পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে শিয়া মসজিদে বোমা হামলার দায় এখনও পর্যন্ত কেউ স্বীকার করেনি। তবে শিয়া ধর্মীয় নেতাদের দাবি, জঙ্গিগোষ্ঠী টিটিপি-ই এ হামলার জন্য দায়ী। গতকালের হামলার ঘটনায় নিহত হয়েছে ৮ জন এবং আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৮ জন।
পেশোয়ার হামলার ক্ষত শুকোতে না শুকোতেই শুক্রবার আবারো কেঁপে উঠলো পাকিস্তান। এবারের লক্ষ্য রাজধানী ইসলামাবাদের মাত্র ১৪ কিমি দুরের শহর রাওয়ালপিন্ডির একটি শিয়া অধ্যুষিত এলাকা। সংখ্যালঘু শিয়া মতাবলম্বীদের একটি মসজিদে এ হামলায় হতাহত হয়েছে বেশ কয়েকজন নাগরিক। হামলার সময় সেখানে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলায়, বহু মানুষের সমাগম ঘটেছিলো।আর এ সুযোগকেই কাজে লাগায় হামলাকারীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, মসজিদের গেটের কাছে এসে এক মোটরসাইকেল আরোহী এ আত্মঘাতী হামলা চালায়। তারা আরও জানায়, প্রথমে মসজিদের ভেতরে ঢুকতে চাইলেও, ঢুকতে না পেরে প্রবেশমুখেই নিজেকে উড়িয়ে দেয় হামলাকারী।
তবে এখনই একে আত্মঘাতী হামলা বলছে না পাক পুলিশ। পাঞ্জাবের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা আখতার উমর লালিকা জানালেন, তারা এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি এটি আত্মঘাতী হামলা কিনা। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে বলেও জানান তিনি।
শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা আখতার উমর লালিকা বলেন, ‘এখানে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলছিলো। কয়েকজন পুলিশ এবং নিজস্ব নিরাপত্তা সদস্যদের সামনেই এ ঘটনা ঘটে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি আত্মঘাতী না হয়ে অন্য ধরনের হামলাও হতে পারে।’
হামলার পরপরই আহতদের স্থানীয় জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আর তাদের আর্তনাদে ভারি হয়ে ওঠে হাসপাতালের পরিবেশ।
অনেকের ধারণা উগ্র জঙ্গি সংগঠন তেহেরিক-ই-তালেবান এই হামলার জন্য দায়ী। শিয়া সম্প্রদায়ের এই নেতার ধারণাও অনেকটা এরকমই।
শিয়া ধর্মীয় নেতা আল্লামা নাসির আব্বাস জানান, ‘পেশোয়ারে যারা ওই জঘন্য হামলা চালিয়েছে তারাই এ হামলা চালিয়েছে। আমার বিশ্বাস, ওয়াগাহ সীমান্তে হামলার জন্যও তারাই দায়ী। শিশু মহিলাসহ নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা ছাড়া তারা আর কিছুই পারে না।’
গেল বছর ১৬ ডিসেম্বর পেশোয়ারে একটি সেনাবাহিনী পরিচালিত স্কুলে ভারি অস্ত্রশস্ত্রসহ হামলা চালায় টিটিপির সাত জঙ্গি। ওই ঘটনায় ১৩২ শিশুসহ নিহত হয় দেড়শোরও বেশি মানুষ।
পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশ শিয়া মতাবলম্বী। এক প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, ২০১২ সাল থেকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় পাকিস্তানে প্রায় ৮শ শিয়া মুসলিম নিহত হয়েছে।