এত বড় ছাড়!

ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার কথা মজার ছলে জানিয়েছেন সারি। ছবি: রয়টার্সমার্ক টোয়েন নাকি একবার বলেছিলেন, ‘সিগারেট ছাড়া খুব সোজা। আমি এই জীবনে অন্তত হাজারবার সিগারেট ছেড়েছি।’ ধোঁয়া টানার বদখত এই অভ্যাসে একবার অভ্যস্ত হয়ে গেলে সর্বনাশ। ছাড়া কঠিন, অথচ যে ধূমপান করে, সেও জানে ক্যানসারের ঝুঁকি আছে এতে। জেনেশুনে বিষ করেছি পান! তবু বললেই কি আর ছাড়া যায়! এই কঠিন কাজটাই এবার করতে চলেছেন মারিসিও সারি।

মাঠে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন খেলোয়াড়েরা। একপাশে ডাগ আউটের একরাশ চিন্তায় ডুবে আছেন একজন। মাঝেমধ্যেই দমকা ধোঁয়া মুখটা আড়ালে ঢেকে দিচ্ছে। সিরি ‘আ’তে নাপোলির ম্যাচে এমন দৃশ্য গত কয়েক বছরে বেশ পরিচিত ছিল। মারিসিও সারি যে ধূমপান না করে থাকতেই পারেন না। আর ম্যাচের টেনশন হলে তো কথাই নেই। ডাগ আউটে সারির ধূমপানের দৃশ্য তত নিয়মিত হতো। সেই ব্যক্তি এখন ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার কথা বলছেন!

নাপোলি ছেড়ে এ মৌসুমেই চেলসির দায়িত্ব নিয়েছেন সারি। চুক্তিপত্রে হয়তো এমন শর্ত জুড়ে দিয়েছিলেন, বেতন কয়েক পাউন্ড কম দিয়ো বাপু, তবু আমার নেশার একটা বন্দোবস্ত রেখো! চেলসি আলাদা একটি কক্ষই বানিয়েছে তাঁর ধূমপানের জন্য। কিন্তু মাঠে তো আর ভ্রাম্যমাণ ধূমপান কক্ষ নিয়ে ঘোরার উপায় নেই। নিকোটিনের অভাব কাটানোতে ম্যাচের সময় সারি নাকি সিগারেটের ফিল্টার কিংবা প্লাস্টিক মুখে দিয়ে রাখেন!

ট্যাকটিকসের জন্য পেপ গার্দিওলার সমীহ আদায় করা এই কোচ তাই বিপাকে পড়েছেন। যুক্তরাজ্যের আইনানুযায়ী জনসমাগমে ধূমপান নিষিদ্ধ। ফুটবল স্টেডিয়ামও সিগারেট ফোঁকা যাবে না। ফলে ম্যাচের দিন ডাগ আউটে দেড় ঘণ্টা সময় সারি ধূমপান করতে পারছেন না। দিনে ৮০টি সিগারেটের শলাকা শেষ করা এক ব্যক্তির জন্য কাজটা বেশ কঠিন!

গত শনিবারই প্রথম পরীক্ষা দিতে হলো সারিকে। ৩-২ গোলে আর্সেনালকে হারানো সে ম্যাচে চেলসিকে একপর্যায়ে চেপে ধরেছিল এমেরির দল। শেষ দিকে বেশ দুশ্চিন্তা নিয়েই ডাগ আউটে হাঁটাহাঁটি করতে হয়েছে। ম্যাচ শেষে তাই সাংবাদিকেরাও মজা করেছেন তাঁর সঙ্গে। জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, দ্বিতীয়ার্ধের শেষে যখন চেলসি ভালো করছিল না, তখন সিগারেট খেতে ইচ্ছা হয়েছিল কি না। উত্তরে সারি একটু চমকেই দিয়েছেন, ‘না, আমার বিরতি দরকার ছিল, প্রথমার্ধ শেষ হওয়া দরকার ছিল, সিগারেট না। আমি হয়তো এক বা দুই বছরের জন্য বন্ধও করে দিতে পারি (ধূমপান), তারপর আবার শুরু করব।’

নিকোটিনের নেশায় ফিল্টার চিবোচ্ছেন সারি। ছবি: টুইটারনিকোটিনের নেশায় ফিল্টার চিবোচ্ছেন সারি। ছবি: টুইটারচেলসির জন্য সারির এমন আত্মত্যাগে বিস্মিত হয়ে পড়েন সাংবাদিকেরা। তবে সারি কি আসলেই ছেড়ে দেবেন, নাকি মজা করে বলেছেন? সেটা তাঁর মুখের হাসি দেখে টের পাওয়ার উপায় ছিল না। দায়িত্ব নেওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে দলে অনেক পরিবর্তন এনেছেন। চেলসির খেলার ধরনেও এসেছে অনেক বড় পরিবর্তন। তবে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হবে যদি সিগারেটটা পুরো ছেড়ে দিতে পারেন।

সারির কাছ থেকে বাকিরাও অনুপ্রেরণা নিতে পারবে তখন। সারির মতো সারি সারি সিগারেট ফোঁকা মানুষটি যদি ছেড়ে দিতে পারেন, আমি কেন নয়!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *