আরিফ উদ্দিন, গাইবান্ধা থেকেঃ ৭১’র ২৩ মার্চের স্বাধীনতা সংগ্রামের এই উত্তাল দিনে গাইবান্ধা জেলার শহরের পাবলিক লাইব্রেরী সংলগ্ন তৎকালিন টেনিস কোর্টে সর্বপ্রথম পাকিস্তানী পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে পুড়িয়ে দিয়ে ম্যাপ অংকৃত লাল সবুজ রংয়ের স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলন করা হয়। তৎকালিন স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ পাকিস্তানি হানাদার প্রতিরোধ দিবস পালন উপলক্ষে বিকেলে ৪টায় এক ছাত্র জনতার সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেন। কয়েক হাজার ছাত্র জনতা এই সমাবেশে অংশ নিয়েছিল।
উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স মাঠে দেয়া ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাড. সৈয়দ শামস-উল আলম হিরুসহ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এবং আওয়ামী লীগের তৎকালিন নেতৃবৃন্দ এই প্রতিরোধ দিবসে পাকিস্তানি পতাকা পুড়িয়ে দেয়। এসময় যারা এব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তাদের মধ্যে অন্যান্যরা হলেন, নির্মলেন্দু বর্মণ, এম.এন নবী লালু, মোহাম্মদ খালেদ, সদরুল কবির আঙ্গুর, জামিলুর রহমান চৌধুরী, আতাউর রহমান, মো. আলমগীর, ফরহাদ আব্দুল্যাহ হারুন বাবলু, মোজাম্মেল হক মন্ডল, শাহ শরিফুল ইসলাম বাবলু, নাজমুল আরেফিন তারেক, মেজর মফিজ উদ্দিন (অবঃপ্রাপ্ত), শাহ শরিফুল ইসলাম ছকু, নির্বালেন্দু বর্মণ ভাইয়া, আব্দুল হাদি মুন্না, সগীর আনোয়ার, মবিনুল হক জুবেল, মো. বেলাল শেখ প্রমুখ।
এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে জেলা শহরের নতুন বাজারে কর্মরত একজন স্বল্প শিক্ষিত দর্জি প্রয়াত বেলাল শেখ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেসময় লাল সবুজের মাঝখানে বাংলাদেশের ম্যাপ অংকৃত স্বাধীনতার পতাকা নির্মাণ করেন। যে পতাকাটি ওখানে উত্তোলন করা হয়েছিল। সর্ব প্রথম পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে তা আগুনে পোড়ান মুক্তিযোদ্ধা এমএন নবী লালু ও নাজমুল আরেফিন তারেক। সম্প্রতি ওই স্থানটিকে স্মরণীয় করে রাখতেই বিজয় স্তম্ভ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়।
এই উপলক্ষে আজ সোমবার সকাল ১০টায় ২৩ মার্চ প্রতিরোধ দিবস উদযাপন কমিটি পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।