১৯৮৬ সালে সিউল এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের হয়ে ৪৭.৫৫ সেকেন্ডে ৪০০ মিটার দৌড় শেষ করেন মিলজার হোসেন। ইভেন্টে এই রেকর্ড তিনি ধরে রাখেন দীর্ঘ ৩২ বছর। এবার মিলজার হোসেনের সামনেই ওই রেকর্ড ভেঙে দিলেন জহির রায়হান। গতকাল বিকেএসপির এই অ্যাথলেট ৪২তম জাতীয় অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতার ৪০০ মিটারের স্বর্ণ জেতেন ইলেক্ট্রোনিক্স টাইমিংয়ে ৪৬.৮৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে। এতে রচিত হয় নতুন জাতীয় রেকর্ড। আর ইভেন্ট শেষে জহিরকে বুকে জড়িয়ে ধরেন মিলজার হোসেন। পরে মিলজার বলেন, ‘যে কোনো রেকর্ড ভাঙলে হয়তো কষ্ট হয় ওই অ্যাথলেটের। কিন্তু আমি খুব আনন্দিত।
অন্তত একজন যোগ্য অ্যাথলেট ৩২ বছর আগে গড়া আমার রেকর্ডটি ভাঙলো। আমার মনে হয় জহিরের টাইমিংটা এশিয়ান গেমসের পর্যায়ের। ঠিক মতো পরিচর্যা করলে আমরা সাউথ এশিয়ানতো (এসএ) বটেই, এশিয়ান গেমসেও পদক জিততে পারবো।’ সাবেক এই অ্যাথলেটের সঙ্গে সুর মেলালেন জহিরও, ‘আসলে আমি চাই নেপাল এসএ গেমস থেকে পদক জিতে আনতে। তবে সে পর্যন্ত আমি যাতে নিরবচ্ছিন্ন অনুশীলনের সুযোগ পাই।’
দু’বছর আগে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এশিয়ান ইয়ুথ অ্যাথরেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ৪০০ মিটার স্প্রিন্টে ৪৯.১২ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছিলেন জহির। কোয়ালিফাই করেছিলেন আইএএএফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপে। কেনিয়াতে অনুষ্ঠিত ওই টুর্নামেন্টে ৪৮ সেকেন্ডে দৌঁড়ে পঞ্চম হয়েছিলেন বাংলাদেশের এই অ্যাথলেট। এরপরই ইনজুরিতে পড়েন। জহিরের কথায়, ‘দীর্ঘদিন আমি ইনজুরিতে ছিলাম। গত বছর সামার অ্যাথলেটিক্সে ২০০ ও ৪০০ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণ জিতেছি। লক্ষ্য ছিল জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে রেকর্ড গড়ার। সেভাবেই আমাকে প্রস্তুত করেছেন কোচ আবদুল্লাহেল কাফি। নিবিড় প্রশিক্ষণে আমি আজ ৩২ বছরের পুরনো রেকর্ড ভাঙতে পেরেছি। আসলে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মানসিকভাবে লড়াইও করতে হয়েছে আমাকে। আমি এখন খুব খুশী। এবার লড়াই করবো এসএ গেমসে।’
জহিরের সঙ্গে নতুন দ্রুততম মানব নৌবাহিনীর ইসমাইলের প্রশংসাও করলেন সাবেক তারকা অ্যাথলেট মিলজার হোসেন। তার কথায়, ‘জহির ও ইসমাইল আমাদের উদীয়মান সম্পদ। তাদের দু’জনকে যদি ঠিকমতো পরিচর্যা করা যায়, তাহলে দেশের সুনাম বাড়বে।’ ১৯৮৫ সালে ৪০০ মিটার স্প্রিন্টে রুপা জয়ী এই স্প্রিন্টার বলেন, ‘আসলে ৪০০ মিটারে ৪৭ সেকেন্ডের নিচে দৌড়ানো অসম্ভব ছিল আমাদের জন্য। আজ যা করে দেখিয়েছে জহির। আর ইসমাইলের টাইমিংও এশিয়ান গেমস পর্যায়ে। সেখানে দৌঁড়ালে সে পঞ্চম কিংবা ষষ্ঠস্থানে থাকতে পারবে। তাই আমাদের সবার উচিত এদেরকে পরিচর্যা করা।’