মহাতারকাদের বায়নাক্কা সামলাতে নাজেহাল ব্রাজিলের হোটেল মালিকরা

image_81283_0কেউ গোটা হোটেলের চেহারা এক রকম করতে বলছেন, তো কেউ নিজেদের মতো আস্ত ‘এনক্লেভ’ তৈরি করে নিচ্ছেন৷ কেউ বলছেন ফুটবলারদের শোয়ার ঘরে বিছানার পাশে ধর্মগ্রন্থ রাখতে৷ কেউ আবার প্রতিদিন ফুটবলারদের জন্য নানারকমের কলা সরবরাহ করতে বলেছেন৷ কেউ চাইছেন গোটা হোটেলের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র বদলে ফেলতে৷ ঠিক এক মাস আর বাকি৷ সময় যত এগোচ্ছে, ততই ব্রাজিলের হোটেল মালিকদের মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে ৩২টি দেশের ফুটবলারদের এমন দাবি মেটাতে! ব্রাজিলের নটি রাজ্যে ২৭ শহরে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দেশের ফুটবলাররা থাকবেন৷ সেই সব হোটেল মালিকদের এখন রাতের ঘুম ছুটে গিয়েছে৷ এই সব চাহিদা মেটাতে এখন হিমশিম ব্রাজিলের হোটেল মালিকেরা৷

তালিকার প্রথমেই থাকবে জার্মানি৷ যাদের দাবি এই বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি৷ ছবির মতো গ্রাম বাহিয়ার সান্তো আঁদ্রে৷ সেখানে জার্মানি দলের জন্য আলাদা ট্রেনিং সেন্টার-সহ আস্ত একটা প্রাসাদ তারা তৈরি করে নিয়েছে৷ যা কিছু দিন আগে সেখানে ছিল না৷ জোয়াকিম লো-র দলের জন্য যে আলাদা ‘এনক্লেভ’ তৈরি হয়েছে, যেখানে একটা গেট দিয়ে ঢুকলেই ১৩টা বাড়ি পাওয়া যাবে৷ যেখানে মোট ৬৫টা ঘর৷ সঙ্গে একটি ফুটবল মাঠ ও সংবাদমাধ্যমের জন্য আলাদা জায়গা৷ ছিল রুমাল, হয়ে গেল বিড়াল অবস্থা!

এরপরই থাকবে ফরাসি দল৷ সাও পাওলোর রিবেইরাও প্রেতোয় বিলাসবহুল জে পি হোটেলের সব ঘর নিজেদের দলের জন্য বুক করে নিয়েছে ফরাসি দল৷ দলের ম্যানেজমেন্টের তরফে দাবি করা হয়েছে, প্রত্যেক ফুটবলারের ঘর এক রকম হতে হবে৷ ঘরের রং থেকে পর্দা৷ বিছানার চাদর থেকে ঘরের আলো-সব এক রকম৷ যাতে কারও মনে না হয়, যে সে আলাদা-এর জন্যই এমন ব্যবস্থা৷ বাথরুমে দু’রকমের তরল সাবান রাখতে হবে বলেও দাবি করা হয়েছে৷ একটা ব্যবহার হবে স্নানের জন্য, অন্যটা হাত ধোয়ার কাজে৷

বিভিন্ন দলের নানা দাবিদাওয়ার মধ্যে বলতে গেলে সব থেকে কম চাহিদা রয় হজসনের ইংল্যান্ড দলের৷ রয়্যাল টিউলিপ হোটেলে থাকার কথা রুনিদের৷ সেই হোটেলের তিনটি রেস্তোরাঁর একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইংল্যান্ড দলের ফুটবলারদের জন্য আলাদা করে রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে৷ এ ছাড়া রুনিদের জন্য একটি ভিডিও গেমের পার্লার, যাতে অন্তত তিনটি টিভি আর সর্বাধুনিক ভিডিও গেমস মজুত রাখার অনুরোধ করা হয়েছে৷ এ ছাড়া দিনের নির্দিষ্ট সময়ে হোটেলের জিম এবং সুইমিং পুল ব্যবহার করতে দিতে হবে বলেও দলের তরফে জানানো হয়েছে৷

এ ছাড়া ছোট ছোট নানা দাবির সঙ্গে হোটেল মালিকদের মানিয়ে নিতে হচ্ছে৷ যেমন আলজিরিয়া তাদের প্রত্যেক ফুটবলারের বিছানার পাশে একটি করে ‘কোরান শরিফ’ রাখতে বলেছে৷ উরুগুয়ে শব্দহীন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র হোটেলে লাগাতে বলেছে৷ যাতে ফুটবলারদের ঘুমের কোনও অসুবিধা না হয়৷ ইকুয়েডর তাদের টিমের জন্য প্রতিদিন নানা ধরনের কলা সরবরাহ করতে বলেছে৷ এরই মধ্যে, কোথাও স্টেডিয়ামের কাজ পুরো শেষ না হওয়া নিয়ে চাপ রয়েছে৷ বিক্ষোভও ইতিউতি উঁকি দিচ্ছে৷ গত সপ্তাহেও কিছু স্টেডিয়ামের প্রস্ত্ততি দেখে সন্ত্তষ্ট হননি ফিফার সাধারণ সচিব জেরম ভাল্কে৷ তবে, কোরিন্থিয়ান্স এরিনায় যখন ব্রাজিল-ক্রোয়েশিয়া ম্যাচে বলে পা পড়বে, তখন এই সব বিতর্ক দূরে সরে য.াবে বলেই মনে করা হচ্ছে৷ সে সময় বিতর্ক থেকে আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসবেন মেসি-রোনাল্ডো-সহ এক ঝাঁক তারকা৷

তত ক্ষণ, ডাকছে ব্রাজিল! – ওয়েবসাইট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *