ঢাকার জয়ার প্রশংসায় কলকাতার ঋত্বিক

‘জয়া খুব উঁচু দরের অভিনেত্রী। সেটা জানি বলেই বলছি, “বিনিসুতোয়” ওকে ভালো লাগবে।’ দুই বাংলার গুণী অভিনেত্রী জয়া আহসানকে নিয়ে এ মন্তব্য করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী। আজ কলকাতার একটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে জয়া–ঋত্বিকদের নতুন সিনেমা ‘বিনিসুতোয়’।

‘একটি দৃশ্যেই আপনাদের রসায়ন ফুটে উঠেছিল। দুজনই দক্ষ শিল্পী বলেই কি সেটা সম্ভব হয়েছিল? ‘বিনিসুতোয়’ সিনেমা নিয়ে এমন প্রশ্নে ঋত্বিক আনন্দবাজারকে বলেন, ‘অভিনেতা হিসেবে যখন কাজ করি, তখন তো আলাদা করে রসায়নের বিষয় মাথায় রাখি না। চিত্রনাট্য, মুহূর্ত—সব মিলিয়ে হয়তো পুরো বিষয়টা জমাট বাঁধে। শিল্পী ভালো হলে, তাঁরা হয়তো আরও পরত যোগ করেন দৃশ্যে। খুব খারাপ অভিনেতা হলে আমি বুঝতে পারি না, ভালো করছে নাকি খারাপ করছে (জোরে হাসি)। তবে জয়া খুব উঁচু দরের অভিনেত্রী।’

সহশিল্পীর এমন প্রশংসায় জয়া আহসান বলেন, ‘এটা আসলে খুবই ভালো লাগার বিষয়। ঋত্বিকদা আমার ভীষণ ভীষণ পছন্দের একজন অভিনেতা। তিনি একজন আনপ্রেডিক্টেবল অভিনয়শিল্পী। এই মুহূর্তে ভারতে অন্যান্য অভিনেতার মধ্যে তিনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন। তিনি আমার সম্পর্কে বলেছেন শুনে ভালো লেগেছে।’ তবে এই ভালো লাগার মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ করে ফেলতে চান না জয়া। নিজেকে এখনো অভিনয়ের একজন শিক্ষার্থী মনে করেন তিনি। অভিনয়টা আরও শিখতে চান। তিনি বলেন, ‘এই প্রশংসা ও ভালোবাসাটাকে আমি ব্যাচ হিসেবে বসিয়ে নিতে চাই না। এসব কমপ্লিমেন্ট, অ্যাওয়ার্ড, হাততালি, পিঠ চাপড়ানো—এগুলোতে আমি মগ্ন হতে চাই না। এগুলো একজন মগ্ন শিল্পীর ক্ষতি করে। ঋত্বিকদার কমপ্লিমেন্টে আমি ভীষণ খুশি হয়েছি। আমাকে অনুপ্রাণিত করে এমন একজন অভিনেতা তিনি। তাঁর সঙ্গে কাজ করা একটা ভালো অভিজ্ঞতা। তবে আমি এগুলোকে মাথায় রাখতে চাই না। আমি অভিনয়টুকু করে যেতে চাই। অভিনয়ে মগ্ন হতে চাই।’

‘ভালোবাসার শহর’-এ একটি দৃশ্য ছিল দুজনের। সেটাই পর্দায় তাঁদের প্রথম দ্বৈত উপস্থিতি। কিছু বিরতির পর পরিচালক অতনু ঘোষ তাঁদের এক করেন ‘বিনিসুতোয়’ সিনেমায়। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসা কুড়িয়েছে এটি। কয়েকটি দেশের চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে ছবিটি। অভিনয়ের প্রশংসা পেয়েছেন জয়া ও ঋত্বিক। আজ এই দক্ষ দুই অভিনয়শিল্পী জুটির সিনেমাটি কলকাতার একটি হলে মুক্তি পেয়েছে।

সিনেমাটি কেন একটি হলে মুক্তি পাচ্ছে? এ প্রসঙ্গে জয়া ফেসবুকে লিখেছেন, এত দিন বাদে আবার সিনেমা হল খুলছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে কজন হলে আসবেন? ঝুঁকি নিতে নারাজ প্রযোজক। আমাদের মনে হলো, যে কজন মানুষ বড় পর্দায় দেখতে চান, তাঁদের একটা সুযোগ তৈরি করে দিতেই হবে। সেই ভাবনা থেকে একান্ত নিজস্ব উদ্যোগে এই শুক্রবার ২০ আগস্ট থেকে নন্দন–১-এ বেলা তিনটায় প্রদর্শন শুরু হবে।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘এই অবধি পড়ে সরাসরি কমেন্ট বক্সে লিখে ফেলবেন না ‘একি অন্যায়! কেন একটিমাত্র হলো?’ দাঁড়ান। একটু ভেবে দেখুন। এক একটা হলে রিলিজ করতে বেশ কিছু টাকা লাগে। যদি দর্শক নন্দনে ছবি দেখতে যান, ছবিটা বড় পর্দায় থাকবে। হয়তো হলের সংখ্যা বাড়তেও পারে। না হলে কী হবে, আমরা সবাই জানি!

সিনেমাটি নিয়ে আনন্দবাজার লিখেছে, সমাজের ভিন্ন দুই অবস্থান থেকে উঠে আসা দুটি মানুষ আলগা সুতোর মতো জুড়ে যায় একে অন্যের সঙ্গে, অথচ জড়িয়ে যায় না। সমান্তরাল দুই জীবন ক্ষণকালের জন্য কোনো বিন্দুতে মিলিত হলে খুলে যায় অনেক সম্ভাবনা, সেখান থেকে তৈরি হতে পারে কত অজস্র গল্প। এই গল্পের ধারণাকে পুঁজি করেই অতনু ঘোষের ছবি এগিয়ে চলে। গল্পের প্রয়োজনীয়তা, গুরুত্ব, প্রকৃতি এমন অনেক ভাষ্য উঠে আসে টুকরা টুকরা দৃশ্য ও পরিপ্রেক্ষিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *