এই গরমে যতো চেষ্টাই হোক না কেন পরিপাটি থাকার, খুব বেশিক্ষণ সেই ইমেজ ধরে রাখা কঠিন। উত্তাপ আর ঘামে নিমিষেই নাজেহাল হয়ে যায় পুরো লুক। তবে গুরুত্বপূর্ণ মিটিং কিংবা ইভেন্টের আগে পুরুষরা চাইলেই পরিপাটি হয়ে নিতে পারেন। কারণ তাদের পরিপাটি হবার জন্য খুব বেশি প্রসাধনীর প্রয়োজন হয় না। শুধু নিজের ব্যক্তিত্বকে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারলেই হয়। আর পুরুষদের ব্যক্তিত্বকে সঠিকভাবে তুলে ধরার অন্যতম অনুষঙ্গ হলো সুগন্ধী। মোট কথা, সুগন্ধী দিয়েই চেনা যায় মানুষটি কতোটা গম্ভীর কিংবা কতোটা সহজ। এক সুগন্ধী দিয়েই প্রকাশ পায় অনেক কিছু। তাই পুরুষদের বেলায় সুগন্ধী বাছাইয়ে একটু বিশেষভাবে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।
যাচাই বাছাই তবেই কেনা
সুগন্ধী কেনার জন্য তাড়াহুড়ো করলে চলবে না। যদি আপনি নির্দিষ্ট কোনো ব্র্যান্ডে আবদ্ধ থাকেন, তাহলে কোনো বাধা নেই। তবে খেয়াল রাখবেন, আপনার রোজকার প্রিয় ব্র্যান্ডটি কি এই সময়ের সাথে মানাচ্ছে কিনা। কারণ গ্রীষ্মকাল ও শীতকাল ভেদে পারফিউম কিন্তু আলাদা হয়ে থাকে। সাধারণত গ্রীষ্মকালের জন্য উপযোগী পারফিউমগুলোর ঘ্রাণ হয়ে থাকে তুলনামূলক হালকা এবং এর ঘ্রাণের স্থায়ীত্ব থাকে লম্বা সময়ের জন্য। তাই যদি গ্রীষ্মকালের জন্য আপনি আপনার ব্র্যান্ডটি বদলাতে চান তাহলে ভালো পারফিউম শপে গিয়ে পছন্দমতো গ্রীষ্মকালীন কোনো সুগন্ধী বেছে নিন। এরপর তা সরাসরি নিজের ওপর একটু ছিটিয়ে দেখুন। যাচাই করে নিন, ওই সুগন্ধীতে আপনার কোনো অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হয় কিনা। যাচাই বাছাই করে সুগন্ধী কেনার জন্য হাতে একটু সময় রাখবেন। অন্তত দুইদিন। প্রথম দিন যে সুগন্ধী পরখ করলেন তার স্থায়ীত্ব কয় ঘণ্টা থাকে তা বুঝে পরদিন গিয়ে পছন্দের পারফিউটি কিনে নিন।
সুগন্ধীতে গা ভাসানো মানা
খুব মনে ধরেছে সুগন্ধী? তাই বলে, সুগন্ধী দিয়ে নিজেকে ভাসিয়ে দেবেন তা কিন্তু হবে না। ব্যক্তিত্বের দৃঢ়তা ফুটিয়ে তুলতে সুগন্ধীর মাত্রা বেশি হয়ে গেলে আবার সমস্যা। এতে হিতে বিপরীত হয়ে যাবে। সুগন্ধী ব্যবহার করতে হবে অল্প পরিমাণে। কানের পেছনে, দু’হাতের কব্জায় আর গলার কাছে কিঞ্চিত। ব্যস, এতটুকুই যথেষ্ট।
উপযুক্ত সময়
সুগন্ধী ব্যবহারের রয়েছে উপযুক্ত সময়। তাড়াহুড়ো করে যেমন সুগন্ধী কিনতে নেই, তেমন তড়িঘড়ি করে যখন তখন সুগন্ধী ব্যবহারও করতে নেই। সুগন্ধী ব্যবহারের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো গোসলের একদম পরপরই। সে সময় শরীরের রোমকূপগুলো ঘামমুক্ত থাকে। তাই সুগন্ধী রোমকূপে গিয়ে সেটে থাকে। এরপলে সুগন্ধীর স্থায়ীত্বও বাড়ে।
এড়িয়ে চলুন সংঘর্ষ
নিজেকে খুব বেশি কেতাদুরস্থ করতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেললে হবে না। সুগন্ধী, ডিওড্রেন্ট, আফটার সেভ আর বড়ি ওয়াশ- সব এক সঙ্গে ব্যবহার করতে গেলে বিগড়ে যেতে পারে সব। তাই সুগন্ধীর এই সংঘর্ষ এড়িয়ে চলতে হবে। একটু বুঝে নিতে কোন প্রসাধনী আপনার সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন। যদি আফটার সেভ ছাড়া আপনার একেবারে না-ই চলে, তাহেলে সুগন্ধী ব্যবহার করুন আফটার সেভ প্রয়োগের বেশ খানিকটা সময় পর। এতে সুগন্ধীর সংঘর্ষ এড়িয়ে চলা যেতে পারে।
সুগন্ধীর গন্ধ ধরে রাখতে
তৈলাক্ত ত্বকে সুগন্ধীর স্থায়ীত্ব থাকে বেশি। সমস্য হয় যাদের ত্বক শুষ্ক তাদের। কারণ শুষ্ক ত্বক অনেকটা স্পঞ্জের মতো। সুগন্ধী শুষে নেয় শুষ্ক ত্বক। তাই শুষ্ক ত্বকের অধিকারীদের তৈলাক্তদের চেয়ে ঘনঘন সুগন্ধীর প্রয়োগ করতে হবে।
যে ব্র্যান্ডে আস্থা
আমাদের দেশে পুরুষরা সচারচার যে সুগন্ধীগুলো ব্যবহার করে থাকেন, সেগুলো হলো- হুগো বস, গারি, পলো, ডুয়েট,ডানহিল। তবে শুধু ব্যক্তিত্ব নয়, আভিজাত্য প্রকাশের ক্ষেত্রেও জুড়ি নেই পারফিউমের। ইউ জর্জিও আরমানি, কেলভিন ক্লেইন,শ্যানেল কিংবা ভারসাচি- এসবই ব্যক্তিত্ব প্রকাশের পাশাপাশি আভিজাত্যকেও প্রকাশ করে। ব্র্যান্ডভেদে এসব পারফিউমের দাম শুরু হয় ২ হাজার টাকা থেকে, যা সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত গিয়ে ঠেকে।