ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের জটে নাকাল রায়পুর পৌরবাসী। যত্রতত্র অঘোষিত স্ট্যান্ড বানিয়ে এসব যানে যাত্রী পরিবহন করায় মূল সড়কে লেগে থাকে তীব্র যানজট। শহরের অলিগলিতে এসব থ্রি-হুইলারের বেপরোয়া চলাচলে বাড়ছে দুর্ভোগ-দুর্ঘটনা।
এছাড়া চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় এসব যানে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে যাত্রীদের। চলতি মাস থেকে অবৈধ এসব বিপজ্জনক যানকে পৌর কতৃর্পক্ষ লাইসেন্স দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় এ নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের উপজেলা সড়কের সোনালি ব্যাংক এলাকা, থানার দুই পাশের সড়কে, গাজী মার্কেটের সামনের এলাকা, আলিয়া মাদ্রাসা সড়ক, মাছবাজার এলাকা, নতুন বাজার সড়কসহ অর্ধশতাধিক স্থানে যত্রতত্র এসব ইজিবাইক ও অটোরিকশার স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। পাশাপাশি এসব যানের বেশির ভাগই উচ্চমাত্রার শব্দের হর্ন ব্যবহার করায় বাড়ছে শব্দদূষণ।
পৌর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার রিয়াজ উদ্দিন মন্সী বলেন, অবৈধ ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত দুই আসনবিশিষ্ট এই অটোরিকশার বেপরোয়া গতির কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। এ ছাড়া এসব যানবাহনে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করায় মারাত্মক শব্দদূষণের শিকার হচ্ছে মানুষ। এসব যানের চালকদের প্রশিক্ষণ না থাকায় অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে।
পৌর কতৃর্পক্ষ সূত্রে জানা যায়, নতুন ইজিবাইকের লাইসেন্সের জন্য ৮ হাজার ৭৫০ টাকা এবং ব্যাটারিচালিত দুই আসনের রিকশার জন্য ৪ হাজার ৫০ টাকা ফি নেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রতি বছর দুই আসনের রিকশার লাইসেন্স নবায়নের জন্য ২ হাজার টাকা নেওয়া হয়। তবে ইজিবাইকের লাইসেন্স নবায়নের জন্য ফি এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। এই নির্ধারিত ফি দিয়ে ৫০০ ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশার অনুমোদন দেবে পৌরসভা। তবে এখন পর্যন্ত ১৫টি আবেদন জমা পড়েছে পৌরসভায়।
রায়পুর পৌরসভার লাইসেন্স শাখার কতৃর্পক্ষ পিরজাদা আরমান হোসেন বলেন, অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশার কারণে শহরে যানজটের সমস্যা হওয়ায় এসব রিকশা ও ইজিবাইকের চলাচল বন্ধের জন্য কয়েকবার মাইকিং করা হয় এবং অভিযান চালানো হয়। তবে এসব অভিযানে কোনো কাজ হয়নি। এ জন্য শেষ পর্যন্ত পৌর পরিষদের সভায় এসব যানকে লাইসেন্স দিয়ে বৈধতার সিদ্ধান্ত দেওয়া হচ্ছে। এতে পৌরসভার আয় বেড়ে যাবে।
এ ধরনের যানবাহনের লাইসেন্স দেওয়ার এক্তিয়ার পৌর কতৃর্পক্ষের আছে কি না, জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর বিআরটিএর উপপরিচালক এনায়েত হোসেন বলেন, এটা যানবাহনের আওতায় পড়ে না। এর জন্য পৌরসভা কোনোক্রমেই এর লাইসেন্স দিতে পারে না। যদি দিয়ে থাকে, তবে তা অবৈধ। কোনো পৌর কতৃর্পক্ষ এটা দিলে সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রায়পুর পৌরসভার সচিব আব্দুল কাদের বলেন, এসব যান বিপজ্জনক ও অবৈধ এটা ঠিক। আমরা কয়েক বার এসব যান বন্ধের জন্য অভিযান চালিয়েছি, কিন্তু নানা কারণে বন্ধ করা যায়নি। এর জন্য আমরা এসব যানবাহনের লাইসেন্স দিয়েছি। এতে পৌরসভার রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। বিআরটিএ কতৃর্পক্ষ যদি এ ধরনের যান নিষিদ্ধ করে, তাহলে আমরা লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ করে দেব।