাফিজ খেলতে পারছে না। এটা আমাদের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ। ওর জায়গা নিয়ে খেলার মতো কোনো বোলার এখন বিশ্বেই নেই। তারপরও ওর জায়গায় যে আসবে তার জন্য কাজটা খুবই চ্যালেঞ্জিং হবে। আমরা ওর না থাকা নিয়ে এখন আর ভাবছি না। আমরা সামনের দিকে তাকাচ্ছি। যারা আছে, তাদের সেরাটা নিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা খেলবো।’ মুস্তাফিজ না থাকলে কে আসছে দলে আবু হায়দার রনি নাকি আরাফাত সানি? নাকি নাসির হোসেন সুযোগ পাচ্ছে দলে। এই সব উত্তর এড়িয়ে গেলেন মাশরাফি। তিনি বলেন,‘ আমাদের আসলে এসব নিয়ে আরও ভাবতে হবে। কম্বিনেশন, প্রতিপক্ষ- এ সব চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মুস্তাফিজের বিষয়ে বলি, আমরা যদি মনে করি মুস্তাফিজের জায়গায় যে আসবে সে ওর মতোই পারফর্ম করবে, তাহলে এটা খুবই কঠিন ব্যাপার হবে।’
আরব আমিরাতের জয়, এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতে ফাইনালের স্বপ্ন পথ রচনা করে বাংলাদেশ। তাহলে কি টি-টোয়েন্টিতে জয়ের ধারাবাহিকতাই পাকিস্তানের বিপক্ষে অনুপ্রেরণা হতে যাচ্ছে? মাশরাফিও মনে করেন সব জয়ই আসলে অনুপ্রেরণা। তিনি বলেন, ‘জয়-পরাজয় দিয়েই হয়তো সব সময় অনেক কিছু বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়। সবাই জয়ের জন্যই খেলে। জিততে পারলে আত্মবিশ্বাসও বাড়ে- এটাই স্বাভাবিক। একটা দল যখন বাজে পরিস্থিতি থেকে নতুন একটা সাফল্যের পথে যায়, তখন কিন্তু একটু একটু করেই উন্নতির দিকে তাকাতে হয়। রাতারাতি কিছু হয় না।’ গেল বছর পাকিস্তানের বিপক্ষে এসেছে টি-টোয়েন্টি প্রথম জয়। সেই জয় আজ কতটা সাহায্য করবে বাংলাদেশকে? মাশরাফি মনে করেন। খুব একটা নয়। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না কোনো হেল্প করবে। একজন অধিনায়ক হিসেবে তো বটেই, খেলোয়াড় হিসেবেও আমার একই কথা মনে হয়। কারণ নতুন দিন নতুন খেলা নতুন টুর্নামেন্ট। এই ধরনের টুর্নামেন্টে চাপও বেশি থাকে। আমরা আগে কী হয়েছে তা না ভেবে, কাল আমরা কতোটা ভালো করে শুরুটা করতে পারি, তা নিয়ে ভাবছি।’