ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের কথা স্মরণ করে কেঁদেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার দুপুর ১ টায় রায়পুরের ঈদগাহ ময়দানে ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত সদস্য সংগ্রহ অনুষ্ঠানে মহাসচিবের কান্না দেখে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বক্তব্য দেওয়ার সময় এভাবে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ায় উপস্থিত সবার কাছে ক্ষমাও চান মির্জা ফখরুল।
রায়পুরের বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মহাসচিব বলেন, ‘এখনো এই কষ্টের শেষ হয়নি। এখনো এই দখলদার সরকারের, যাদের কোনো বৈধতা নেই সরকারে থাকার, যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি তাদের পেটোয়া বাহিনী পুলিশ তারা যখন-তখন এসে আপনাদের বাড়িঘরে হামলা করে, গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।’
এলাকার বিএনপি নেতাকর্মীদের অনেককেই প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন মামলার হাজিরা দিতে হয় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘খুব কষ্টের মধ্যে আছেন আপনারা। এই কষ্টের মধ্যেও আমি যখন এসেছিলাম তখনো আপনাদের মুখে আমি সাহস দেখেছি। আপনাদের কোনো ভয়ের মধ্যে দেখিনি আমি।’
‘অনেক কষ্ট, অনেক যন্ত্রণা, ব্যথা-বেদনা। এর মধ্যে আমরা আমাদের অনেক বন্ধুকেও হারিয়ে ফেলেছি। তারপরও আপনারা এতটুকু নড়েননি। যে বিশ্বাস যে আদর্শকে নিয়ে আপনারা দাঁড়িয়ে আছেন সেই বিশ্বাস এবং আদর্শকে শক্তি করে নিয়ে এই চরম দুর্দশার মধ্যে দুর্দিনের মধ্যেও আপনারা বুকে সাহস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন’ যোগ করেন বিএনপির মহাসচিব।
স্থানীয় সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং প্রশাসনের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের ঠাকুরগাঁও বড় সাধারণ জায়গা। সরল মানুষ। এই মানুষগুলোর ওপর অত্যাচার করবেন না। এই মানুষগুলোকে কষ্ট দেবেন না। মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে তাঁদের হয়রানি করবেন না। রাজনৈতিক সমস্যা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করতে হবে। আমরা আমাদের কথা বলব, আপনারা আপনাদের কথা বলবেন। জনগণ যাঁকে গ্রহণ করবে, ভবিষ্যতে ভোট দেবে তাঁরাই সরকার চালাবে। আসুন অতীতের যে পরিবেশ ঠাকুরগাঁওয়ে ছিল সেই পরিবেশ আমরা সৃষ্টি করি।’
বর্তমান সরকার মিথ্যাবাদী ও জনগণের সাথে প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরো বলেন, সুন্দরবনে আমরা কয়লা ভিত্তিক কোন বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না। পরিস্কার ভাবে আমরা বলে দিয়েছি সেখান থেকে তা সড়িয়ে নিতে হবে। এই সরকার মিথ্যাবাদী, জনগনের সাথে প্রতারণা করে। ইউনেস্কো নাকি তাদের আপত্তি তুলে নিয়েছে। মিথ্যা কথা গতকালই তাদের বøগে দেখেছি। ইউনেস্কো সরকারকে আশ্বাস দিয়েছে যে, এর উপর আরো পরীা নিরীা চালানো হবে। তারপরে এই প্রকল্প নিয়ে আগাবে তারা। এই মিথ্যা প্রতারণা কেন জনগনের সাথে?
তিনি বলেন, রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প যে কোম্পানীর মাধ্যমে করা হচ্ছে সেখান থেকে তারা মোটা অংকের ঘুষ নিয়েছে। তারা জনগনের ও পরিবেশের তি করে এই কাজ করতে পারে না। সুন্দরবনের পরিবেশ নষ্ট হয় এমন কোন ধরনের কাজ করা উচিত না।
তিনি এ সময় আগামী নির্বাচন অবাধ ও গ্রহনযোগ্য হওয়ার জন্য আলোচনা ও সমাঝোতার মাধ্যমে সুষ্ঠ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।
এ সময় রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তোফায়েল হোসেনের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সদর থানা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন লাল, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি জিবরিল ইডেন প্রমুখ।
পরে প্রধান অতিথি ইউনিয়নে সদস্য সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করেন।