দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ গঠনে মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যাব – প্রধানমন্ত্রী

‘গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা তিস্তা সেতু’ ও ‘শেখ হাসিনা তিতাস সেতু’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রবিবার বেলা ১২টার পর গণভবন থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতু দুইটি উদ্বোধন করেন তিনি।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ গঠনে শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘তিস্তা ও তিতাস এই দুটি সেতু নির্মাণের কারণে এসব এলাকায় মানুষের দারিদ্র্য হ্রাস পাবে, কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, এলাকার সাধারণ মানুষের উন্নয়ন হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর আপামর জনগোষ্ঠীর ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। পরিবর্তন হয়েছিল মুষ্ঠিমেয় কিছু মানুষের ভাগ্যের, যারা সংবিধান লঙ্ঘন করেছিল তারাসহ কিছু মানুষের জীবনের উন্নয়ন হয়েছিল। সাধারণ মানুষের কথা কেউ ভাবেনি, তারা দারিদ্র্যসহ বিভিন্ন সমস্যায় নিমজ্জিত ছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রায় ছয় বছর পর আমি দেশে আসি। ১৯৭৫ সালের পর আমাকে দেশে আসতে দেওয়া হতো না। অনেক প্রতিবন্ধকতা ছিল। এক পর্যায়ে এক রকম জোর করেই আমি দেশে ফিরেছি। এরপর সারা দেশ ঘুরেছি। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আমরা সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ শুরু করি। তখন থেকেই সাধারণ মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’

এ ছাড়াও গঙ্গাচড়ার সেতু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেতুটির কারণে ঢাকা আসতে প্রায় ৪০ কিলোমিটার পথ কমে যাবে। ফলে ব্যবসা বাণিজ্য বাড়বে এবং ওই এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে। কুড়িগ্রাম থেকে লালমনিরহাট হয়ে আমরা রেল যোগাযোগও স্থাপন করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘রংপুর দুর্ভিক্ষপীড়িত এলাকা। সেখানে সবসময় দুর্ভিক্ষ লেগে থাকত। ১৯৯৬ সালে যখন সরকারে আসি, বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। ২০০৮ সালে আমরা আবার জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসি। ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আমরা ক্ষমতায় আছি। এখন কোথাও মঙ্গা নেই। আমরা রিসার্চ করে করে বহুমুখী ফসল উৎপাদন করতে শুরু করি। এই অঞ্চলে (উত্তরাঞ্চলে) আমরাই প্রথম ভুট্টা চাষের জন্যে প্রজেক্ট করি। আমি বলতে পারি, গত সাড়ে ৯ বছরে কেউ মঙ্গা শব্দটি শোনেনি। উত্তরবঙ্গের লোক মঙ্গা শব্দটি ভুলেই গেছে।’

বাঞ্ছারামপুরের সেতু প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই সেতু নিয়ে কয়েকটি উপজেলার মানুষের মধ্যে ঝগড়া ছিল। এরপর আমি সবাইকে ডাকলাম। ম্যাপ নিয়ে বসলাম। এরপর ডিজাইন চেঞ্জ করে দিয়ে আমি নতুন করে বললাম- সেতুর একটা অংশ বাঞ্ছারামপুর থেকে চলে যাবে মুরাদনগর, আরেকটা অংশ চলে যাবে হোমনায়। তাহলে সেতুটি দেখতেও অন্যরকম হবে, যা এখন ওয়াই সেতু নামে পরিচিতি পেয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *