এক দল কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠতে মরিয়া, অন্য দল বাড়ি ফেরার আগে বিশ্বকাপে স্মরণীয় কিছু করে যেতে চায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের জন্য গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচের আগে আসছে আরেকটি সমীকরণও। অবশ্যই জিততে হবে এমন ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়িয়ে যেতে পারে বৃষ্টিও।
রোববার নিউ জিল্যান্ডের নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্ক স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায়। কিন্তু বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুয়ায়ী, ম্যাচের দিন সেখানে বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। আর বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি পণ্ড হলে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হবে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
বৃষ্টির প্রসঙ্গটি ম্যাচের আগের দিন শনিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংবাদ সম্মেলনেও জায়গা করে নেয়। দলটির অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডার একটু অসহায়ভাবেই এ নিয়ে কথা বলেন।
“অবশ্যই এই ম্যাচ আমাদের জিততেই হবে। … আবহাওয়ার ভূমিকা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আমরা কেবল আমাদের হাতে যা আছে তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি।”
পুল ‘বি’ থেকে এরই মধ্যে কোয়ার্টার-ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গেছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার। শেষ দুটি জায়গা নিয়ে লড়াই করছে পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আয়ারল্যান্ড।
এই তিন দলের মধ্যে পয়েন্ট সবচেয়ে কম ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ৫ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট তাদের। আর সমান ম্যাচ খেলে পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের পয়েন্ট ৬ করে। বৃষ্টি ছাড়া আরও একটি বিষয় হোল্ডারদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে আছে। সেটি পাকিস্তান-আয়ারল্যান্ড ম্যাচের ফল।
রোববার ওয়েস্ট ইন্ডিজ আমিরাতকে হারালে এবং পাকিস্তান আইরিশদের বিপক্ষে জিতলে হিসাব আর জটিল থাকবে না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর পাকিস্তান উঠে যাবে শেষ আটে।
আয়ারল্যান্ড পাকিস্তানকে হারিয়ে দিলে অবশ্য জিতেও বাদ পড়তে হতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তখন ৮ পয়েন্ট নিয়ে কোয়ার্টারে উঠে যাবে আয়ারল্যান্ড। পয়েন্ট সমান হয়ে যাওয়া পাকিস্তান আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে হিসাব হবে নেট রানরেটের। আপাতত নেট রানরেটে পাকিস্তান এগিয়ে আছে। পাকিস্তানের নেট রানরেট এখন -০.১৯৪, আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের -০.৫১১।
সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়টি নিয়েও কথা বলতে হয় হোল্ডারকে। রানরেট বাড়িয়ে নেওয়ার তাড়া দলের থাকবে বলেই মনে করেন তিনি।
“অবশ্যই ম্যাচটি যত দ্রুত সম্ভব শেষ করাটাই সম্ভবত ভালো হবে আমাদের।”
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভালোভাবে ম্যাচ জয়ের প্রতিজ্ঞা আমিরাতকে ভয় পাইয়ে দিতে পারে। কারণ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে আছেন ক্রিস গেইলের মতো একজন বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান। আছেন মারলন স্যামুয়েলসের মতো ‘ঠাণ্ডা মাথার একজন খুনি’ ব্যাটসম্যানও।
অন্যদিকে বল হাতে যে কোনো দলকে একাই ধসিয়ে দিতে পারেন জেরোম টেইলর। এ ছাড়া কেমার রোচ জ্বলে উঠলেও কোনো একটা দিনকে নিজের করে নেওয়ার সামর্থ্য আছে তার।
আমিরাত এই বিশ্বকাপে এখনো কোনো জয় না পেলেও গোছানো ক্রিকেট খেলেছে তারা। একমাত্র ভারত ছাড়া কোনো দলই তাদের উড়িয়ে দিয়ে ম্যাচ জিততে পারেনি। অন্যদিকে ‘ছোট’ আয়ারল্যান্ডের কাছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হার তাদেরও এই বিশ্বকাপে একটি অঘটনের স্বপ্ন দেখাচ্ছে।
“অবশ্যই আমরা এই ম্যাচের আগে খুব খুব ইতিবাচক। …আমরা দেখেছি আয়ারল্যান্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে দিয়েছে। এটা আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে এবং আমরা মনে করি, আগামীকাল (রোববার) আমরাও এটা করতে পারি।”
এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর আরব আমিরাত কখনই মুখোমুখি হয়নি। কিন্তু নকআউটে যেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মরিয়া ভাব আর আমিরাতের বিশ্বকাপ অভিযান রাঙিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় – এই দুটি বিষয় এক বিন্দুতে মেলালে মনে হয়, শক্তি আর সামর্থ্যের পার্থক্য থাকলেও দুই দলের লড়াইটি বেশ জমজমাটই হবে। REPORT:Jamilur Rahman