প্রায় ১২ ঘণ্টার তোড়জোড়েও সন্ধান পাওয়া যায়নি শাহজাহানপুর রেল কলোনির শিশু জিহাদ হোসেন জিয়ার। গত রাত আড়াইটার দিকে এ ঘোষণা দেন ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা।
ঘটনাটি ‘গুজব’ বলেও মন্তব্য করেন তারা। যদিও অভিযানের শুরুতে শিশুর সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেন উদ্ধার কর্মীরা। এদিকে, শিশুর পরিবার ও এলাকার লোকজনের অভিযোগ, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই বিষয়টিকে ‘গুজব’ বলছে ফায়ার সার্ভিস।
প্রতিদিনের মত শুক্রবার দুপুরের খাওয়া শেষে খেলতে বের হয় ৪ বছর বয়সী জিহাদ হোসেন জিয়া। ধরাধরি খেলার এক পর্যায়ে বাড়ির পাশের বিশাল মাঠের এক কোণে ওয়াসার পরিত্যক্ত ৬শ’ ফিট গভীরের এই পাইপের মধ্যে শিশুটি পড়ে যায় বলে জানায় বন্ধুরা। এ ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে জিয়ার বাড়িতে খবর দেয় তারা। শোনামাত্রই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বাবা-মা ও প্রতিবেশীরা। এসময় জিয়ার সঙ্গে কথাও হয় বলে দাবি তাদের।
প্রাথমিক চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে সংবাদ দেয়া হয় ফায়ার সার্ভিসকে। পাইপের মুখের ব্যস মাত্র সতের ইঞ্চ। তাই শুরুতেই দড়ি ফেলে তোলার চেষ্টা করা হয় ছোট্ট জিয়াকে। দড়ি ধরতে বললে সে সাড়া দেয় বলে এসময় দাবি করেন উদ্ধার কর্মীরা।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা মেজর শাকিল নেওয়াজ বলেন, রশি ফেলার পর সে রশিটি ধরে, কিন্তু আমরা ওপরের দিকে তোলার সময় থেকে আর তার সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না’।
২ ঘণ্টা চেষ্টার ব্যর্থ হয় উদ্ধারের প্রথম ধাপ। দ্বিতীয়বারে দড়ি বেধে চটের বস্তা ফেলে আবারো ব্যর্থ হয়ে তুলে আনা হয় কূপের ভেতরের পানি তোলার সরু পাইপটি। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ না হওয়ায় শেষমেশ শিশুর অবস্থান জানতে চেষ্টা চালানো হয় সিসি টিভি ক্যামেরায়। প্রায় ১২ ঘণ্টার তোড়জোড়ের পর ঘোষণা আসে শিশুর কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে খুঁজেও বাচ্চার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে জানান স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
তাহলে শিশুর সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে বলে অভিযানের শুরুতে দেয়া ভাষ্যটি মিথ্যা ছিলো কি-না জানতে চাইলে উত্তর না দিয়ে তড়িঘড়ি করে চলে যান ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রি. জে. আলী আহম্মদ খান।
এদিকে, সন্তান হারানোর বেদনায় কাঁদতে কাঁদতে মূর্ছা যাচ্ছেন মা। পরিবারের সদস্যরা সহ এলাকার কেউই উদ্ধারকারীদের কথা মানতে রাজি নন। এলাকাবাসীর দাবির মুখে শেষরাতে আরো একটি অভিযান চালানো হলেও কোনো লাভ হয়নি। এছাড়া অভিযান চলাকালে ঘটনাস্থলে ভিড় জমান উৎসুক শত শত মানুষ। পরিদর্শনে আসেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক হলের নেতারাও