আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে চট্টগ্রামে পৌঁছেছে বাংলাদেশ দল। গতকাল বিকালে আফগান মিশনে ঢাকা ছাড়ে সাকিব আল হাসানের দল। ৫ই সেপ্টেম্বর একমাত্র টেস্ট ম্যাচটি মাঠে গড়াবে চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। আফগানদের বিপক্ষে টেস্ট দলে ফিরেছেন তাসকিন আহমেদ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। এই দল থেকে বাদ পড়েছেন দেশসেরা পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। গতকাল সতীর্থরা যখন ঢাকা ছাড়ায় ব্যস্ত তখন তিনি মিরপুর শেরে বাংলা মাঠে জিম করছিলেন। বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা ছাড়ে জাতীয় দল। যাওয়ার আগে সংবাদ মাধ্যমকে তাসকিন জানান সুযোগের অপেক্ষায় আছেন তিনি।
দুই বছর আগে দেশের হয়ে শেষ টেস্ট খেলেছেন তিনি। তাই রশীদ খানের দলের বিপক্ষে মাঠে নামতে মুখিয়ে আছেন এই পেসার। একাদশে জায়গা হলে এবারই প্রথম দেশের মাটিতে টেস্ট খেলার সুযোগ পাবেন তাসকিন। তিনি বলেন, ‘সুযোগ পেলে নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করবো। আমি খুবই এক্সাইটেড যেভাবে দলে সুযোগ এল। সবাই দোয়া করবেন যেন সুস্থ থাকি। সুযোগ পেলে তাহলে ভালো কিছু করতে পারব।’
২০১৭তে দক্ষিণ আফ্রিকাতে শেষ টেস্ট খেলেছেন তাসকিন আহমেদ। এখন পর্যন্ত ৫ টেস্টে সুযোগ পাওয়া এই পেসার নিজেকে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। নিয়েছেন মাত্র ৭ উইকেট। এরপর ইনজুরি, ফর্ম ও নানা কারণে দল থেকে ছিটকে পড়েন তিনি। তবে এবার জাতীয় দলে ফিরে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন ভালো কিছুর। তার গতির কারণেই মূলত দলে বিবেচনা করা হয়েছে তাসকিনকে। সেরা পেসার মোস্তাফিজের রহমানের বিকল্প হিসেবে। এখন দেখার বিষয় টেস্টে নবাগত দল আফগানদের বিপক্ষে সুযোগ পেলে কতটা নিজেকে মেলে ধরতে পারেন তাসকিন। ইনজুরি থেকে ফিরে জাতীয় দলের ক্যাম্পে টানা অনুশীলন করেছেন। প্রস্তুতি ম্যাচে নিয়েছেন ৪ উইকেট। এখন মূল ম্যাচের জন্য কতটা ফিট তা নিয়ে তাসকিন বলেন, ‘জ্বি, খুব ভালো আছি, আলহামদুলিল্লাহ।’
মূলত তাকে ওয়ানডে বোলার হিসেবে বিবেচনা করা হতো। ২০১৪তে তার ওয়ানডে অভিষেক হয়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত ৩২ ম্যাচে নিয়েছেন ৪৫ উইকেট। এরপর তার টেস্ট খেলার স্বপ্ন পূরণ হয় ২০১৭তে নিউজিল্যান্ডে। সেই সফরে খেলেন দুটি ম্যাচ। ভারতের হায়দরাবাদে খেলেছেন এক ম্যাচ। সেই বছরই গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি ও দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে একটি টেস্ট খেলেন। এই ১০ ইনিংসে তার সেরা শিকার ভারতের বিপক্ষে ৪৩ রানে ২ উইকেট। এবার আফগানদের বিপক্ষে একাদশে থাকলে দেশের মাটিতে তার সুযোগ নিজেকে প্রমাণ করার।
রশিদদের হুমকি মনে করেন না মিরাজ
আঙুলে ইনজুরি থাকলেও আফগানদের বিপক্ষে টেস্ট দলে আছেন আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই তরুণ অফস্পিনার ফিট থাকলে অধিনায়ক সাকিবের স্পিন আক্রমণের সঙ্গী হিসেবে দেখা যাবে। যদিও সেই সম্ভাবনা অনেক কম। ঢাকা ছাড়ার আগে মিরাজ আশা প্রকাশ করেছেন সুযোগ পেলে দারুণ কিছু করার। তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করবো শতভাগ দেয়ার জন্য। যেহেতু দেশের মাটিতে খেলা অবশ্যই আমাদের সুবিধা থাকবে। সর্বোচ্চটা দিতে পারলে অবশ্যই আমরা ভালো কিছু করবো। নতুন কোচিং স্টাফের অধীনে আমরা শতভাগ প্রস্তুতি নিয়েছি। শেষ ১০-১২ দিন সবাই হার্ডওয়ার্ক করেছে। আমাদের বিশ্বাস আছে সবাই যে কষ্ট করেছে সেই ফল অবশ্যই পাবো।’ আফগানদের অধিনায়ক লেগ স্পিনার রশিদকে সবচেয়ে বড় হুমকি মনে করা হচ্ছে টাইগারদের জন্য। তবে টাইগার তরুণ স্পিনার মিরাজ তেমন কোন হুমকি দেখছে না। তিনি বলেন, ‘হুমকি! না সেরকম কেউ তো নেই।’ চট্টগ্রাম পৌঁছে তিন দিনের অনুশীলন শেষে ৫-৯ সেপ্টেম্বর জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের একমাত্র টেস্টে রশিদ খানদের মুখোমুখি হবে রাসেল ডোমিঙ্গর শিষ্যরা। অন্যদিকে গত শুক্রবার ঢাকায় পৌঁছানো আফগানিস্তান দলটি চট্টগ্রামে বিসিবি একাদশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলছে। তবে বাংলাদেশ জাতীয় দলের বিপক্ষে তাদের কোন প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার সুযোগ নেই এই সিরিজে। টেস্ট শেষ হলে জিম্বাবুয়ে ও আফগানদের নিয়ে একটি ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে টাইগাররা।
বাংলাদেশ দল
সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), লিটন কুমার দাস, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ মিথুন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, আবু জায়েদ রাহি, তাসকিন আহমেদ এবং এবাদত হোসেন।