নওগাঁর বদলগাছীতে লেবু চাষে সফলতা এসেছে লেবুচাষীদের। ফলে দিন দিন লেবু চাষ বেড়েই চলেছে। লাভ জনক এই ফসল চাষ করে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ায় চাষীদের মুখে হাসি। পলি ও দোয়াশ মাটি দ্বারা আবৃত এই উপজেলায় যে কোন সবজি ফসল সফলভাবে চাষ করে আসছে কৃষকরা।
ইতোপূর্বে লেবু চাষের প্রবণতা তেমন ছিলনা বললেই চলে। সাধারণত বসত বাড়ীর পার্শ্বে, ঝোপ ঝাড়ে ধারে বা যে কোন জমির আইলে, পুকুর পাড়ে লোকজন দু’একটি করে লেবুর গাছ লাগাতো। আবার কেউ কেউ বানিজ্যিক আকারে দু’চার কাঠা জমিতে লেবু চাষ করত। প্রতি লেবু বাজারে ৪/৫ টাকা, দাম বাড়লে ৭/৮ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। বর্তমানে লাভজনক হওয়ায় লেবু চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এ এলাকায়।
উপজেলার বাসপুর গ্রামের লেবু চাষী সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ শওকত আলী জানান, তিনি ৩৩ শতক জমিতে লেবু চাষ করেছেন। প্রতিদিন গাছ থেকে লেবু তুলতে হয় প্রায় এক হাজার থেকে দেড় হাজার অথবা দুই হাজার পিস পর্যন্ত । প্রথম দিকে একশত পিচ লেবু তিনশ টাকা বিক্রি করা হয়েছে। এখন প্রতি একশ পিস লেবু বিক্রি করা হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা। তিনি চলতি মৌসুমে ৩৩ শতক জমিতে এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার টাকা লেবু বিক্রি করেছেন। আরো ৫০-৬০ হাজার টাকা বিক্রি হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি আরো বলেন, এবার আমি নতুন আবার ১৫শতক জমিতে লেবুর বাগান করেছি আশা করছি সামনে বছর আরো লেবু বেশি টাকার বিক্রি করব।
একই গ্রামের আব্দুস সালাম মাস্টার জানান, তিনি ১০ কাঠা জমি লেবু চাষ করেছেন লেবু বিক্রি করে ধার দেনা পরিশোধ করে তিনি স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছেন।
বতর্মানে কোন ফসল লেবু চাষের সাথে পারবে না বলে তারা জানান। কারণ সারা বছরই প্রায় লেবু উৎপাদন অব্যাহত থাকে। লেবুর ১টি গাছ প্রায় ১০/১৫ বছর সফল ভাবে লেবু উৎপাদন করা যায়। গাছ মারা না গেলে উৎপাদন চলতেই থাকবে।
চাষীরা জানায়, বোরো ধান কাটার পরে কিছু কিছু লেবুর গায়ে বসন্তের মত দাগ হয়। এক প্রকার পোকার আক্রমনে লেবুর গায়ে এই দাগ পরে। কীটনাশক ছিটিয়ে কোন প্রকার সুফল পাওয়া যায় নি। আবার বর্ষা শুর হলে এই দাগ এমনিতেই ভাল হয়ে যায়। যদি সরকার থেকে লেবুর রোগবালায় প্রতিরোধের পরামর্শ দিয়ে থাকে তবে আমরা আরো অনেক সাফলতার দিকে এগিয়ে যাব।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৮ ইউনিয়নে ২০ হেক্টর জমিতে লেবু চাষ করা হয়েছে। তার মধ্যে আধাইপুর ইউনিয়নে ৭/৮ হেক্টর জমিতে লেবু চাষ হচ্ছে।