রাজশাহীর প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় রিক্সা বিলুপ্তির পথে। রিক্সা এক সময় শহর ও শহরতলীতে স্বল্প দূরত্বে যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম হলেও কালের প্রবাহে আজ তা বিলুপ্ত হতে চলেছে। রিক্সার স্থান দখল করেছে রিক্সাভ্যান, ভটভটি, নসিমন, করিমন, পাওয়ার ট্রলি, টেম্পো, মিশুক, ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সা প্রভৃতি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে গোটা উপজেলায় মাত্র তিনটি রিক্সা চলাচল করে। অথচ ৫/৬ বছর আগেও উপজেলায় শতাধিক রিক্সা চলাচল করত। অধিকাংশ রিক্সাই রিক্সাভ্যানে পরিণত করা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে রিক্সা ও রিক্সাভ্যান চালকরা জানান, রিক্সায় একসাথে দুইজনের বেশী যাত্রী বহন করা যায়না, কিন্তু রিক্সাভ্যানে একসাথে ৬ জন যাত্রী বহন করা যায়। তাছাড়া রিক্সার তুলনায় রিক্সাভ্যানের ভাড়া কম এবং আরামদায়ক হওয়ায় যাত্রীদের কাছে রিক্সাভ্যানই বেশী পছন্দ। আবার রিক্সায় মানুষ ছাড়া অন্য কোন পণ্য বা মালামাল পরিবহন করা যায়না কিন্তু রিক্সাভ্যানে মানুষ ছাড়াও বিভিন্ন পণ্য ও মালামাল বহন করা যায়। এসব কারণে রিক্সার তুলনায় রিক্সাভ্যানে আয় বেশী হওয়ায় রিক্সা চালকরা রিক্সাভ্যানের দিকে ঝুঁকছে।
রিক্সা চালক জগেশচন্দ্র বলেন, ‘৪ হাজার ৫ শত টাকায় রিক্সা কিনে ৭/৮ বছর ধরে রিক্সা চালিয়ে চার ছেলেমেয়েকে নিয়ে কোনমতে দিনাতিপাত করছি। এখন আর রিক্সায় কেউ উঠতে চায়না। রিক্সার যাত্রীরা এখন রিক্সাভ্যানসহ অন্যান্য যানবাহনে যাতায়াত করে। ভাবছি আমিও রিক্সা ছেড়ে রিক্সাভ্যান চালাব।’ উপজেলার অপর দুই রিক্সা চালক ফকিরপাড়ার মিতু রহমান ও মিয়াপুর গ্রামের আজিবার রহমানেরও একই অবস্থা। ভ্যানচালক জিল্লুর রহমান বলেন, ‘রিক্সায় জায়গা ছোট এবং ভাড়া বেশী হওয়ায় যাত্রীরা রিক্সায় উঠেনা তাই রিক্সা ভেঙ্গে ভ্যান বানিয়েছি।’ এ ব্যাপারে চারঘাট রিক্সাভ্যান শ্রমিক সমিতির সাবেক সভাপতি আশরাফুল ইসলাম জানান, রিক্সার চেয়ে ভ্যানের ভাড়া কম এবং আরাম আয়াসে বসে যেতে পারে বলে যাত্রীদের ভ্যানই বেশী পছন্দ। এই কারণে রিক্সা ভেঙ্গে ভ্যানে পরিণত করা হচ্ছে। উপজেলায় বর্তমানে যে তিনটি রিক্সা আছে তা যেকোন সময় রিক্সাভ্যানে পরিনত করা হতে পারে বলেও আশংকা করেন তিনি।