সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে হত্যা নয়, প্রতারণার মাধ্যমে তার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়াই ছিল গ্রেফতারকৃত সোহাগ মিয়ার মূল উদ্দেশ্য। তিনি পেশায় একজন প্রতারক। তার বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণার মামলাও রয়েছে। ইতোপূর্বে তিনি প্রতারণার মামলায় গ্রেফতারও হন।
বুধবার বিকালে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আক্তার হোসেন।
তিনি বলেন, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার হিংগাজিয়া (মোবারকপুর) গ্রামের মন্তাজ মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়া ওরফে মো. সুমেল মিয়া চুনারুঘাট থানার ওসির মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে জানান- তার জীবনের ঝুঁকি আছে এমন তথ্য তার কাছে রয়েছে। এ বিষয়ে ২৮ জুন চুনারুঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়।
এসপি বলেন, হবিগঞ্জ পুলিশ ও ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সমন্বয়ে পুলিশের একাধিক টিম এর রহস্য উদ্ঘাটনে মাঠে নামে। কয়েক দিন তার দ্বারা প্রতারিত তার এক বন্ধুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার কাছ থেকে সোহাগ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা হয়। অবশেষে মঙ্গলবার রাতে সোহাগ মিয়াকে সিলেট শহর থেকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি মোবাইল ফোন নয়, হোয়াটঅ্যাপ ব্যবহার করে সবার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন।
তিনি বলেন, সোহাগ ৬-৭ বছর মধ্যপ্রাচ্যে থেকে দেশে আসেন; কিন্তু কিছুই করতে পারেননি। এরপর বিদেশে লোক পাঠানোর কথা বলে অনেকের কাছ থেকে টাকা নেন। তবে তাদের বিদেশে পাঠাতে ব্যর্থ হন। অবশেষে আর্থিক অভাব অনটন দূর করতে হ্যাকার হওয়ার চেষ্টা করেন। ইন্টারনেটে ভারতীয় একটি প্রতারণার গল্প দেখে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের প্রতারণার কৌশল শেখেন। তার অংশ হিসেবেই সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেন কিন্তু যেহেতু সংসদ সদস্যের মোবাইল ফোন নাম্বার তার কাছে ছিল না তাই তিনি ওসির মোবাইল ফোন নম্বরটি ব্যবহার করেছেন।
এসপি বলেন, সোহাগের উদ্দেশ্য ছিল সংসদ সদস্য হুমকির কথা শুনলেই হয়তো বলবেন কারা হত্যা করতে চায় তাদের নাম বলো। তখন তিনি টাকা চাইবেন কিন্তু তার পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। উল্টো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়েছে। থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। এরপর তিনি পালাতে চেয়েছিলেন। বারবার স্থান বদলিয়েছেন। অবশেষে তাকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হবে।