অবশেষে সাত হাজার কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের নয়টি শাখার নথি জমা পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)।
রোববার বিকেলে সর্বশেষ সোনালী ব্যাংক লোকাল অফিস শাখা থেকে নথি দুদকে জমা দেয়া হয়েছে।
সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিসের কর্মকর্তারা রোববার বিকেলে এ নথি দুদকে এসে জমা দিয়েছেন বলে দুদক সূত্র নিশ্চিত করেন।
গত সপ্তাহে সোনালী ব্যাংকের বঙ্গবন্ধু এভিনিউ করপোরেট শাখা, হোটেল রুপসী বাংলা (শেরাটন) করপোরেট শাখা, আগারগাঁও শাখা, গুলশান শাখা ও নারায়ণগঞ্জ করপোরেট শাখার নথি জমা পড়ে দুদকে।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল তিনটি শাখা নথি জমা দেয় দুদকে। সেগুলো হলো-সোনালী ব্যাংক বৈদেশিক বাণিজ্য করপোরেট শাখা, সোনালী ব্যাংক চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ করপোরেট শাখা ও সোনালী ব্যাংক লালদীঘি করপোরেট শাখা।
এদিকে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফায় সোনালী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় জড়িত শতাধিক প্রতিষ্ঠানের সংরক্ষিত নথিপত্র চেয়ে চিঠি দেয় দুদক।
এর আগে, গত বছর ২ ডিসেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর স্বাক্ষরিত চিঠিতে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক ঢাকা, চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জের সাতটি শাখা থেকে ঋণ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় নথি সরবরাহের অনুরোধ জানানো হয়।
দুদকের পৃথক নোটিশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়, ঢাকায় মতিঝিল সোনালী ব্যাংক লোকাল অফিসের গ্রাহক ‘অল টেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লি: কেএনএস ইন্ডাস্ট্রিজ লি:, ক্যাংসান ইন্ডাস্ট্রিজ লি:, থারমেক্স টেক্সটাইল, ইকো কটন মিল্স, রহিমা ফুড করপোরেশন, এপেক্স উইভিং অ্যান্ড ফিনিশিং মিল্স লি:, পদ্মা পলিকটন নীট ফেব্রিক্স লি:, কেএসএস নিট কম্পোজিট লি:,পিলুসীড টেক্সটাইল লি: প্রতিষ্ঠানের নামে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ঋণের আবেদন, ঋণ প্রদান, ব্যাংক কর্মকর্তাদের সুপারিশ, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদন, অডিট রিপোর্ট,আমদানি, রফতানি সংক্রান্ত নথিপত্র সরবরাহ করতে বলা হয়েছে।
নোটিশে ঢাকার মতিঝিলে সোনালী ব্যাংক বৈদেশিক বানিজ্য কর্পোরেট শাখার গ্রাহক; মের্সাস বেরিল এপারেল্স লি: এবং মের্সাস ইউসুফ অ্যান্ড কোম্পানির ২০১০ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত ওই ব্যাংকের ঋণ উত্তোলন, এলসি, আমদানি ও রফতানি সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের পরিদর্শন রিপোর্টসহ যাবতীয় নথিপত্র চাওয়া হয়েছে।
নোটিশে নারায়নগঞ্জ সোনালী ব্যাংক করপোরেট শাখার গ্রাহক; মের্সাস রুপসী গ্রুপের প্রতিষ্ঠান- রুপসী নিট ওয়্যার লি:, রুপসী ফেব্রিক্স লি:, রুপসী এমব্রয়ডারি, রুপসী ডিজাইন অ্যান্ড প্রিন্টিংস ও মের্সাস সালমান নিট কম্পোজিট লি: এর নামে ২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত ঋণ উত্তোলন, এলসি, আমদানি, রফতানি, অডিট রিপোর্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের পরিদর্শন রিপোর্টসহ যাবতীয় নথিপত্র চাওয়া হয়েছে।
নোটিশে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখার গ্রাহক; ইমাম ট্রেডার্স, জামমির ভেজিটেবল ওয়েল লি:, একে এন্টারপ্রাইজ, মহিউদ্দিন করপোরেশন, কামাল এন্টারপ্রাইজ এবং অর্কিড ফ্যাশনের নামে ২০১০ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সোনালী ওই শাখায় ঋণের আবেদন, ঋণ উত্তোলন, এলসি, আমদানি, রফতানি সংক্রান্ত বিষয়ে অডিট রিপোর্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের পরিদর্শন রিপোর্টসহ যাবতীয় নথিপত্র চাওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামের লালদীঘি সোনালী ব্যাংক করপোরেট শাখার গ্রাহক; মের্সাস সিদ্দিক ট্রেডার্স, মের্সাস বেঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিজ লি:, এভারেস্ট প্রাইভেট লি:, ইউরো অ্যাপারেলস লি:, অ্যাপারেল ফেয়ার লি:, মুক্তা অ্যাপারেলস লি:, লিবরা ফ্যাশন ওয়্যার লি:, বিউমন্ড গার্মেন্টস লি:, হোসেন অ্যাপারেলস লি:, মের্সাস একমি টেক্সটাইল অ্যান্ড গার্মেন্টস লি: ইমন অ্যাপারেলস লি:, মডেল অ্যাপারেলস লি: ইউনাইটেড ফ্যাশন লি:, ডিউড্রপস এ্যাপারেলস লি:, রোজেন্ট গার্মেন্টস লি:, কোব অ্যাসোসিয়েটস লি:, এমাইকো ফেব্রিক্স লি:, তন্নী নিট ওয়্যার লি:, মৌসুমী টাওয়েল লি:এর নামে ২০১০ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ব্যাংকের ওই শাখায় ঋণের আবেদন, বন্ধকী জমি, ঋণ উত্তোলন, এলসি, অপিট রিপোর্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের পরিদর্শন রিপোর্টসহ যাবতীয় নথিপত্র চাওয়া হয়েছে।
দুদকের কাছে অভিযুক্ত সোনালী ব্যাংকের শাখাগুলো হচ্ছে; ঢাকায় লোকাল অফিস, বৈদেশিক বাণিজ্য করপোরেট শাখা, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ করপোরেট শাখা, হোটেল রুপসী বাংলা (শেরাটন) কর্পোরেট শাখা, আগারগাঁও শাখা, গুলশান শাখা, নারায়ণগঞ্জ করপোরেট শাখা, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ করপোরেট শাখা ও লালদীঘি করপোরেট শাখা।ন/বা