কুমিল্লার বুড়িচংয়ে সাংবাদিক মহিউদ্দিন সরকার হত্যা মামলায় দুই এজহারনামীয় এবং দুজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন মো. ফরহাদ মৃধা (৩৮) ও মো. পলাশ মিয়া (৩৪)।
এদিকে নিহতের পরিবার ও সহকর্মীরা জানান, মহিউদ্দিন ছিলেন মাদক ও চোরাকারবারিদের আতঙ্ক। মাদকের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার প্রচারণা করে জনসচেতনতা সৃষ্টিই ছিল তার মূল লক্ষ্য।
মাদকের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি তথ্য দিতেন র্যাব, পুলিশ, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। ফলে সে ছিল মাদক ব্যবসায়ীদের পথের কাঁটা। এরই জের ধরে ওই সংবাদকর্মী বুধবার রাতে জেলার বুড়িচং উপজেলার শঙ্কুচাইল সীমান্তে মাদক ব্যবসায়ীদের গুলিতে প্রাণ হারান। মহিউদ্দিন সরকার ওরফে নাঈম স্থানীয় কুমিল্লার ডাক পত্রিকা এবং এর আগে আনন্দ টিভিতে কাজ করতেন। তিনি ওই উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের অলুয়া গ্রামের পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন সরকারের ছেলে।
ওইদিন রাতে সংবাদ সংগ্রহের জন্য শঙ্কুচাইল সীমান্তে গেলে একদল মাদককারবারি তাকে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এ সময় আশপাশের লোকজন উদ্ধার করে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে ওই সাংবাদিককে হত্যার প্রতিবাদে সাংবাদিক মহলে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুরে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের উদ্যোগে কুমিল্লা প্রেসক্লাব এবং নগরীর পূবালী চত্তরে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় নিহতের মা নাজমা আক্তার বাদী হয়ে আদর্শ সদর উপজেলার বিষ্ণপুর গ্রামের সাদেক মিয়ার ছেলে একাধিক মাদক ও অস্ত্র মামলার আসামি মো. রাজুকে প্রধান আসামি করে ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে দুইজন এজহারনামীয় এবং দুজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে।
এ বিষয়ে বুড়িচং থানার ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, মহিউদ্দিন হত্যার ঘটনাটি আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছি, এরই মাঝে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের অত্যন্ত কাছাকাছি পৌঁছে গেছি, শিগগিরই বাকি আসামিরা গ্রেফতারসহ আইনের আওতায় আসবে।