আগামী অর্থবছরে (২০১৪-১৫) বাজেট ঘাটতি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। ফলে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের পরিমাণ বাড়বে।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহি কমিটির সভা শেষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও এ অভিমত দেন। এ বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধান করে দেখা যায়, বিগত দুই দশকে মাত্র একাবার বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের বেশি ছিল।
বাংলাদেশ ইন্সিটিটিউট ফর ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) রিসার্স ফেলো জায়েদ বখত বলেন, “বড় ধরনের বাজেট ঘাটতি সরকারকে ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ গ্রহণের পরিমাণ বাড়াতে উদ্বুদ্ধ করবে।”
অর্থ বিভাগের তথ্য মতে, ব্যাংকি খাত থেকে আগামী অর্থবছরে ২৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিতে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এর পরিামাণ বাড়তে পারে।
আগামী অর্থবছরে (২০১৪-১৫) অনুমিত মোট বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। এ ঘাটতি জিডিপির ৫ দশমিক ০৮ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে জিডিপির পরিমাণ হিসাব করা হয়েছে ১৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
সাধারণত একটি দেশের বাজেট ঘাটতি ৪ দশমিক ৫ শতাংশের আশেপাশে রাখা হয়। আগামী বাজেটে এ ঘাটতি ঠিক করা হয়েছিল ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে বাজেট চূড়ান্ত (২০১৪-১৫) করার পর ঘাটতি ৫ শতাংশে উঠে আসে।
প্রাথমিকভাবে অর্থ বিভাগ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ব্যয় (২০১৪-১৫ অর্থবছর) নির্ধারণ করেছিল ৭৯ হাজার ৩২ কোটি টাকা। কিন্তু জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলের সভার পর তা বেড়ে হয় ৮০ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে জায়েদ বখত বলেন, “সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে এডিপির আকার বাড়ানো হয়েছে।”
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের বেশি হওয়া নিয়ে চিন্তিত। ঘাটতি ৫ শতাংশের বেশি হলেই আইএমএফ বর্ধিত ঋণ সুবিধার ক্ষেত্রে শর্ত আরোপ করবে। বর্তমানে বাংলাদেশের বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের কম থাকায় আইএমএফ এক্ষেত্রে কোনো শর্ত দেয়নি।
দাপ্তরিক তথ্য থেকে দেখা যায়, ২০১৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সরকার দেশীয় খাত থেকে নেট ঋণ নিয়েছিল ১৮ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। ডিসেম্বর ২০১৩ নাগাদ এ ঋণের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুন হয় । শুধু ডিসেম্বর মাসে সরকার ঋণ করে ৯ হাজার ৮৮১ কোটি টাকা।
মার্চ ২০১৪ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার (ঋণ নেওয়ার) ৫৪ শতাংশ ঋণ নিয়েছে সরকার। আগামী বাজেটে দেশীয় উৎস থেকে ঋণ করার লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৩ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা ও বিদেশি উৎস থেকে ২৩ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা।