কমিশন বলছে, কাজে গতি আনতে এ ব্যবস্থা। তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছেন, শোকজের কারণে দুদকে এক ধরনের ভীতি ও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
জানতে চাইলে দুদকসচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল আজ রোববার স্বদেশ নিউজ কে বলেন, কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাগিদাপত্র দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এই শোকজের উদ্দেশ্য ভীতির সঞ্চার করা নয়, কাজে গতি আনা।
গত ১৪ মার্চ দায়িত্ব নেওয়ার পর দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ দুদকের বিভিন্ন কার্যালয় পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালেই বিভিন্ন অভিযোগে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শোকজ করার নির্দেশ দেন সচিবকে। প্রথম তিন দিনে ১০ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে সচিব ও বিভিন্ন বিভাগের মহাপরিচালকেরা নিজস্ব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন অভিযোগে চিঠি দেন।
সূত্র জানায়, বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার ১৫ কার্যদিবসে অন্তত ৪৭৬টি শোকজ করা হয়েছে। দুদকের অনিষ্পন্ন শাখা, অনু-তদন্ত-১, অনু-তদন্ত-২, বিশেষ অনু-তদন্ত-১, বিশেষ অনু-তদন্ত-২ শাখা, প্রশাসন ও অর্থ, প্রতিরোধ ও গবেষণা, আইন ও বিচারসহ বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা–কর্মচারীরা এ তালিকায় রয়েছেন। এর মধ্যে অনেকে একাধিক নোটিশও পেয়েছেন।
সূত্র জানায়, দায়িত্বে অবহেলা, ঠিক সময়ে অফিসে হাজির না হওয়া, যথাসময়ে সভায় হাজির না হওয়া, টেবিলে ফাইল ফেলে রাখা, দরজা খুলে কোথাও চলে যাওয়া ইত্যাদি কারণে শোকজ করেন চেয়ারম্যান। এ ছাড়াও নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন দাখিল না করা, যথাযথ তথ্যসহ সংশোধিত প্রতিবেদন দাখিল না করা, ফাইল আটকে রাখা, অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হয়রানি করা ইত্যাদি কারণেও শোকজ করা হয়েছে। দুদকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা মনে করছেন, এসব শোকজের পর দুদকে দৃশ্যমান কিছু পরিবর্তন এসেছে। কাজের গতি যেমন বেড়েছে, তেমনি কর্মকর্তাদের আয়েশি ভাব কমেছে। কাজের মাধ্যমে যোগ্যতা প্রমাণের প্রতিযোগিতাও তৈরি হয়েছে। তবে এর বিপক্ষেও বলেছেন কোনো কোনো কর্মকর্তা। তাঁদের মতে, শোকজের ফলে আপাতত কাজের গতি বাড়ছে মনে হলেও মূল কাজ অনুসন্ধান-তদন্তের গতি কমেছে।