বর্তমান বিশ্বে জীবিত বিজ্ঞানীদের মধ্যে সেরা ব্রিটিশ পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং। তার সব গবেষণার কেন্দ্রে রয়েছে মহাবিশ্বের সৃষ্টি ও এর সম্প্রসারণ। কিন্তু যাপিত জীবন সম্পর্কেও তার রয়েছে তীক্ষ্ণ ধারণা।
জীবন সম্পর্কে তিনি যেসব কথা বলেছেন, তার মধ্যে থেকে শ্রেষ্ঠ ১২টি উক্তি সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
ক্ষুর্ধার মেধার অধিকারী স্টিফেন হকিংকে মাত্র ২১ বছর বয়সে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, তিনি কিছু দিনের মধ্যে পৃথিবী থেকে বিদায় নেবেন। মোটোর নিউরণ নামে স্নায়ুঘটিত এক ধরনের রোগে ভুগছিলেন তিনি।
এখন তার বয়স ৭২। প্রবীণ পদার্থবিদদের মধ্যে তিনি একজন। এখনো ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং কৃষ্ণগহ্বর গবেষক। তার লেখা এ ‘ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম’ বইটি বেস্ট-সেলার হয়।
জীবন ও বিজ্ঞান সম্পর্কে হকিংয়ের ১২টি উক্তি এখানে তুলে ধরা হলো
১. প্রতিবন্ধীত্ব সম্পর্কে : অন্য প্রতিবন্ধীদের প্রতি আমার পরামর্শ, তোমার প্রতিবন্ধীত্ব তোমার ভালো কাজকে রুখতে পারবে না- এদিকেই মনোসংযোগ করা এবং প্রতিবন্ধী হওয়ার জন্য অনুশোচনা না করা। অন্তর শক্তিতে এমনকি শারীরিকভাবে কখনো প্রতিবন্ধী হইয়ো না।
২. প্রাধান্য সম্পর্কে : আমার লক্ষ্য খুব সাধারণ। বিশ্বভ্রমা- সম্পর্কে একটি পরিপূর্ণ ধারণা পাওয়া। কেন বিশ্বভ্রমা- যেমন আছে তেমনই থাকছে এবং সর্বোপরি কেন এটি টিকে আছে।
৩. ইচ্ছার স্বাধীনতা সম্পর্কে : সব কিছুই পূর্বনির্ধারিত- এমনটি যারা বিশ্বাস করে, তাদেরসহ মানুষের প্রতি আমি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি, পিছনে ফিরে দেখ, এমন বিশ্বাসীরাই রাস্তা পার হয়ে গেছে।
৪. মানসিক অবস্থা সম্পর্কে : মজা না থাকলে জীবনটা বেদনার।
৫. বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে : আমার কোনো ধারণা নেই। যারা নিজেদের বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বড়াই করে তারা বোকা।
৬. সারা দিন যা ভাবেন : নারী। তারা পুরোপুরিই রহস্য।
৭. তিন সন্তানের প্রতি তার পরামর্শ : এক. নক্ষত্রদের দিকে চোখ রাখ, কখনো পায়ের দিকে না। দুই. কখনো কাজ ছেড়ো না। কাজ-ই জীবনকে অর্থপূর্ণ ও উদ্দেশ্যময় করে তোলে এবং এ ছাড়া জীবন শূন্য। তিন. তোমরা যদি ভালোবাসার সন্ধান পাওয়ার মতো যথেষ্ট ভাগ্যবান হও, তবে তা ছুড়ে ফেল না।
৮. সাধারণ মানুষের জন্য যে কারণে তিনি লিখেছেন : আমি যখন ‘ব্রিফার হিস্টি’ লিখেছি, তখন আমি খুব খেটেছি। আমার নিউমোনিয়া হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমি মনে করি, বিজ্ঞানীদের কাজ সম্পর্কে মানুষকে জানানো উচিত, বিশেষ করে মহাবিশ্ব সম্পর্কে।
৯. স্ট্রিং তত্ত্ব সম্পর্কে : যখন আমরা স্ট্রিং তত্ত্ব বুঝতে সক্ষম হব, তখন আমরা জানতে পারব, কীভাবে মহাবিশ্বের শুরু হয়েছিল। আমরা কীভাবে বেঁচে আছি- তার ওপর স্ট্রিং তত্ত্বের বিশাল প্রভাব রয়েছে। তবে আমাদের জানা উচিত, আমরা কোথা থেকে এসেছি এবং আমরা কী খুঁজছি
১০. নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে : যখন আমার অ্যামাইট্রোফিক ল্যাটারাল স্কেলেরোসিস (এএলএস) ধরা পড়ে, তখন চিকিৎসকরা বলেছিলেন, আমি সর্বোচ্চ দুই বছর বাঁচব। কিন্তু এখনো আমি বেঁচে আছি এবং আমার বয়স এখন ৭২ বছর।
১১. ঈশ্বর সম্পর্কে : ঈশ্বরের অস্তিত্ব থাকতে পারে। কিন্তু বিজ্ঞান দিয়ে মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য ব্যাখ্যা করা সম্ভব। এ জন্য সৃষ্টিকর্তার প্রয়োজন নেই।
১২. আঘাত পাওয়া সম্পর্কে : আপনি যদি আঘাত পান, তবে কোনোভাবেই তা থেকে ভালো কিছু পেতে পারেন না।
তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইন।