কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) থেকে সুবল চন্দ্রদাসঃ কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া পৌর নির্বাচনকে ঘিরে রাজনীতির মাঠ সরগরম হয়ে উঠেছে। প্রার্থীরা পৌরবাসীকে ভোটদানে আগ্রহী করতে নানাবিধ প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি প্রতীক নিয়ে বিভিন্ন ওয়াডের সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীরাও প্রচারে পিছিয়ে নেই। পোস্টার, ইন্টারনেট, মাইকিং ও পথসভা থেকে শুরু করে ভোটাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা। এ সময় দিচ্ছেন নানামুখী উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। এখানে মেয়র পদে তিন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪২ ও সংর¶িত নারী কাউন্সিলর পদে ১১ জন প্রতিদ্ব্িদ্বতা করছেন। আগামী ৩১ অক্টোবর এ পৌরসভায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার মেছবা উদ্দিন (নৌকা), বিএনপির বর্তমান পৌর মেয়র ও উপজেলা বিএনপির আহŸায়ক মো. জালাল উদ্দিন (ধানের শীষ) এবং উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহŸায়ক আক্তারুজ্জামান খোকন (নারিকেলগাছ) নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখানে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আক্তারুজ্জামান খোকন শক্তিশালী হিসেবে মাঠে থাকায় জটিল হয়ে পড়েছে ভোটের হিসাব-নিকাশ। ফলে প্রধান দু’দলের প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্ব্িন্দতা হবে হাড্ডাহাড্ডি। দুই দলের মধ্যে রয়েছে গৃহ বিবাদও। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহŸায়ক মোতাহার হোসেন ¯^পন মেয়র পদে তৃণমূলের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পরও দলীয় মনোনয়ন পাননি। এ ¶েত্রে মনোনয়নের দৌড়ে পিছিয়ে থেকেও কেন্দ্রীয়ভাবে দলীয় মনোনয়ন পান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মিজবাহ উদ্দিন। এ অবস্থায় মোতায়েম হোসেন ¯^পনের সমর্থকরা দলীয় এই মনোনয়ন মেনে না নিয়ে প্রার্থী বদলের দাবিতে দু’দিনের হরতাল কর্মসূচিও পালন করেছেন। এ ছাড়া দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তন হতে পারে এমন প্রত্যাশা থেকে দলের প্রত্যয়নপত্র ছাড়াই নির্বাচনে প্রতিদ্ব্িন্দতার জন্য ‘দলীয় প্রার্থী’ পরিচয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন মোতায়েম হোসেন ¯^পন। প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় মিজবাহ উদ্দিনই দলের একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। এদিকে মনোনয়ন পেলেও দলের সব অংশের নেতাকর্মীর সমর্থন পাচ্ছেন না মিজবাহ উদ্দিন। আর তাই তিনি অনেকটা কোণঠাসা অবস্থায় থেকে নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তার প¶ে নির্বাচনী মাঠে সক্রিয়ভাবে যুক্ত না থাকায় কাক্সিখত ফল নিয়ে অনেকটাই উদ্বিগ্ন আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তবে মিজবাহর সমর্থকরা বলছেন, দলের আর কোনো বিকল্প প্রার্থী না থাকায় শেষ পর্যš— নেতাকর্মীরা মান-অভিমান ভুলে সবাই একাট্টা হয়ে নৌকারই যাত্রী হবেন। অন্যদিকে বর্তমান মেয়র ও উপজেলা বিএনপির আহŸায়ক অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। দলীয় প্রার্থী হিসেবে তার মনোনয়ন ছিল খুবই প্রত্যাশিত। পাকুন্দিয়া পৌরসভার প্রথম মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের কাছেও রয়েছে তার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা। তবে এখানে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী আক্তারুজ্জামান খোকন। বিগত উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে এলাকায় তার রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। আর তাই বর্তমান মেয়র জালাল উদ্দিন রয়েছেন অনেকটা অ¯^স্তিতে। দলীয় মনোনয়ন নিয়ে প্রকাশ্যে বিরোধিতা না থাকলেও রয়েছে চরম গৃহদাহ। দলের এই গৃহদাহের কারণে এখানে বিএনপির প্রতিপ¶ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিএনপিই।
অন্যদিকে, দলীয় মনোনয়ন নিয়েও আওয়ামী লীগের কোন্দল ও বিভাজনের কারণে নির্বাচনের মাঠে দলটির প্রার্থী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মিজবাহ উদ্দিনও রয়েছেন কোণঠাসা অবস্থায়। ফলে দলীয় দুই প্রার্থীর পাশাপাশি আলোচনায় রয়েছেন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীও।