রাজশাহীর আদালত চত্ত্বরে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার নাশকতার একটি মামলার হাজিরা দিয়ে বেরিয়ে আসার সময় মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সামনে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন, রাজশাহী সিটি কলেজ শাখা ছাত্রদলের (স্থগিত কমিটির আগের কমিটির) সভাপতি ও মহানগর শাখার যুগ্ম সম্পাদক আকবর আলী জ্যাকি, বোয়ালিয়া থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আলিফ আল মাহমুদ লুকেন, মতিহার থানা ছাত্রদলের সভাপতিপ্রার্থী ও মহানগর শাখার সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম কনক, সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম তন্ময়। অন্যজনের নাম জানা যায়নি। এদের মধ্যে জ্যাকি ও লুকেনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের জেরে মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আসাদ্জ্জুামান জনির বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বিপক্ষ গ্রুপের নেতা-কর্মীরা।
আজ বিকাল সোয়া ৩টার দিকে সভাপতির বাসায় এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে নিবশ্চিত করেছেন তিনি নিজেই।
সভাপতি আসাদুজ্জামান জনি জানান, বিকালে নগরীর রামচন্দ্রপুর বাশার রোডের নিজ বাসায় তিনি অবস্থান করছিলেন। এসময় মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী জ্যাকির নেতৃত্বে এ হামলায় সিনিয়র সহ-সভাপতি মুর্তুজা ফামিন, সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাকসুদুর রহমান সৌরভ ও সদস্য কনকসহ ১৫/১৬ জন মোটরসাইকেলযোগে গিয়ে এ হামলা চালায়। তারা প্রথমে তার বাসায় প্রবেশের চেষ্টা করে। বাসায় প্রবেশ করতে না পেরে তারা বাহির থেকে ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। এতে তার বাসার জানালাসহ বেশ কিছু কাঁচ ভেঙ্গে যায়। এ সময় তারা অকথ্যভাষায় গালাগালিজ করেন বলেও অভিযোগ জনির।
মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুর্তুজা ফাহিম জানান, মহানগর বিএনপির সভাপতি, সাবেক সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলনসহ নেতা-কর্মীরা একটি মামলায় আদলতে হাজিরা দিতে যান। মামলার হাজিরা দিয়ে আদালত থেকে বেরিয়ে আসার সময় শহীদ মিনারের সামনে মহানগর সভাপতি আসাদুজ্জামান জনি ও সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবিনের সমর্থকরা আমাদের গ্রুপের নেতা-কর্মীদের উপর হাতুড়ি, লোহার রড ও লাঠি-সোটা দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এতে আমাদের অন্তত পাঁচ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে জ্যাকি ও লুকেনকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভর্তি করা হয়। উভয়ের মাথা ফেটে যাওয়ায় বেশ কয়েকটি সেলাই দেয়া হয়েছে। বর্তমানে তারা চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন।
সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান জনি বলেন, মারামারি কিংবা সংঘর্ষের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। ভুল বোঝাবুঝির কারণে শুধু হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কেউ আহতও হয়নি বলে দাবি করেন ছাত্রদলের এই নেতা।
মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন বলেন, তেমন কিছু ঘটেনি। নিজেদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে বসে মিমাংসার চেষ্টা চলছে।
রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান হাফিজ বলেন, ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।