এই প্রথমবারের মতো কোনো পাকিস্তানি কূটনীতিককে মোস্ট ওয়ান্টেড এর তালিকাভুক্ত করেছে ভারত। শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর পাক দূতাবাসে নিযুক্ত ওই দূতের নাম আমির জুবায়েল সিদ্দিকি। এ ছাড়া আরো দুই পাকিস্তানি গোয়েন্দা অফিসারকেও মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকাভুক্ত এবং তাদের খোঁজ চেয়ে ইন্টারপোলের সাহায্য চাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ। সেইসঙ্গে আরো এক পাক কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে ২০১৪ সালে মার্কিন ও ইসরাইলি কনস্যুলেট এবং সেনা ও নৌ স্থাপনায় মুম্বাই হামলার আদলে হামলার পরিকল্পনা করেন বলে দাবি করেছে এনআইএ।
ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার সোমবারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলম্বোয় পাকিস্তানি হাইকমিশনে ভিসা কাউন্সিলর হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন আমির জুবায়ের। এ ছাড়া একই হাইকমিশনে নিযুক্ত দুই পাকিস্তানি গোয়েন্দা কর্মকর্তা এবং আরো এক অফিসার ওই পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই দুই গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করতে ইন্টারপোলের কাছে অনুরোধ করারও প্রস্তুতি নিচ্ছে এনআইএ।
ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসে সিদ্দিকির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। তবে যে দুই অফিসারকে মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কখন অভিযোগ আনা হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এনআইএ’র ওই কর্মকর্তা জানান, এই প্রথম পাকিস্তানি কোনো দূতাবাস কর্মকর্তাকে মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকাভুক্ত অথবা রেড কর্নার নোটিসের অনুরোধ করা হচ্ছে।
ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য মতে, পাকিস্তানের ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তারা, যারা ২০০৯ সাল থেকে ২০১৬ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন, তাদের এজেন্টের মাধ্যমে চেন্নাই ও দক্ষিণ ভারতের অন্যান্য স্থানে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন।
অভিযোগ আনা হয়েছে, আমির জুবায়ের সিদ্দিকি শ্রীলঙ্কান নাগরিক মুহাম্মাদ সাকির হোসেন, অরুন সেলাভারাজ, সিভাবালান ও থামীম আনসারিকে ভাড়া করেন। যাদের প্রত্যেককে পরে নিরাপত্তা বাহিনী আটক করেছে।
এনআইএ দাবি করেছে, উল্লিখিতদের নিয়োগ দেওয়ার পর সিদ্দিকি এবং ওই পাক কর্মকর্তারা প্রতিরক্ষা ও পারমাণবিক স্থাপনা, সেনা সদস্যদের চলাফেরা এবং এসব বিষয়ে ছবি সংগ্রহের জন্য তাদের নির্দেশ দেন। এ ছাড়া ভারতীয় সিনিয়র সেনা কর্মকর্তার ল্যাপটপ চুরি এবং ভারতীয় জাল মুদ্রা সরবরাহেরও নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে দাবি করেছে এনআইএ।
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাটির দাবি, নিয়োগকৃতরা চেন্নাইয়ে মার্কিন কনস্যুলেট, ব্যাঙ্গালুরুতে ইসরাইলি কনস্যুলেট, বিশাখাপত্তমে পূর্বাঞ্চলীয় নৌ কমান্ডের হেডকোয়ার্টার্স এবং অন্যান্য বন্দরে হামলার পরিকল্পনা করে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে তথ্য দিয়েছে, যা পাকিস্তানি অফিসারদের শনাক্ত করতে ভারতীয় কর্মকর্তাদের সহায়তা করেছে।